রোহিঙ্গাদের ঢুকতে না দেয়া মানবতাবিরোধী অপরাধ: জাফরুল্লাহ

সিটিএন ডেস্ক :

মিয়ানমারে জাতিগত দাঙ্গায় নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে ঢুকতে না দিলে সেটা মানবতাবিরোধী অপরাধ হবে বলে দাবি করেছেন গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘তাদের সারাদেশে না হোক, সীমান্তের কাছে নিরাপদে রাখার ব্যবস্থা করা যায়।’

বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে নির্বাচন কমিশন গঠন বিষয়ে নাগরিক ভাবনা বিষয়ে এক গোলটেবিলে জাফরুল্লাহ চৌধুরী এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক নাগরিকের উচিত রোহিঙ্গাদের জন্য মিয়ানারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা।’

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সম্প্রতি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। এই অভিযানে এখন পর্যন্ত ৬৯ জনের মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেছে নিরাপত্তাবাহিনী। এ সময় পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে তাদের ঘরবাড়ি। আর প্রাণে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসার চেষ্টা করছে শত শত রোহিঙ্গা। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার তাদেরকে দেশে আশ্রয় দিতে নারাজ। সীমান্ত থেকেই রোহিঙ্গাদেরকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।

সরকারের অবস্থানের সমালোচনা করে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশে ৭১ সালে যা ঘটেছিল মিয়ানমারের আরাকানে সেই ঘটনাই চলছে। এই অবস্থায় আমাদের সীমান্ত বন্ধ রাখা অমানবিক।’

আলোচনায় নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্রস্তাব নিয়েও কথা বলেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী। আওয়ামী লীগ এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলেও গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, এই প্রস্তাব নিয়ে অবশ্যই আলোচনা হতে পারে।

খালেদা জিয়া যে প্রস্তাব দিয়েছেন তা মানলে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গেও রাষ্ট্রপতিকে আলোচনায় বসতে হবে। কিন্তু আওয়ামী লীগের এ বিষয়ে আপত্তি আছে। এ ক্ষেত্রে জাফরুল্লাহ চৌধুরী জামায়াত ও মুসলিম লীগকে বাদ দিয়ে আলোচনার প্রস্তাব দেন।

দেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতি চলছে দাবি করে জাফরুল্লাহ বলেন, গুলিস্থানে ছাত্রলীগের নেতা সাব্বির, আশিকুরের পিস্তল সকলেই দেখেছে। কিন্তু পুলিশ তাদের খুঁজে পায় না। আর বিচারপতি খুরশিদ আলম সাহেব দেখন না। মাত্র তিন হাজার টাকার বিনিময়ে তাদের জামিন দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘কিভাবে এরকম হয় প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা আপনার চোখে কি পরে না।’

বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বের হতে না পারলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে না জানিয়ে বিএনপিপন্থি এই বুদ্ধিজীবি বলেন, দেশে কোন হত্যার বিচার হয় না। শুধু বঙ্গবন্ধু, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হলেই কেবল চলবে না। সকল প্রকার হত্যার বিচার করতে হবে।

গোলটেবির বৈঠকে আরও বক্তব্য দেন, বিকল্প ধারার সভাপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মওলা রনি, বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ।


শেয়ার করুন