মেক্সিকোতে শক্তিশালী ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬১


স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাতে দেশটির দক্ষিণ উপকূলে ৮ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্পটি হয়, ভূমিকম্পের পর প্রশান্ত মহাসাগরের মেক্সিকো উপকূলে দুই দশমিক তিন ফুট উচ্চতার সুনামির হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশান্ত মহাসাগরীয় সুনামি সতর্কীকরণ কেন্দ্র, খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা জানিয়েছে, শক্তিশালী এই ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র ছিল মেক্সিকোর পিজিজিআন শহর থেকে ৮৭ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং উৎপত্তিস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠের ৬৯ কিলোমিটার গভীরে।

বিবিসি জানিয়েছে, ‍ভূমিকম্পের পর দেশটির সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্য তাবাস্কো, ওহাকা এবং চিয়াপাসে ব্যাপক উদ্ধার অভিযান শুরু করা হয়েছে। এই রাজ্যগুলোর বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা আটকা পড়ে আছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ভূমিকম্পে অন্ততপক্ষে ২০০ লোক আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট এনরিকে পেনা নিয়েতো। একদিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করে নিহত প্রিয়জনদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

ওহাকায় ৪৫ জন, চিয়াপাসে ১২ জন এবং তাবাস্কোতে চারজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত শহরগুলোর মধ্যে অন্যতম ওহাকার জুখিতানে অন্তত ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। শহরটির টাউন হলসহ বহু ভবন ধ্বংস অথবা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
শহরটির মেয়র গ্লোরিয়া স্যানচেজ বলেছেন, “জুখিতানের পরিস্থিতি সঙ্কটজনক। শহরটির ইতিহাসে এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ মূহুর্ত।”

প্রেসিডেন্ট পেনা নিয়েতো শুক্রবার শহরটি পরিদর্শন করেছেন।

ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো মেক্সিকোর সবচেয়ে দরিদ্রতম ও অনুন্নত অংশ এবং ক্ষয়ক্ষতির পুরো বিবরণ পেতে আরো সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন বিবিসির প্রতিনিধি।

স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাত ১১টা ৫০ মিনিটে হওয়া এই ভূমিকম্পে কারণে কয়েকশত মাইল দূরে অবস্থিত রাজধানী মেক্সিকো সিটিতেও আতঙ্ক তৈরি হয়।

একই ভূমিকম্পে গুয়াতেমালায় অন্তত একজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট।

ভূমিকম্পের পর জারি করা সুনামি সতর্কতার কারণে চিয়াপাসের উপকূলীয় এলাকাগুলোর কয়েক হাজার বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়া হয়। পরে সুনামি সতর্কতা তুলে নেওয়া হয়।
শুক্রবার সারাদিন ধরেই পরাঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো বারবার কেঁপে ওঠে।

ক্ষয়ক্ষতি দেখার জন্য প্রেসিডেন্ট পেনা নিয়েতো চিয়াপাসে যাবেন বলে তার দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে।

কলম্বিয়া সফরত পোপ ফ্রান্সিস উন্মুক্ত এক গণপ্রার্থনায় ভূমিকম্পে নিহতদের ও তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য ‘প্রার্থনা’ করেছেন বলে জানিয়েছেন।

১৯৮৫ সালে মেক্সিকো সিটির কাছে আরেকটি শক্তিশালী ভূমিকম্পে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। কিন্তু এবারের ভূমিকম্পটি আরো শক্তিশালী হলেও কম জনবহুল এলাকা হওয়ায় হতাহতের সংখ্যা অপেক্ষাকৃত কম হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।


শেয়ার করুন