রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করলেন বেলজিয়ামের রাণী

ডেস্ক নিউজঃ

বেলজিয়ামের মহামান্য রাণী কক্সবাজারে বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করেছেন। বাংলাদেশ সফরের দ্বিতীয় দিনে তিনি রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও যুবকদের সাথে দেখা করে জানতে পেরেছেন তাদের প্রতিকূলতা, সম্ভাবনা, উদ্বেগ, আশা ও ভবিষ্যতের স্বপ্নের কথা। তিনি জাতিসংঘ মহাসচিবের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের অ্যাডভোকেট হিসেবে বাংলাদেশ সফরে এসেছেন।

৯৪০,০০০-এরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে কক্সবাজারে উদারভাবে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশের সরকার ও দেশটির জনগণ। ঘনবসতিপূর্ণ শরণার্থী শিবির কক্সবাজারের দক্ষিণে অবস্থিত, যে স্থানটি নিয়মিত প্রাকৃতিক দুর্যোগ দ্বারা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর প্রতিনিধি ইয়োহানেস ভন ডার ক্লাও বলেন, “রোহিঙ্গা সংকটের ষষ্ঠ বছরে যখন আর্থিক সহায়তা ও তহবিল দারুণভাবে কমে যাচ্ছে, সে মুহুর্তে রাণীর সফরটি তাৎপর্যপূর্ণ। এই সফর আমাদের সাহায্য করবে বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম এই শরণার্থী সংকটটির প্রতি বিশ্বের মনযোগ ধরে রাখতে। এর পাশাপাশি এটি রোহিঙ্গাদের জীবন রক্ষাকারী ও জীবন ধারণে প্রয়োজনীয় সুরক্ষায়, বিশেষত নারী ও শিশুদের জন্য লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধ এবং মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যাগুলি মোকাবেলা করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবাগুলি চালিয়ে যেতে গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা করবে।”

রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের সময়, বেলজিয়ামের রানী একটি শিক্ষা কেন্দ্রে শরণার্থী শিশু ও তাদের শিক্ষকদের সাথে দেখা করেন; যেখানে তাকে মিয়ানমারের পাঠ্যক্রম চালু করার গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ এবং প্রশিক্ষণের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে অবহিত করা হয়। আরও রোহিঙ্গা শরণার্থী শিক্ষক খুঁজে পাওয়া ও তাদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা এবং আরও বেশি ছাত্রদের পাঠদানের জন্য অতিরিক্ত জায়গার প্রয়োজন হচ্ছে সে রকম কিছু চ্যালেঞ্জ। মিয়ানমারের পাঠ্যক্রম রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষাকে আরও আনুষ্ঠানিক রুপ দিবে, এবং রোহিঙ্গারা নিরাপদে দেশে ফিরতে পারলে আশা করা যায় এই শিশুরা তাদের শিক্ষা চালিয়ে যেতে পারবে।

কিশোর-কিশোরী রোহিঙ্গা শরণার্থীরা, যারা পরিবেশ রক্ষায় নিজেদের ভেতর সচেতনতা গড়ে তুলছে, তারাও বেলজিয়ামের রাণীর সাথে দেখা করেছে। তারা তাঁকে জানিয়েছে কিভাবে তারা বনভূমির উজাড় রোধে ও স্থানীয় জীব-বৈচিত্র্য রক্ষায় কাজ করছে। ইউএনএইচসিআর-এর পক্ষ থেকে রাণীকে ব্যাখ্যা করা হয়েছে অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও পুনঃবনায়নের মাধ্যমে কিভাবে পরিবেশ রক্ষা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় শরণার্থী ও স্থানীয় জনগণের সক্ষমতা বাড়ানো হচ্ছে।

বেলজিয়ামের রাণী শরণার্থী শিশুদের সাথে এবং লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধ ও মোকাবেলায় কর্মরত রোহিঙ্গা নারী স্বেচ্ছাসেবকদের সাথে দেখা করেন; এবং তাদের সম্প্রদায়ের মানসিক স্বাস্থ্য পরিস্থিতি সম্পর্কে আরও জানতে রোহিঙ্গা শরণার্থী সাইকোসোশ্যাল (মনোসামাজিক) কাউন্সেলরদের সাথে আলোচনায় অংশ নেন।


শেয়ার করুন