লি কুয়ানের কাছ থেকে আমরা কী নেব, কী নেব না

মইনুল ইসলাম 

সম্প্রতি সিঙ্গাপুরের প্রতিষ্ঠাতা নেতা লি কুয়ান ইউ ৯১ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেছেন। নগররাষ্ট্র সিঙ্গাপুর অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাম্প্রতিক ৫৬ বছরের ইতিহাসে বিশ্বের উজ্জ্বল সাফল্য অর্জনকারী এশীয় বাঘদের মধ্যে সফলতম উদাহরণ। লি কুয়ান এই সাফল্যগাথার রূপকার। তাই তাঁকে ভালোবাসা দিয়ে বিদায় জানিয়েছে সিঙ্গাপুরের শোকাহত জনগণ। ১৯৫৯ সালে লি কুয়ানের নেতৃত্বে সিঙ্গাপুর অভ্যন্তরীণ স্বশাসনক্ষমতা অর্জনের মাধ্যমে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের জোয়ালমুক্ত হয়েছিল। (তিনটি প্রধান জাতিসত্তার সমন্বয়ে গঠিত নগররাষ্ট্র সিঙ্গাপুরে ‘জাতি’ কনসেপ্টটি খুব প্রযোজ্য নয় বিধায় তাঁকে জাতির পিতা অভিধায় ভূষিত করা হয় না।) ১৯৬৩ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর মালয়েশিয়া ফেডারেশনে যোগ দিয়েছিল সিঙ্গাপুর, কিন্তু ফেডারেল সরকারের সঙ্গে ফেডারেটিং ইউনিটগুলোর ক্ষমতার ভাগাভাগির প্রশ্নে লি কুয়ানের অতিরিক্ত দর-কষাকষি ও ঝগড়াঝাঁটিতে রুষ্ট হয়ে দুই বছরের মধ্যেই তৎকালীন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী টুঙ্কু আবদুর রহমান পার্লামেন্টে সিদ্ধান্ত নিয়ে সিঙ্গাপুরকে মালয়েশিয়া থেকে বের করে দিয়েছিলেন। বাধ্য হয়ে ১৯৬৫ সালের ৯ আগস্ট সিঙ্গাপুর মালয়েশিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হয় এবং এক মাস পর পূর্ণ স্বাধীনতা ঘোষণা করে। ওই ঘোষণা দেওয়ার সময় লি কুয়ান বিশ্ব মিডিয়ার সামনে কেঁদে ফেলেছিলেন সিঙ্গাপুরের ভবিষ্যৎ ভেবে। অথচ, গত ৫৬ বছরে অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার এক অবিস্মরণীয় রচনাগাথা করেছে সিঙ্গাপুর, যার রচয়িতা লি কুয়ান।
মূলত একটি প্রধান দ্বীপ ও ৫৮টি ক্ষুদ্রাকার দ্বীপ নিয়ে সিঙ্গাপুর রাষ্ট্র। আয়তন ৬৯২ দশমিক ৭ বর্গকিলোমিটার, জনসংখ্যা ২০১৪ সালে ৫৫ লাখ ৬৭ হাজার ৩০১, যার মধ্যে ৫১ লাখই প্রধান দ্বীপনগরীতে বাস করে। বিশ্বব্যাংকের প্রকাশিত তথ্য মোতাবেক ২০১৩ সালে সিঙ্গাপুরের মাথাপিছু জিডিপি ছিল ৫৫ হাজার ১৮২ মার্কিন ডলার, জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী ৫৪ হাজার ৬৪৯ ডলার। দুটোই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বেশি। পিপিপি ডলার বা ইন্টারন্যাশনাল ডলারে সিঙ্গাপুরের মাথাপিছু জিডিপি ২০১৩ সালে ছিল ৭৮ হাজার ৭৬২ (আরেক প্রকাশনায় ৭২ হাজার ৩৭১ বলা হয়েছে)। উপনিবেশ হিসেবে সিঙ্গাপুরের গোড়াপত্তন হয়েছিল মাত্র ১৮১৯ সালে। ভূরাজনৈতিক ও সামরিক অবস্থানের দিক থেকে অনন্য-গুরুত্বপূর্ণ মালাক্কা প্রণালির তীরবর্তী এই স্থানটিকে বেছে নেন ১৮১৯ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির প্রতিনিধি স্ট্যাম্ফোর্ড র্যা ফলস। তিনি স্থানীয় জোহোরের সুলতানের কাছ থেকে সামান্য অর্থের বিনিময়ে ওখানে একটি বাণিজ্য কুঠি ও ফ্যাক্টরি স্থাপনের অনুমতি আদায় করেন। ১৮২৪ সালে জোহোরের সুলতানের সঙ্গে আরেকটি