লামায় পাহাড়কাটার মহোৎসব চলছে 

photo(pahar) (1)এম.বশিরুল আলম,লামা :
বান্দরবানের লামা উপজেলার সরকারী ও বেসরকারী মালিকানাধীন পাহাড় কেটে জমজমাট মাটি বানিজ্য ছলছে। বিভিন্ন স্থানে পুকুর, জলাশয় এবং সরকারী বেসরকারী প্রকল্পের ও ব্যক্তি মালিকানাধীন, প্রবাসী ব্যক্তিদের আলিশান বাডি নিমার্নের কাজে এবং ইটের ভাটায় মাটি যোগানে ব্যবহার করা হচেছ এ সব পাহাডের মাটি। এক শ্রেণীর প্রভাবশালী ব্যক্তিরা পাহাড় কেটে উজাড় করছে পাহাড়ের মাটি ধংস করে চলেছে প্রাকৃতিক পরিবেশ। এ সব মাটি সরবরাহ করা হচেছ প্রকল্প ভরাট করার কাজে।
সরেজমিন ঘুরে ও স্থানীয়দের সাথে আলাপ কালে জানা যায়,পার্বত্য বান্দরবান জেলার লামা উপজেলার একটি পৌরসভাসহ ৭টি ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে দিনরাত নির্বিচারে পাহাড় কেটে সরবরাহ করছে মাটি। আর এসকল পাহাড় কাটার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে ডোজার মেশিন।পরিবেশ আইনে পাহাড় কাটা নিষেধ থাকলেও লামায় পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ড ও উপজেলায় ৭টি ইউনিয়নে পাহাড় কাটা চলছে দেদারছে।
পৌরসভার মধুঝিরি ,চেয়ারম্যান পাড়া,নারকাটা ঝিরি, একতা মহিলা সমিতির সংলগ্ন আশপাশের পাহাড় সমুহ, মধুুঝিরি নয়াবাজার,লাইনঝিরি,লামা সদর, উপজেলার ইউনিয়নের গজালিয়ার ফারাঙ্গা, ফাইতং ইউনিয়নে ১৪টি ইটভাটার জন্য পাহাড় কেটে মাটি সংগ্রহ করা, ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নে ৪টি ইটভাটা, সরই ইউনিয়নে ২টি ইটভাটা,গজালিয়া ইউনিয়নে ১টি ই্ট ভাটা, পৌরসভার ১টি ই্ট ভাটার জন্য পাহাড় কেটে ইট প্রস্তুুতের জন্য মাটি সংগ্রহ করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বর্ষার শেষ হওয়ার সাথে সাথে এসব এলাকায় প্রতিযোগিতা মূলকভাবে পাহাড় কাটা চললেও নিরব রয়েছে প্রশাসনও বন বিভাগ। গজালিয়া ফারাঙ্গা ব্রীজ এলাকা থেকে স্থানীয় অধিবাসী করিমুল হাসান জানান, গজালিয়ায় এক ব্যক্তি রাতে দিনে পাহাড় কেটে ফসলের জমি ভরাট করছে।রহস্যজনক কারনে নিরব রয়েছে লামা প্রশাসন ও বনবিভাগ।
পৌরসভার বাসিন্দা সালাহ উদ্দিন জানায়,প্রশাসনের নাকের ডগায় দিয়ে এক শ্রেণীর প্রভাবশালীরা প্রতিদিন মাহিন্দ্র ট্রাক্টর বোঝাই করে পাহাড়ের মাটি কেটে পুকুর ভরাট,সমতল জমি ভরাট করার জন্য মাটি নিয়ে যাচেছ।কেউ বাধা দিলে মামলা হামলার হুমর্কী দিয়ে চলে যায়। এদিকে ফাইতং ইউনিয়নে পাহাড়ের মাঝে অবৈধভাবে গড়ে তোলা ১৪টি ইটভাটায় রাতে দিনে ডোজার দিয়ে পাহাড় কেটে মাটি সংগ্রহ চলছে সমানতালে । স্থানীয় প্রশাসন ঘুষ বানিজ্য করে নিরবতা পালন করছে বলে স্থানীয় সচেতন মহলের অভিযোগ।
ফাইতং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শামসুল আলম ও লামা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আবু তাহের মিয়া বলেন,লামা উপজেলায় ইট ভাটার জন্য পাহাড় কাটা নিত্যদিনের মতো প্রতিনিয়ত চলছে । এতে করে প্রতিবছর পাহাড় ধসে জনসাধারনের জান মালের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হচেছ।এ নিয়ে কোন কথা বলে বহিরাগত প্রভাবশালী মহলের থেকে আসে হুমর্কী। স্থানীয় ও পরিবেশ বান্ধব সচেতন মহলের দাবী করেন, বন ও পরিবেশ মন্ত্রী হস্তক্ষেপে দ্রুতগতিতে পাহাড় কাটা ও ইট ভাটার জন্য পাহাড়ের মাটি সংগ্রহ প্রতিহত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি দিয়ে দমন করা হউক।
লামা পরিবেশ রক্ষা পরিষদের সভাপতি মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, পরিবেশ আইনে পাহাড় কাটা সম্পূর্ণভাবে নিষেধ রয়েছে। এই ব্যাপারে আমরা বারবার সরকারের সংশ্লিষ্টদের মনে করিয়ে দিলেও কেউ কর্ণপাত করছেন না। পাহাড়ের মাঝে পুরোপুরি অবৈধভাবে ফাইতং-এ ১৪টি ইটভাটায় পাহাড় কাটা ও ইট তৈরির কাজ করছেন। যা কোন ভাবেই মেনে নেয়ার মতো নয়। তার পরেও প্রশাসন কি কারণে সিলগালা করছেন না, আমাদের বিষয়টা খুবই ভাবাচ্ছে। একদিকে পাহাড়ের মাঝে ও পাহাড় কেটে ইট তৈরি করা হচ্ছে, অন্যদিকে পাহাড়ের মূল্যবান বনজ সম্পদ পোড়াচ্ছে।
এই ব্যাপারে জানতে চাইলে লামা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো: রফিকুল ইসলাম চেীধুরী, এই প্রতিবেদককে বলেন, পাহাড় ও বন ধংসে আমাদেরও খারাপ লাগে। জনবল সংকটের কারনে সব সময় অভিযান পরিচালনা সম্ভব হয়না। শুনলাম মাত্র, আইনগত ব্যাবস্থা নেয়া হবে।
লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: খালেদ মাহমুদ বলেন, উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় অবাধে পাহাড় কাটার বন্ধের লক্ষ্যে প্রশাসন অবিলম্বে মাঠে, নামবে ।


শেয়ার করুন