রক্তস্নাত মানবতার আর্তনাদ

রক্তস্নাত মানবতার আর্তনাদ
আতিক সুজন

কথা ছিল কবিতার বারুদ-গন্ধে অরুণোদয়ের ,
নতুন শতকে মুগ্ধ-প্রভাতের অগ্নিসাক্ষী হওয়ার কথা ছিলো আমারও,
কথা ছিল রুদ্ররোষে ফেটে পড়া জনতার স্রোতে ঋতুচক্রে আসবে নতুন বসন্ত
ঢেউয়ের কীর্তনে ভাঙতে ভাঙতে জেগে উঠবে নতুন চর;
কিন্তু হয়নি,
আসেনি,
উঠেনি।
এ হিসেবে তোমরা আমাকে একজন ব্যর্থ কবিই বলতে পারো;
.
আমি অধিকারের দাবিতে পৃথিবীর মানচিত্রের ওপর দিয়ে হেঁটেছি অহর্নিশ,
জোৎস্না-প্লাবিত মায়াবী রাতের আঁচল ঠেলে
ডাস্টবিনে স্তুপিকৃত পঁচা ফুলের ভিড়ে
নির্দয় কীটপতঙ্গের কাছে পড়ে থাকা
পরিচয়হীন শিশুটির জন্য
কিংবা খাক ও খুনের স্রোতে অসহায় মানবতার জন্য
পঙক্তির পর পঙক্তি সাজিয়ে লিখেছি
অজস্র পঙক্তিমালা।
কিন্তু রক্তস্নাত মানবতার আর্তনাদ দুখিনী জননীকে ঘুমোতে দিচ্ছে কই!
রাত্রির খামে আটকা পড়ে শিশির হয়ে ঝরছে প্রকৃতির সবুজ উঠোনে ;
এজন্যও তোমরা আমাকে একজন ব্যর্থ কবিই বলতে পারো;
.
তোমরা বরং আমাকে একজন ব্যর্থ কবিই বলো
কারণ, সবাই তাদের মেমোয়ার্সে নিজেকে
যেভাবে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে প্রচার করে–
আমি তা পারি না।
এই দ্যাখো, কেমন অকপটে স্বীকার করে নিলাম থরথর করে কাঁপা শীতার্ত কিশোরীর গায়ে গরম কাপড় দিতে না পারার ব্যর্থতা!
.
রেভ্যুলেশান ইন রেভ্যুলেশান;
শালার কত রেভ্যুলেশান এলো
আবার মিলিয়ে গেল বুদ্বুদের মতো।
কিন্তু ক্ষুধাক্লিষ্ট মানবতার জন্য কবিতায় একটা রেভ্যুলেশান এলো না ;
বলো,
তোমরা বরং আমাকে একজন ব্যর্থ কবিই বলো।


শেয়ার করুন