চুক্তি বলে সিঙ্গাপুরে একটি ব্রিটিশ বাণিজ্যকেন্দ্র ও নৌঘাঁটি স্থাপনের পর্ব শুরু হয়। ১৮২৬ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ভারত সাম্রাজ্যের অন্তর্গত বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির নিয়ন্ত্রণাধীন একটি অঞ্চল হিসেবে ঔপনিবেশিক ভারতের রাজধানী কলকাতা থেকে সিঙ্গাপুরের শাসনকাজ পরিচালনার ব্যবস্থা চালু হয়। ১৮৫১ সালে সিঙ্গাপুরের শাসনভার সরাসরি ভারতবর্ষের কোম্পানি নিযুক্ত শাসকদের হাতে অর্পিত হয় এবং ১৮৬৭ সালে লন্ডনের ব্রিটিশ কলোনিয়াল অফিসে তা অর্পণের আগ পর্যন্ত ওই ব্যবস্থা চালু ছিল। অতএব, সিঙ্গাপুরের প্রতিষ্ঠার মূল কারণই ছিল ভারতে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের প্রতিরক্ষা ও ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বাণিজ্যিক স্বার্থরক্ষা। বলাবাহুল্য, ১৮৬৭ সাল পর্যন্ত ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ-ভারতেরই অংশ ছিল সিঙ্গাপুর।
১৯৯৬-৯৭ সালে একটি গবেষণাকাজে তিন মাসের জন্য সিঙ্গাপুরের বিশ্বখ্যাত গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘ইনস্টিটিউট অব সাউথ ইস্ট এশিয়ান স্টাডিজ’-এ (আইএসইএএস) ভিজিটিং ফেলো হিসেবে অবস্থান করে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ওপর একটা গবেষণা করার সুবাদে সিঙ্গাপুরকে গভীরভাবে জানার সুযোগ হয়েছে আমার। সিঙ্গাপুর আমাদের জন্য অনেক শিক্ষণীয় বিষয় তুলে ধরলেও সিঙ্গাপুরের উন্নয়ন অভিজ্ঞতার ভালো-খারাপ দুটোই গুরুত্বপূর্ণ। তাই বিষয়গুলোকে আমি পুরোপুরি গ্রহণযোগ্য বলব না। ব্যাখ্যাটা দেখুন:
সিঙ্গাপুর নগরকে একটা সাজানো বাগান বলা চলে, নাগরিক ভূস্বর্গ বললেও অত্যুক্তি হবে না। নগরের রাস্তাঘাট ঝকঝকে পরিষ্কার, যানজটের কোনো বালাই নেই। দক্ষতম পরিবহনব্যবস্থা, সর্বাধুনিক আবাসিক ব্যবস্থা, লোভনীয় শপিং, বৈচিত্র্যময় পর্যটন ও বিনোদনের পর্যাপ্ত আয়োজন, সর্বাধুনিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা—এগুলোর বিচারে সিঙ্গাপুরকে অনায়াসে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে আকর্ষণীয় আবাসস্থল বলা
যায়। ভূরাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে অনন্য-গুরুত্বপূর্ণ নৌপথ মালাক্কা প্রণালি ভারত মহাসাগর এবং চীন সাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরের সংযোগের সবচেয়ে সুগম জলপথ বিধায় এই প্রণালির তীরে অবস্থিত সিঙ্গাপুর বিশ্বের সর্বাধিক জাহাজ চলাচলের রুটের জন্য বেশ কয়েকটি আধুনিক ও দক্ষ বন্দরসুবিধা গড়ে তুলে এই খাতকে দেশের আয়ের অন্যতম প্রধান সূত্রে পরিণত করেছে। একই সঙ্গে আঞ্চলিক ‘হাব’ বা ‘এনট্রেপো’ হিসেবে পুনরায় রপ্তানির জন্য শিল্পায়নের এক সফল কেন্দ্র এবং বাণিজ্য ও ফিন্যানশিয়াল সেন্টার হিসেবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অতুলনীয় সমৃদ্ধির প্রতীক হয়ে উঠেছে সিঙ্গাপুর। প্রায় সব নাগরিকের জন্য আধুনিক পরিকল্পিত আবাসনব্যবস্থা
