যতদূর চোখ যায় শুধু মানুষ আর মানুষ

98937_1সিটিএন ডেস্ক:

ঢাকা: যতদূর চোখ যায় শুধু মানুষ আর মানুষ। আরাফাত রহমান কোকোর জানাজা ঘিরে পল্টন ও গুলিস্তান এলাকা পরিণত হয় জনসমুদ্রে।

বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের অভ্যন্তরে মরদেহ রাখা হলেও বাইরে জনতার বিস্তৃতি ছিল বহু দূর পর্যন্ত।

আকস্মিকভাবে অকালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়া শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এবং বিএনপি চেয়ারপাসন খালেদা জিয়ার কনিষ্ঠপুত্র কোকোর জানাজায় অংশ নিতে বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেট থেকে মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়াম, মহানগর নাট্যমঞ্চ, গোলাপশাহ মাজার থেকে জিপিও মোড় পর্যন্ত সড়কে মানুষ অবস্থান নেয়। অন্যদিকে বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেট থেকে পল্টন মোড়, দৈনিক বাংলা মোড়, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ এবং মতিঝিল এলাকায়ও লাখো মানুষ সমবেত হয়।

ঢাকা ছাড়াও নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর থেকে অসংখ্য মানুষ জানাজায় অংশ নেন বলে জানা গেছে।

এদের কেউ এসেছিলেন চিরাচরিত জানাজার নামাজের পোশাক পরে। অনেক লোক আবার লুঙ্গি পরেও শরিক হন জানাযায়। অনেকেকই এ সময় অশ্রুসিক্ত দেখা যায়।

কোকো যেমন ছিলেন রাজনীতির বাইরের মানুষ, তেমনি তার জানাযাতে শরিক হন সব শ্রেণি পেশার মানুষ।

মঙ্গলবার মাগরিবের কিছুক্ষণ আগে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে তার দ্বিতীয় জানাজা সম্পন্ন হয়।

এর আগে বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেট দিয়ে প্রবেশ করে কোকোর মরদেহ বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সটি।

বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রায় সবাই বায়তুল মোকাররমে কোকোর জানাজায় অংশ নেন। এছাড়া শিক্ষক, সাংবাদিক, আইনজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ জানাজায় অংশ নেন।

বায়তুল মোকাররম এলাকায় পুলিশের নির্দেশে সব ধরনের দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়া হয়।

জানাজায় ইমামতি করেন জাতীয় মসজিদের খতিব মাওলানা সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি কোকোর রুহের মাগফিরাত কামনা করে আল্লাহর দরবারে দোয়া করেন।

জানাজার পর কিছুক্ষণের মধ্যেই কোকোর মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স রওনা হয় বনানী কবরস্থানের উদ্দেশে।

জানাজাকে কেন্দ্র করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেট, দক্ষিণ গেট, স্টেডিয়াম সংলগ্ন এলাকা ও জুয়েলার্স মার্কেট এলাকায় মোতায়েন করা হয় বিপুলসংখ্যক পুলিশ-র‌্যাব। এসব এলাকায় প্রিজন ভ্যান থেকে শুরু করে রায়টকার, এপিসি ও জলকামান প্রস্তুত রাখা হয়।

শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় মালয়েশিয়ায় হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান আরাফাত রহমান কোকো। মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ঢাকার হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসে কোকোর মরদেহ।

পরিবারের পক্ষ থেকে কোকোর মরদেহ বুঝে নেন কোকোর চাচাতো ভাই মাহবুব আল আমিন ডিউ। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন খালেদা জিয়া মনোনীত বিএনপির পাঁচ নেতা স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, আবদুল্লাহ আল নোমান ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী।

বিমানবন্দরে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক এমএ মান্নান, মীর মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীন ও সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন।

বেলা সোয়া ১২টার দিকে তার মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স বিমানবন্দর থেকে খালেদা জিয়ার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ের উদ্দেশে রওনা হয়। দুপুর দেড়টার দিকে কোকোর মরদেহ গুলশানে খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে পৌঁছায়। কার্যালয়ের নিচতলার কনফারেন্স রুমে তার মরদেহ রাখা হয়। এ সময় খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।

সূত্র:আরটিএনএন


শেয়ার করুন