ডাকাতের গুলিতে গৃহকর্তা নিহত

রামুতে স্বামীর নির্যাতনে অন্তঃস্বত্ত্বা গৃহবধূ

downloadসোয়েব সাঈদ, রামু :
রামুতে স্বামীর নির্যাতনে অন্তঃস্বত্ত্বা গৃহবধূ এবং ডাকাতের গুলিতে গৃহকর্তা নিহত হয়েছেন। শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ভোরে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে মারা যান স্বামীর নির্যাতনের শিকার তছলিমা আকতার তাহসিনা (২৩)। তিনি রামুর ঈদগড় ইউনিয়নের বড়বিল এলাকার আবুল কাসেমের স্ত্রী।
এরআগে বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১২ টায় রামু উপজেলার জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের মালাপাড়া অরইকুলা এলাকায় বসত বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি চলাকালে ডাকাতের গুলিতে প্রাণ হারান গৃহকর্তা নুর আহমদ। ওই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ এবং ডাকাতের প্রহারে আহত হন গৃহকর্তার জামাতা ইছহাক (২৮) ও ছেলে জহির উদ্দিন (২৫)।
ডাকাতের গুলিতে নিহত নুর আহমদ (৫৫) ওই এলাকার নজির আহমদের ছেলে।
ঈদগড়ে স্বামীর নির্যাতনে নিহত তছলিমা আকতার তাহসিনার পিতা মো. ইসমাইল জানান, ঈদেরদিন (শুক্রবার) রাতে যৌতুকের দাবি মেটাতে না পারায় স্বামী আবুল কাসেম সহ পবিবারের সদস্যরা তাকে হাতুড়ি সহ বিভিন্ন সরঞ্জাম দিয়ে পিঠিয়ে আহত করে। মূমুর্ষ অবস্থায় রাত ৩ টায় তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে শনিবার ভোরে মেয়ের মৃত্যু হলে স্বামী সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা হাসপাতাল ছেড়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় তিনি বাদি হয়ে রামু থানায় হত্যা মামলা করেছেন।
ঈদগড় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আবুল কাশেম টুলু জানিয়েছেন, নিহত তছলিমা আকতার তাহসিনা ৪ মাসের অন্তঃস্বত্ত্বা ছিলেন। ময়নাতদন্ত শেষে তার মরদেহ শনিবার বিকালে দাফন করা হয়। তছলিমা আকতারের আড়াই বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে।
জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ নেতা কামাল সামসুদ্দিন আহমেদ প্রিন্স জানিয়েছেন, সম্প্রতি ওই এলাকায় ডাকাত ও অপহরণকারি চক্রের তৎপরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় লোকজন আতংকে ছিলো। এ কারনে বুধবার রাতে নুর আহমদ গরু-ছাগল ও ফসলী জমি পাহারা দেয়ার উদ্দেশ্যে ঘরের সামনে পাহারারত ছিলেন। রাত সাড়ে ১২ টায় একদল অজ্ঞাত ব্যক্তি এসে নুর আহমদের বাড়িতে হানা দেয়। এসময় টর্চের আলো দেখে নুর আহমদ চিৎকার করতে চাইলে ডাকাতরা তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে। এতে নুর আহমদ এবং তার জামাতা ইছহাক গুলিবিদ্ধ হন। এসময় ডাকাতদল অস্ত্রের মুখে বাড়ির অন্যান্য সদস্যদের জিম্মি করে লুটপাট চালিয়ে বিভিন্ন মালামাল নিয়ে সটকে পড়ে। ঘটনার পর স্থানীয় জনতা গিয়ে গুলিবিদ্ধ নুর আহমদ ও ইছহাককে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠায়। তবে হাসপাতালে নেয়ার পথে প্রাণ হারান গৃহকর্তা নুর আহমদ। এ ঘটনায় অপর গুলিবিদ্ধ ইছহাক (২৮) বর্তমানে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধিন রয়েছেন। ডাকাতের মারধরে নুর আহমদের ছেলে জহির উদ্দিন আহত হন। নিহত নুর আহমদ ৩ ছেলে ৩ মেয়ের জনক।
সহকারি পুলিশ সুপার (উখিয়া সার্কেল) আব্দুল মালেক, রামু থানার ওসি মো. আবদুল মজিদ বৃহষ্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। রামু থানার ওসি আবদুল মজিদ ডাকাতের গুলিতে হতাহতের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 


শেয়ার করুন