গড়ে তুলেছে সিঙ্গাপুর। সব শিশু ও কিশোর-কিশোরীকে স্কুলে পাঠানো মা-বাবার জন্য বাধ্যতামূলক—এই আইন না মানলে জেলে যেতে হবে মা-বাবাকে। সিঙ্গাপুরের হাসপাতালগুলো বিশ্বসেরা; বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও পলিটেকনিকগুলোর মান প্রতীচ্যের সঙ্গে তুলনীয়।
আবার অন্যদিকে, নগররাষ্ট্র হলেও প্রবল শক্তিধর রাষ্ট্রের প্রতীকও সিঙ্গাপুর। প্রকৃতপক্ষে লি কুয়ানের শাসন ১৯৫৯ সাল থেকে ২০১৫ সালে তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত ৫৬ বছর ধরেই বহাল ছিল। ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত লি কুয়ান ছিলেন প্রধানমন্ত্রী, তারপর ছিলেন ‘সিনিয়র মন্ত্রী’, এরপর ছেলেকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়ে প্রকৃত ক্ষমতাদণ্ডটি আমৃত্যু নিজের হাতেই রেখে দিয়েছেন। এখনো তাঁর ছেলেই প্রধানমন্ত্রী। এ ব্যাপারে তেমন রাখঢাক করার প্রয়োজন বোধ করেননি তিনি। ১৯৫৯ সাল থেকেই তাঁর রাজনৈতিক দল ‘পিপলস অ্যাকশন পার্টি’ (পিএপি) সিঙ্গাপুরের ক্ষমতাসীন দল। সিঙ্গাপুরের সব নাগরিকের জন্য ভোট দেওয়া বাধ্যতামূলক, ভোট না দিলে পুলিশ এসে গ্রেপ্তার করে জেলে পুরবে। কিন্তু সর্বশেষ নির্বাচনেও ৮৭ জন সাংসদের পার্লামেন্টে বিরোধী দলের সদস্য সাকল্যে ছয়জন। এ অবস্থাকে তাঁর দলের বিপুল জনপ্রিয়তার প্রমাণ বলা ভুল হবে, এটা একটা ‘ভয়ের রাজত্বের’ প্রতিফলনও হতে পারে। (হয়তো অবাধ নির্বাচন হলেও পিএপি বিপুল ভোটে জিতত!)
লি কুয়ান যত দিন বেঁচে ছিলেন, সিঙ্গাপুরের অধিকাংশ ভোটার কৃতজ্ঞচিত্তে স্বেচ্ছায় তাঁকে ভোট দিয়েছেন, এটা যেমন অস্বীকার করা যাবে না, কিন্তু এটাও সত্য যে রাজনৈতিক বিরোধিতাকে একেবারেই সহ্য করতেন না লি কুয়ান। অতএব, প্রকৃত বিচারে সিঙ্গাপুরে গণতন্ত্রের ভড়ং চলছে—খোলসটাই শুধু আছে, প্রকৃতপক্ষে ওখানে ৫৬ বছর ধরে চলেছে লি কুয়ানের একনায়কত্ব, একজন ‘টাফ টাস্কমাস্টার’ একনায়কের সুদক্ষ শাসন। সব ‘সিস্টেম’ প্রায় শতভাগ কার্যকর ওখানে। সিঙ্গাপুরের প্রশাসন আইন প্রয়োগে কঠোর, এমনকি শাস্তি হিসেবে বেত্রাঘাত এখনো চালু আছে সিঙ্গাপুরে। রাস্তায় চুইংগাম বা ধূমপানের অপরাধেও সপ্তাহ খানেক রাস্তা ঝাড়ু দেওয়ার শাস্তি মিলতে পারে। লি কুয়ান বড়াই করেই বলতেন, প্রতীচ্যের গণতন্ত্র প্রাচ্যের সংস্কৃতির জন্য উপযোগী নয়। প্রাচ্যের জন্য প্রয়োজন ‘ডিসিপ্লিন’ ও দুর্নীতিমুক্ত সুশাসন। তাই দুর্নীতির ব্যাপারে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি ছিল তাঁর। তাঁর বা তাঁর পরিবারের কারও বিরুদ্ধে দুর্নীতি বা পুঁজি লুণ্ঠনের কোনো অভিযোগ শোনা যায় না। কোনো মন্ত্রীর দুর্নীতিও সহ্য করতেন না লি কুয়ান।
অর্থনৈতিক স্বাধীনতার বিচারে সিঙ্গাপুরের অবস্থান বিশ্বে দ্বিতীয়। তবু সিঙ্গাপুরকে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কিংবা রাজনৈতিকভাবে মুক্ত সমাজ বলা যাবে না। লি কুয়ান সিঙ্গাপুরকে একটা ‘মেরিটোক্রেসি’ হিসেবে গড়ে তুলেছেন সারা বিশ্ব থেকে মেধাবী ব্যক্তিদের আকর্ষণ করে এবং সিঙ্গাপুরের অধিবাসীদের মেধা বিকাশের সর্বাধুনিক ব্যবস্থা গড়ে তুলে। ‘মিডিওকারদের’ নানাভাবে লি কুয়ান বুঝিয়ে দিতেন তাঁর
