লামা পৌর নির্বাচনে পরিবর্তনের বাতাশ

nirbacon14463742041_105532এম বশিরুল আলম,  লামা :

লামা পৌরসভার কাঙ্খিত উন্নয়ন হয়নি বিগত ৫ বছরে: কর ও বৈদেশিক ঋনের বোঝা পৌরবাসির মাতায় চাপিয়ে ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে তৃতীয় বারের মত লামা পৌর নির্বাচন-২০১৫। ২০০১ সালে নাগরিক জীবনমান উন্নয়নের লক্ষে ২৮.৪৯ বর্গ কি:মি: এলাকা নিয়ে লামা পৌরসভা গঠিত হয়। ২০০২ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে প্রার্থীতা করেছিলেন, তৎকালীন ৪ দলীয় জোট সরকার সমর্থিত প্রার্থী লামা উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মো: আমির হোসেন ও বিরোধীদলীয় আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী মো: ইসমাইল। পৌরসভার ৯টি ভোট কেন্দ্রের নির্বাচনোত্তর ৮ কেন্দ্রের ফলাফল ছিল মো: ইসমাইল-এর পক্ষে। অর্থাত ৮  কেন্দ্রেই তিনি জয় লাভ করে পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তৎসময়ে রাজনৈতিক প্রতিকুলতার মধ্যেও পৌরসভার ব্যপক উন্নয়ন করেছিলেন প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মো: ইসমাইল। বিরোধী রাজনৈতিক দলের হয়েও তিনি জামায়ত বিএনপি জোট সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী-আমলাদের সাথে লবিং করে নব গঠিত লামা পৌরসভার অনুকুলে ব্যাপক দেশি, বিদেশী উন্নয়ন সহায়তা আদায়ে সক্ষম হয়েছিলেন।

পৌর এলাকার রাজবাড়ি থেকে শীবাতলী, লামামুখ থেকে চাম্পাতলীর প্রতিটি আনাচে কানাচে রাস্তা, ব্রীজ-কালভার্ট নির্মাণের মাধ্যমে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগে। পৌরসভার ৯ টি ওয়ার্ডে অবকাঠামো উন্নয়নের ফলে নাগরিক জীবনমানের দ্রুত উন্নতি ঘটতে থাকে। শহর উন্নয়ন, শতভাগ স্যানেটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করণ, ড্রেনেজ- পরিবেশ ও পয়:নিস্কাসন ব্যবস্থা জোরদার, গণশোচাগার নির্মাণ, নারী-শিশু নির্যাতন, বাল্য বিবাহরোধ, আধুনিক মানের পৌর ভবন নির্মাণ, পানি সরবরাহ কেন্দ্র স্থাপন, শিক্ষা, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে উন্নয়নসহ সর্বপুরী আধুনিক জীবন-যাত্রার নতুন দিগন্ত উম্মোচিত হয়েছিল।
২০০২ থেকে ২০১১ সাল নাগাদ এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকে। ২০১১ সালে ২য় বারেরমত অনুষ্ঠিত লামা পৌর নির্বাচনে রাজনৈতিক ব্যালেন্স-এর জন্য বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী লামা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আমির হোসেনকে মেয়র নির্বাচিত করেন পৌরবাসি। কারণ হিসেবে জানাযায়, ওই সময় লামা উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন সরকার দলীয় সমর্থিত (আলহাজ্ব মো: ইসমাইল)। আমির হোসেন মেয়র নির্বাচিত হয়ে, বিগত ৫ বছরে লামা পৌরসভার কোন উন্নয়ন করতে পারেননি। স্থানীয়দের মতে, নির্বাচিত মেয়রের দাম্বিকতা সরকারের এমপি মন্ত্রী ও আমলাদের সাথে সমন্বয়হীনতা সম্ভাব্য উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হয় পৌরবাসি। কথিত আছে সাবেক মেয়র আমির হোসেন সাধারণ মানুষের দেয়া সালাম -এর উত্তর দিতেও কার্পন্যতা বোধ করেন। তিনি সর্বদা গম্বির, এক রোকা ও রাজনৈতিকভাবে দাম্বিকতার মাঝে থাকেন বলে জানাযায়। তিনি বিগত ৫ বছরে পৌর এলাকায় উন্নয়ন করতে না পারার পেছনে তার গম্বিরতা ও রাজনৈতিক দাম্বিকতাকে দায়ি করছেন স্থানীয়রা। সমন্বয়ের ক্ষেত্রে তিনি সরকারের মন্ত্রী- আমলাদের সাথে নয় শুধু, খোদ পৌর পরিষদের কাউন্সিলরদের সাথেও একই আচরণ করতেন বলে কাউন্সিলরদের কয়েকজন জানিয়েছেন। ২০১১ সালে আমির হোসেন মেয়র নির্বাচিত হওয়ার তিন মাসের মাথায় ১১ জন কাউন্সিলর তার বিরুদ্ধে অনাস্থা দিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের হস্থক্ষেপ কামণা করেন। সূত্রমতে, দেশে ৩২০টি পৌরসভার মধ্যে দুর্নীতির শীর্ষ তালিকায় লামা পৌরসভার নামটি যুক্ত হয় মেয়র আমির হোসেন-এর বিগত ৫ বছরের দুর্নীনিতর ফলে।

