র‌্যাবের ১২ বছর : সাফল্য, অভিযোগ, বিতর্ক

017629794_30300-400x225২০০৪ সালের ২ শে মার্চ প্রতিষ্ঠা হয় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র‌্যাব) এর। জন সম্মূখে প্রকাশ পায় এক বিশেষ বাহিনীর। আর ১৪ এপ্রিল থেকে অপারেশনের দায়িত্ব পাওয়া পর থেকে আরো বিশেষ বাহিনী হিসেবে জনগণের সামনে প্রকাশ বাহিনীটি। ফেলে আসা ১১ বছরে র‌্যাবের সাফল্য আকাশ ছোঁয়া। সন্ত্রাস নিমূল, মাদক বিরোধী অভিযান ও জনসাধারণের বিশেষ নিরাপত্তায় নজিরবিহীন সাফল্য রয়েছে তাদের। আবার বিচার বহিঃর্ভূত হত্যাকা-ের কারণে বিশেষ এই বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগেরও কমতি নেই। আবার বিভিন্ন সময় ক্ষমতার অপব্যবহারের দায়ে বিতর্কও এড়াতে পারেনি এই বাহিনী।
রমনা বটমূলে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে নিরাপত্তা বিধানের দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে জনগণের সম্মুখে আসে। আর ওই বছরের ৩০ জুন রাজধানীর উত্তরায় শীর্ষ সন্ত্রাসী পিচ্চি হান্নান ক্রসফায়ারে নিহতের মধ্য দিয়ে পূর্ণাঙ্গ অপারেশন কার্যক্রম শুরু করে।
গত ১১ বছরে সারাদেশে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদবিরোধী অভিযানে ১ লাখ ৬৬ হাজার ৬৭০ জনকে তারা গ্রেপ্তার করেছে। এসময় র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মারা গেছে ৬৩৩ জন।
১২ বছরে র‌্যাবের সাফল্য শুধু দেশেই নয়, আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। পাশাপাশি র‌্যাবের বিরুদ্ধে অভিযোগও রয়েছে। নানা অপরাধে র‌্যাব সদস্যরা জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে ‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-ে’ সবচেয়ে বেশিবার উঠে এসেছে তাদের নাম। এসব ঘটনায় বিভাগীয় শাস্তির ব্যবস্থা নিয়েছে র‌্যাব। আন্তর্জাতিক পরিম-লে র‌্যাবের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগও রয়েছে।
র‌্যাব কর্মকর্তারা বলছেন, একটি বাহিনীর মধ্যে সবচেয়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার স্থান দেখিয়েছে র‌্যাব।
র‌্যাবের হিসাব অনুযায়ী, গত ১১ বছরে সারাদেশে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদবিরোধী অভিযানে ১ লাখ ৬৬ হাজার ৬৭০ জনকে তারা গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৭৭১ জন জামায়াতুল মুজাহিদীন (জেএমবি) ও হরকাতুল জিহাদসহ বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সদস্য রয়েছে। অভিযানে গত এক দশকে আট হাজার ৭০৬ জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার, ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী উচ্চ বিস্ফোরক ৩৩৪টি, ১২ হাজার ৪৬০টি অস্ত্র, এক লাখ ৮১ হাজার ২২৫ রাউন্ড গোলাবারুদ, ১৮ হাজার ৩৮৯টি ককটেল, বোমা, গ্রেনেড এবং পাঁচ হাজার ৪৬০ কেজি বিস্ফোরক উদ্ধার করেছে র‌্যাব।
র‌্যাব প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ২০০৪ সালে ৫৪, ২০০৫ সালে ১০৬, ২০০৬ সালে ১০৯, ২০০৭ সালে ৮১, ২০০৮ সালে ৬৩, ২০০৯ সালে ৩৮, ২০১০ সালে ৪২, ২০১১ সালে ২৩, ২০১২ সালে ৪৫, ২০১৩ সালে ৩৫, ২০১৪ সালে ২২, ২০১৫ সালে ২৮ জন ও চলতি বছরের ২৫ মার্চ পর্যন্ত ১৪ জন ক্রসফায়ার, লাইন অব ফায়ার এবং বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। র‌্যাবের দাবি, নিহতদের বেশিরভাগই দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নিষিদ্ধ ঘোষিত চরমপন্থী দলের সদস্য, ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডের সন্ত্রাসী, অস্ত্র ব্যবসায়ী, কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী, ছিনতাইকারী ও সুন্দরবনের বনদস্যু।
র‌্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান বলেন, সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা ও আস্থার মূল্যায়ন করে র‌্যাব সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এ বাহিনী সন্ত্রাসী ও জঙ্গিবাদ দমন করছে। সন্ত্রাসী ও জঙ্গিরা যেন মাথাচাড়া দিয়ে না উঠতে পারে তার জন্য কঠোর অবস্থানে রয়েছে র‌্যাব।


শেয়ার করুন