রামুতে পানি ও তেল পড়া নিতে হাজারো নর-নারীর ভীড়

ramu pic 26.01.15সোয়েব সাঈদ, রামু :
কক্সবাজারের রামু উপজেলার খুনিয়াপালং ইউনিয়নে স্বপ্নে পাওয়া পানি ও তেল পড়া সংগ্রহ করতে এক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে হাজার হাজার নর-নারী ভীড় জমাচ্ছে। কোন প্রকার বিনিময় (ফিস) বিহীন দেয়া পানি ও তেল পড়া ব্যবহার করে যে কোন রোগ আরোগ্য লাভের খবরে সর্বত্র তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিন পরিদর্শন ও স্থানীয়দের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, উপজেলার খুনিয়াপালং ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল গনির স্ত্রী ফাতেমা বেগম (৫০) এক বছর পূর্বে পানি ও তেল পড়া দিয়ে বিভিন্ন রোগ্য ব্যাধি ভালো হবে মর্মে স্বপ্নে দেখেন। সেই থেকে ফাতেমা বেগম স্থানীয় গ্রাম থেকে আসা লোকজনকে নিজ বাড়িতে পানি ও তেল পড়া দেয়া শুরু করলে তারা এর সুফল পায়। কিন্তু পারিবারিক চাপে পানি ও তেল পড়া দেয়া বন্ধ করে দেন ফাতেমা বেগম। পরবর্তীতে স্থানীয় রোগীদের সুফল পাওয়ার খবরে পারিবারিকভাবে পানি, তেল ও পিয়াঁজ পড়া দেয়া পূনঃরায় শুরু করেন তিনি।
তথ্যানুসন্ধানে আরো জানা গেছে, গত ৬-৭ মাস ফাতেমা বেগমের পূর্ব ধেছুয়াপালংস্থ বাড়িতে প্রতি শনি ও মঙ্গলবার কক্সবাজার জেলা সহ আশপাশের প্রত্যন্ত জনপদের হাজার হাজার নারী-পুরুষ বিভিন্ন রোগ থেকে আরোগ্য লাভের বাসনায় পানি পড়া সংগ্রহ করতে এসে ভীড় জমানো বেশ লক্ষনীয়।
সপ্তাহের দুইদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রায় পাঁচ হাজারের বেশী মানুষকে পানি ও তেল পড়া সরবরাহ দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে পারিবারিকভাবে দায়িত্ব পালনকারি স্বেচ্ছাসেবকদের। এছাড়া উক্ত পানি পড়া সরবরাহকে কেন্দ্র করে ফাতেমা বেগমের বাড়ির আশপাশে গড়ে উঠেছে খাবার হোটেল, চায়ের দোকান, খালি বোতল, পিয়াঁজ ও তেল সহ নানা পণ্যের শতাধিক দোকান। এছাড়া পানি পড়া দেয়ার সময় ছুটে আসা নারী-পুরুষদের সুশৃংখলভাবে লাইনে দাঁড়ানো সহ সার্বিক ব্যবস্থাপনার কাজে ফাতেমা বেগমের পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও স্বেচ্ছাস্বেবক হিসেবে কাজ করেন, এলাকার নানা বয়সের লোকজন।
উল্লেখ্য গত ১০ নভেম্বর ফাতেমা বেগমের কাছ থেকে পানি পড়া নিতে ছুটে আসেন, উখিয়া টেকনাফ আসনের সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি। ওই সময় বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিকে এনিয়ে খবর প্রকাশিত হলে ফাতেমা বেগমের পানি পড়া দেয়ার বিষয়টি আরো বেশী আলোচনায় চলে আসে।
রামু উপজেলার কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের ডোলপাড়ার ষাটোর্দ্ধ মহিলা সুফিয়া বেগম জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন হাঁপানি রোগে আক্রান্ত হয়ে অতিকষ্টে দিনাতিপাত করছিলেন। এক সপ্তাহ পূর্বে অন্যান্যদের সাথে তিনি ফাতেমা বেগমের বাড়িতে গিয়ে পানি পড়া সংগ্রহ করেন। সেই পানি পড়া ব্যবহার করে তিনি বর্তমানে অনেকটা সুস্থ বলে দাবি করেন।
এছাড়া টিউমার সহ বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত নারী-পুরুষ ওই পানি, তেল ও পিয়াঁজ পড়া ব্যবহার করে সুফল পেয়েছেন বলে জানা গেছে।
ফাতেমা বেগমের স্বামী খুনিয়াপালং ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল গনি জানিয়েছেন, প্রথম প্রথম তিনি ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা ফাতেমা বেগমকে পানি পড়া দিতে বাঁধা দিয়েছিলেন। সাধারণ মানুষের দাবি এবং নানা জটিল রোগে আক্রান্তরা সুফল পাচ্ছেন, এমন খবরে মানব কল্যাণের বিষয়টি ভেবে তাঁরা স্ত্রী ফাতেমা বেগমকে পূণঃরায় পানি ও তেল পড়া দেয়ার অনুমতি দিয়েছেন। তবে পানি, পিয়াঁজ বা তেল পড়া দেয়ার জন্য কারো কাছ থেকে এ পর্যন্ত কোন অর্থ নেয়া হয়নি। ভবিষ্যতেও নেয়া হবে না।


শেয়ার করুন