শহরে অদক্ষচালক ও অবৈধ টমটমের রাম রাজত্ব

91bb6dd9-2df0-4d0d-9795-2188ffac5528নুরুল আমিন হেলালী

পর্যটন নগরী খ্যাত কক্সবাজার পৌর শহরের প্রধান সড়কসহ অলিগলি ছেয়ে যাচ্ছে যন্ত্রচালিত অবৈধ টমটম ও ব্যাটারী রিক্সায়। অভিযোগ রয়েছে, এসব যানবাহনের কারণে শহরের বিদ্যুতের অপচয় ঘটছে। অপরদিকে বাড়ছে যানজট ও দৈবাৎ দূর্ঘটনা।
সরেজমিনে, শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সাধারণ রিক্সার পাশাপাশি যন্ত্রচালিত এসব অবৈধ টমটম ও ব্যাটারী রিক্সা চলছে সমানতালে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোন নিয়ন্ত্রণ না থাকায় এগুলোর সঠিক সংখ্যা জানাও দুষ্কর। এসব টমটম ও রিক্সার পেছনে পৌরসভার নম্বর প্লেটের পরিবর্তে অনেকটির গায়ে দেখা গেছে বিভিন্ন মালিকের নাম ও মোবাইল নাম্বার। জানতে চাইলে অনেক চালক জানায়, এটাই তাদের লাইসেন্স। প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্তা ব্যাক্তিরা শিকার করেছেন এসব যানবাহনের অধিকাংশ অবৈধ। কিন্তু নীতিমালার সীমাবদ্ধতার অজুহাতে এগুলো নিয়ন্ত্রণের দায়দায়িত্ব নিতে চায় না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
অপরদিকে পৌর কর্তৃপক্ষ এগুলোকে বিবেচনা করছে যান্ত্রিক যান হিসেবে। কোন রকম ভয়, দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ছাড়া রাস্তায় দূরন্ত বেগে ছুটে যাওয়া ব্যাটারী চালিত এসব যানবাহনে বাড়ছে প্রতিনিয়ত দূর্ঘটনা। এ ছাড়া ভাড়া নিয়েও চলছে এক ধরনের নৈরাজ্য। পৌর কর্তৃপক্ষের ভাড়ার তালিকা না মেনেই এরা প্রতিনিয়ত নিজেদের ইচ্ছেমত ভাড়া আদায় করছে যাত্রীদের কাছ থেকে। ফলে যাত্রীদের সাথে ভাড়া নিয়ে চলছে মল্লযুদ্ধ। শবনম নামে এক কলেজ ছাত্রী জানায়, কলাতলী থেকে তার অসুস্থ মা’কে নিয়ে সদর হাসপাতালে এসেছে। অনেকটা জোর করেই ৪০ টাকা ভাড়ার মধ্যে ১০০ টাকা নিয়ে নিল। ওই রকম অসংখ্য অভিযোগ শহর অভ্যন্তরীন চলাচলরত রিক্সা, টমটমসহ ছোট বড় যানবাহনের বিরুদ্ধে। একটি বেসরকারী ব্যাংকের কর্মকর্তা রমজান আলী জানান, আমি দেখেছি এসব ব্যাটারী চালিত যানবাহনগুলো ব্যস্ত সড়কে চলে অনেকটা দূর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে। কারণ অধিকাংশ চালকই অশিক্ষিত ও অদক্ষ। অন্যদিকে বিদ্যুৎচালিত অটোরিক্সার পাল ঢাকা ও চট্রগ্রাম শহর থেকে বিতাড়িত হয়ে ধেয়ে এসেছে কক্সবাজারের প্রতিটি উপজেলার আনাছে কানাছে। কেননা বিভাগীয় শহরে বিদ্যুতের অপচয়ও যানজট নিরসনে অটোরিক্স চালানো নিষিদ্ধ করেছে প্রশাসন। এরপর থেকে নিষিদ্ধ শহরের অটোরিক্সা গুলো ঝাঁকে ঝাঁকে ধেয়ে আসছে গ্রাম থেকে গ্রামে। এছাড়া এসব মোটর চালিত টমটম ও রিক্সার চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে অদক্ষ চালকের অসতর্কতার কারনে শহরে ইতিমধ্যেই ঝরে গেছে কলেজ পড়–য়া সম্ভাবনাময়ী কয়েকটি তাজা প্রাণ। এচিত্র শুধু শহরে সীমাবদ্ধ নেই গ্রামীণ জনপদেও এসব রিক্সার আগ্রাসনে বিদ্যুৎতের ভয়াবহ লোডশেডিং হচ্ছে। ফলে দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে লক্ষ লক্ষ সাধারণ গ্রাহকের। বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বিদ্যুৎ নির্ভরশীল ব্যবসা বাণিজ্য। বিঘিœত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া। সুত্রে জানা যায়,এসব অবৈধ যানবাহন বিতাড়িত হয়ে কম দামে পাওয়ার কারনে জেলার প্রতিটি গ্রামীণ জনপদে ছড়িয়ে পড়ছে দেদারছে।
সচেতন মহলের মত, মোটর চালিত রিক্সা ও টমটমের ব্যাটারীতে ৪/৫ ঘন্টা করে দিনে দুইবার করে চার্জ দিতে হয়। এতে বিপুল পরিমাণ বিদ্যুতের অপচয় ঘটে। তাই এ সকল অবৈধ ব্যাটারীচালিত যানবাহন অদক্ষ চালকের রামরাজত্ব থেকে পরিত্রান পেতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন ভূক্তভোগীরা।


শেয়ার করুন