লজ্জার রেকর্ডে ম্লান বাকি অর্জন

দারুণ সব শটে বাংলাদেশকে লজ্জার এক রেকর্ড উপহার দিলেন ডি কক। ছবি: এএফপি

খেলা ডেস্ক :
ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচটাই রেকর্ড ভাঙা-গড়া দিয়ে শুরু করল বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েছেন মুশফিকুর রহিম। মুশফিকের ১১০ রানের এ ইনিংস দিয়ে টেস্ট খেলুড়ে সব দেশের বিপক্ষেই ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি হয়ে গেল বাংলাদেশের। অবশ্য এসব রেকর্ড সব চাপা পড়ে যাচ্ছে লজ্জার সব রেকর্ডে। ৯ বছর পর ওয়ানডেতে ১০ উইকেটে হারল বাংলাদেশ।

ওয়ানডেতে এ নিয়ে ১১তম বারের মতো দশ উইকেটে হারল বাংলাদেশ। তবু একটি সান্ত্বনা ছিল। ওয়ানডেতে নতুন রূপ পাওয়া বাংলাদেশ এমন লজ্জা পায়নি অনেক দিন। ২০০৮ সালে করাচিতে বাংলাদেশের দেওয়া ১১৬ রানের লক্ষ্য বিনা উইকেটেই পার করেছিল পাকিস্তান। এরপর আর এমন কিছু দেখতে হয়নি বাংলাদেশকে। সেটাও কীরূপে? ওয়ানডেতে রান তাড়া করতে নেমে বিনা উইকেটে জয়ের রেকর্ডটি এত দিন ছিল ২৫৫ রানের। গত বছর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ইংল্যান্ডের সে রেকর্ড টিকল মাত্র ১৫ মাস। আজ বাংলাদেশের দেওয়া ২৭৯ রানের লক্ষ্য ৪৩ বল হাতে রেখেই জিতেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে ম্যাচে ওপেনিং জুটিতে ডাবল সেঞ্চুরির চতুর্থ ঘটনা এটি। কিন্তু আগের তিনটি জুটিকেই ছাপিয়ে গেছেন কুইন্টন ডি কক (১৬৮) ও হাশিম আমলা (১১০)। ১৯৯৭ সালে দীপক চুদাসামা ও কেনেডি ওটিয়ানো (নাম পরিবর্তনের আগে) নাইরোবিতে ২২৫ রান করে উদ্বোধনী জুটির বিশ্বরেকর্ড গড়েছিলেন। সে রেকর্ড থেকে শচীন টেন্ডুলকার ও সৌরভ গাঙ্গুলী বাংলাদেশকে কদিন পরেই রক্ষা দিয়েছিলেন। অবশ্য ২৭২ রানে নাসির ক্যাচটা মিস না করলে আজও বেঁচে যেতে পারত বাংলাদেশ। কিন্তু তা আর হয়নি। চাইলে সান্ত্বনা পাওয়া যেতে পারে, আরেকবার উদ্বোধনী জুটির রেকর্ড তো হয়নি (২৮৬ রান)। বাংলাদেশ আজ আর ৮ রান বেশি করলেই হয়তো সে রেকর্ডটাও ভেঙে ফেলত প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানরা।
অথচ এর আগে অনেক অর্জনের এক দিন হিসেবেই দেখা দিয়েছিল এ ম্যাচটি। দক্ষিণ আফ্রিকার মাঠে এত দিন সর্বোচ্চ ইনিংসের মালিক ছিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল। ২০০৮ সালে পচেফস্ট্রুমে ২৮৩ রান তাড়া করতে নেমে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছিল বাংলাদেশ। চারে নামা আশরাফুল সেদিন ৭৩ রান না করলে বড় লজ্জাতেই পড়তে হতো বাংলাদেশকে। আজ অবশ্য মুশফিক শুধু দক্ষিণ আফ্রিকার মাঠের সে রেকর্ডই নয়, ২০১৫ সালে সৌম্য সরকারের ৯০ রানকেও ছাড়িয়ে গেছেন। এটাই যে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম সেঞ্চুরি, সব সংস্করণ মিলিয়েই!
২০০৮ সালে আশরাফুলের ৭৮ বলের সে ইনিংসে ২২২ রান করেছিল দল। দক্ষিণ আফ্রিকার মাঠে এত দিন সে রানটাই ছিল দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোর। শীর্ষে ছিল ২০০৮ সিরিজের পরের ওয়ানডেতে তোলা ২৩০ রানের ইনিংসটি। নিজেদের সর্বোচ্চ রানের সে ইনিংসেও অবশ্য ১২৮ রানে হারতে হয়েছিল বাংলাদেশকে।
আজ নিজেদের সে রেকর্ড বাংলাদেশ পেরিয়েছে ৪৪তম ওভারেই। মুশফিকের ব্যাটে চড়ে নির্ধারিত ৫০ ওভারে বাংলাদেশ তুলেছে ২৭৮ রান। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান এবং সেটা যেকোনো মাঠেই। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এর আগে সর্বোচ্চ ২৫১ রান করেছিল বাংলাদেশ। ২০০৭ বিশ্বকাপে নিরপেক্ষ ভেন্যুতে খেলা সে ম্যাচে জয়ী দলের নাম ছিল কিন্তু বাংলাদেশ!
বাংলাদেশের এসব রেকর্ডের মাঝে অন্য রকম এক রেকর্ড গড়েছেন ডেন প্যাটারসন। ৯ ওভারে ৬৯ রান দিয়েও উইকেটশূন্য তিনি। অভিষেকে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে এত রান দিয়েও উইকেটশূন্য ছিলেন না কেউ। আর চার রান বেশি দিলেই কেশব মহারাজের কাছ থেকে (১/৭২) মূল রেকর্ডও কেড়ে নিতে পারতেন।


শেয়ার করুন