এই পছন্দের ব্যাপারটা। কোনো অভিবাসী শ্রমিকই একাধারে চার বছরের বেশি সিঙ্গাপুরে থাকার অনুমতি পান না, কিন্তু প্রকৌশলী, চিকিৎসক বা ভার্সিটি শিক্ষকের মতো পেশাজীবীর জন্য আলাদা নিয়ম। আশপাশের দেশগুলো থেকে যেসব নারী শ্রমিক সিঙ্গাপুরে প্রবাসী শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন, তাঁদের নিয়মিত প্রেগনেন্সি টেস্ট দিতে হয়, তাঁরা গর্ভধারণ করলে সরাসরি বের করে দেওয়া হয় সিঙ্গাপুর থেকে। আবার এমন নজিরও আছে, লি কুয়ান ঘটকালি করেছেন দুই মেধাবী নারী-পুরুষের বিয়েতে। তাঁরা যাতে বেশি সন্তানের জন্ম দেন, সে ব্যাপারেও প্রকাশ্যে উৎসাহ দিতেন তিনি। তিনি ঠাট্টা করে বলতেন, ‘আমার সিঙ্গাপুর হচ্ছে বিশ্বের একমাত্র “কমিউনিস্ট” রাষ্ট্র।’ সামাজিকভাবে সিঙ্গাপুরের চৈনিক (৭১ শতাংশ), মালয়ি (১৮ শতাংশ) ও ভারতীয় (৭ শতাংশ) জাতিসত্তার জনগণ
অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ সহাবস্থান ও মেলামেশার পরিবেশ গড়ে তুলেছেন, সত্যিকার অর্থে একটা ‘মাল্টি-এথনিক’ সমাজ বিরাজ করছে সিঙ্গাপুরে। ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ উদাহরণও সৃষ্টি করেছে সিঙ্গাপুর।
ওপরে সিঙ্গাপুরের যে সংক্ষিপ্ত বিবরণ প্রদত্ত হলো, তাতে কি মনে হয় ওখানকার সবকিছু গ্রহণযোগ্য ও অনুকরণীয়? এশিয়ার সবচেয়ে দুর্নীতিমুক্ত দেশ সিঙ্গাপুর, কিন্তু গণতন্ত্র তো নেই। যেখানে গণতন্ত্র নেই, সেখানে বোঝা যায়, গণতন্ত্রকে বাদ দিয়ে উন্নয়ন চায় না কোনো দেশের জনগণ, ‘ভয়ের রাজত্ব’ স্বর্গ হতে পারবে না কখনোই। গণচীনের বেশ কয়েকটা নগরে যাওয়ার সৌভাগ্যও হয়েছে আমার, ওখানেও একই ‘ভয়ের রাজত্ব’।
এর পাশাপাশি বাংলাদেশের দিকে তাকালে আমরা কী দেখি। ১৯৯১ সালে সংসদীয় ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর গত ২৪ বছরে কোনো ক্ষমতাসীন দল বা জোট গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে এ দেশে পুনর্নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় ফিরে আসতে পারেনি। কারণ, প্রতিবারই ক্ষমতাসীন দল বা জোট দুর্নীতি, পুঁজি লুণ্ঠন ও দুঃশাসনের জন্য জনগণের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। ১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর যেনতেনভাবে পুনর্নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার জন্য এ দেশের প্রতিটি ক্ষমতাসীন দল বা জোট ‘ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং’ করেও গদি রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে। ২০০৬-০৭-এর ঘটনাবলি পর্যালোচনা করলে বোঝা যাবে ইয়াজউদ্দিন আহেম্মদের মাধ্যমে বেগম জিয়া ক্ষমতায় ফিরে আসার জন্য কতখানি মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন! ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনের পেছনেও একই কাহিনি। তাই সিঙ্গাপুর থেকে শিক্ষণীয় হলো: জনপ্রিয়তা অক্ষুণ্ন রাখতে হলে দুর্নীতি বাদ দিতেই হবে, সুশাসন দিতেই হবে।
মইনুল ইসলাম: অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।


শেয়ার করুন