এদিকে লামা পৌরসভার কাঙ্খিত উন্নয়নের লক্ষে আসন্ন পৌরসভার নির্বাচনে সরকার দলীয় প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে লামা পৌরবাসি বদ্ধপরিকর বলে জানাযায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকের মতে, বর্তমানে লামা উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়র দু’জনই বিএনপি সমর্থিত। এর ফলে রাজনৈতিক ভারসাম্য হারিয়ে উপজেলা ও পৌর এলাকায় উন্নয়ন কর্মকান্ড স্থবির হয়ে পড়েছে। এছাড়া তৃণমূল পর্যায়ে সাধারণ ভোটাররা মনে করেন, লামাবাসি বিগত উপজেলা নির্বাচনে সরকার দলীয় প্রার্থী সাবেক পৌর মেয়র ও উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো: ইসমাইলকে পুনরায় উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত না করে ভুল করেছিলেন। ভোটারদের মতে সাবেক জন দরদী লামা পৌরসভা ও উপজেলার উন্নয়নের রুপকার হিসাবে আলহাজ্ব মো: ইসমাইল-এর মনোনীত সরকার দলীয় প্রার্থী জহিরুল ইসলামকে নির্বাচিত করা হলে লামা পৌরসভার ও পৌরবাসির ব্যপক উন্নয় হবে। “চাই উন্নয়ন, তাই দলের চেয়ে ব্যক্তিই বড়” এই শ্লোগাানে-স্বর ধ্বনিত হচ্ছে ভোটারদের মুখে-মুখে, তাই দল-মত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে জহিরুল ইসলামের পক্ষে পাড়ায় মহল্লায় ভোট খুঁজছেন সকলে।

সরকার দলীয় মনোনীত প্রার্থী জহিরুল ইসলাম, লামা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, বর্তমান উপজেলা আওয়মীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বান্দরবান জেলা পরিষদের সম্মানীত সদস্য। সৎ, ন্যয় পরায়নতা, দায়িত্বজ্ঞান সম্পন্ন ব্যক্তিত্ব দলমত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সাধারণ ভোটারদের অন্তরে জায়গা করে নিয়েছে এই তরুন নেতা। বিশেষ করে নবীন ও প্রবীনদের কাছে গ্রহন যোগ্যতা অর্জনে তিনি সক্ষম হয়েছেন। অপর দিকে লামা উপজেলা আওয়ামীলীগের সার্বজনীন নেতা আলহাজ্ব মো: ইসমাইল ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুরের ¯েœহধন্য এই কঠোর পরিশ্রমি নেতা লামার মেয়র নির্বাচিত হলে উন্নয়নের ক্ষেত্রে পৌরবাসির প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির সমন্বয় ঘটবে বলে পৌর নাগরিকরা মনে করেন।


শেয়ার করুন