হাফিজুল ইসলাম চৌধুরী, নাইক্ষ্যংছড়ি :
রামুর পূর্বাঞ্চলে মোবাইল অপারেটর রবির নেটওয়ার্ক বিড়ম্বনায় ভুগছে অন্তত পনের হাজার গ্রাহক। “জ্বলে উঠুন আপন শক্তিতে” শ্লোগানে শত শত গ্রাহককে জ্বালিয়ে মারছে মোবাইল অপারেটর রবি অজিয়াটা লিমিটেড কোম্পানি। সদ্য বিদায় নেওয়া পবিত্র ঈদুল আযহার পূর্ব থেকে উপজেলার গর্জনিয়া ও কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামে রবি সিম ব্যাবহারকারী গ্রাহকদের ভোগান্তি চরম আকার ধারন করেছে।
বিশেষ করে রবি থেকে রবি এবং রবি সিম ব্যাবহারকারী গ্রাহকের মোবাইল থেকে কোথাও কল ঢুকানো সম্ভব হচ্ছে না। অন্য অপারেটর থেকেও রবি সিম ব্যাবহারকারীর মোবাইলে কল যাচ্ছেনা। যদিও কল যায়, তখন ৩০/৪০ সেকেন্ট পর কল ড্রপ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু টাকা কেটে নেওয়া হচ্ছে ঠিকই, সংযোগ দেয়া সম্ভব হচ্ছেনা অথবা বন্ধ আছে বলছে। এর প্রভাব পড়ছে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ও আশপাশ এলাকায়। ওইসব এলাকার গ্রাহকেরাও গর্জনিয়া-কচ্ছপিয়া ইউনিয়নস্থ নিকট আত্মিয়-স্বজনের সাথে সঠিক সময়ে কথা বলতে পারছে না।
এভাবে ঘন্টার পর ঘন্টা চেষ্টা করার পরও যোগাযোগ স্থাপন করতে না পেরে অনেকে রাগে মোবাইল ছুড়ে মারছেন, কেউবা মোবাইলের সমস্যা মনেকরে মোবাইল নিয়ে মেকানিকের দ্বারস্থ হচ্ছেন, অথবা নতুন মোবাইল কিনছেন। অনেকে আবার রবি নাম্বার পরিবর্তন করে অন্য অপারেটরের সাথে যুক্ত হচ্ছেন বিড়ম্বনা থেকে বাঁচতে।
খোঁজ নিয়ে জান জানা গেছে, এতদঅঞ্চলে রবি গ্রাকের সংখ্যা প্রায় ৯২ ভাগ। মাত্র বাকি ৮ ভাগ মোবাইল গ্রাহক অন্য অপারেটরের সিম ব্যবহার করছেন। এখন নেটওয়ার্ক বিড়ম্বনার ফলে তারা গ্রামীন সহ অন্য অপারেটরের সিম ব্যবহার করতে শুরু করেছে। অল্প দিনের মধ্যে রবির নেটওয়ার্ক বিড়ম্বনার সুষ্ঠু সামাধান না হলে শত শত রবি গ্রাহক সিম পরিবর্তন করতে বাধ্য হবেন।
গর্জনিয়া ইউনিয়ন কমিউনিটি পুলিশিং এর সাধারণ সম্পাদক মুহিবুল্লাহ চৌধুরী বলেন, নেটওয়ার্ক বিড়ম্বনার ফলে দেশ-বিদেশে অবস্থানরত আত্মিয়-স্বজনদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
নাইক্ষ্যংছড়ি প্রেসক্লাব সভাপতি মো. ইফসান খাঁন ইমন বলেন, রবি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে শত শত গ্রাহক প্রেসক্লাবে ছুটে আসছে। যা অত্যন্ত দু:খ জনক। গত দশদিন ধরে গর্জনিয়া-কচ্ছপিয়ায় নেটওয়ার্ক বিড়ম্বনা চললেও কেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রবি কর্তৃপক্ষ নিচ্ছেনা তা বোধগম্য নয়।
জানতে চাইলে রবি অজিয়াটা লিমিটেড কোম্পানির দায়িত্বপ্রাপ্ত নাইক্ষ্যংছড়ি রবি সেবার ডিস্টিভিউটর মো.ফরমান উল্লাহ জানান, নেটওয়ার্ক বিড়ম্বনার বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তবে কেন বিলম্ব হচ্ছে, তা বলতে পারছি না।
রবি অজিয়াটা লিমিটেড কোম্পানির কক্সবাজার জোনের এরিয়া ম্যানেজার ইউনুস আহম্মদ জানান, এ বিষয়ে ঢাকা অফিসও অবগত রয়েছে। আগামী ১০ ঘন্টার মধ্যেই এ সমস্যার সামাধান হয়ে যাবে।
এখন প্রশ্ন হলো শত শত মানুষের নেটওয়ার্ক বিড়ম্বনা সমাধান করতে রবি যদি ১০ ঘন্টা বা তার বেশী সময় নেয় এবং এরমাঝে যোগাযোগ করতে না পেরে যদি কারও মুমূর্ষ রোগী মারা যায় বা কোন বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটে, তার দায়ভার কি মোবাইল অপারেটর রবি কর্তৃপক্ষ নিবেন? এবং টাওয়ারের অবকাঠামোগত উন্নয়ন না করার কারনে কলড্রপ সহ বিভিন্ন ভাবে গ্রাহকের ব্যালেন্স কেটে নেওয়ার কোন সদুত্তর মোবাইল অপারেটর রবি কর্তৃপক্ষ দিবে কিনা? নাকি সবসময়ের মত বলির পাঠা হবে সাধারন জনগন?
রবির নেটওয়ার্ক বিড়ম্বনায় গর্জনিয়ার শত শত গ্রাহক
শেয়ার করুন