মৃত্যুর পরও পায়ে ডাণ্ডাবেড়ি!

120125_1সিটিএন ডেস্ক :

কারাগারে সাজাপ্রাপ্ত আসামির পায়ে ডাণ্ডাবেড়ি পরানোর নিয়ম রয়েছে। তবে কোনো আসামির মৃত্যু হলে যতো দ্রুত সম্ভব তা খুলে ফেলাই নিয়ম। কিন্তু ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে (ঢামেক) চিকিৎসাধীন এক আসামির মৃত্যুর পরও চারঘণ্টা ধরে পায়ে পরানো থাকলো ডাণ্ডাবেড়ি।

বৃহস্পতিবার ঢামেকের নতুন ভবনের ৬০২ নম্বর ওয়ার্ডে মেডিসিন বিভাগের চার নম্বর ইউনিটে এ দৃশ্য দেখা যায়।

মৃত কয়েদির নাম মাহফুজুর রহমান (২২)। তিনি নরসিংদী জেলার শিবপুর থানার নতুন আতাশিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তার পিতার নাম জয়নাল আবেদিন। মাদক মামলায় ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে ছয়মাসের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন। তার কয়েদি নম্বর ২৪৯৮/এ।

কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেলসুপার জাহাঙ্গির কবির বলেন, চলতি মাসের ৭ তারিখে মাহফুজুরকে আমরা কারাগারে বুঝে পাই। এরপর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। কিন্তু অবস্থার কোনো উন্নতি না হওয়ায় ১০ সেপ্টেম্বর তাকে ঢামেকে পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার ভোর ৫টা ৩৫ মিনিটে তার মৃত্যু হয়।

মৃত্যুর পরপরই নিয়ম অনুযায়ী মাহফুজুরের পায়ের ডাণ্ডাবেড়ি খুলে ফেলার কথা। কিন্তু চার ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও কয়েদির মতো আটকাবস্থায় থেকে যায় তার লাশ।

শেষে সকাল ১০টার দিকে কারারক্ষী জাকিরকে সঙ্গে নিয়ে মাহফুজুরের লাশ বুঝে নেন ঢামেক মর্গ অফিসের আলমগীর। সেখান থেকে তাকে ঢামেক কলেজ মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়। সেসময়ও লাশের পায়ে ডাণ্ডাবেড়ি লাগানো ছিল। পরবর্তীতে সংবাদ পেয়ে হাতুড়ি, স্ক্রু-ড্রাইভার ও ছেনি নিয়ে ছুটে আসেন ঢামেকে ডিউটিরত কারারক্ষী জাকারিয়া।

এসব দিয়ে আধঘণ্টা চেষ্টার পরও ডাণ্ডাবেড়ি খোলা না গেলে তারা সাবান পানির আশ্রয় নেন। এতেও বিফল হলে কারারক্ষী জাকিরকে সঙ্গে নিয়ে মাহফুজুরের লাশ ট্রলি থেকে ফ্লোরে নামান জাকারিয়া। তারপর আবার চেষ্টা করেন। এভাবে চেষ্টার আধঘণ্টারও বেশি সময় পর ডাণ্ডবেড়ি খুলে ফেলা সম্ভব হয়।

এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে ঢামেকে ডিউটিরত কারারক্ষী জাকারিয়া জানান, ডাণ্ডাবেড়িতে কোনো চাবির ব্যবস্থা নেই। এভাবেই লাগানো হয় এটি।

চার ঘণ্টা আগে মারা গেলেও এখনো কেন খোলা হচ্ছে জিজ্ঞেস করলে তিনি জবাব দেন, যখন খবর পেয়েছি, তখনই ছুটে এসেছি।

ডাণ্ডাবেড়ি খুলতে এতো সময় কেন লাগলো জানতে চাইলে জাকারিয়া বলেন, মাহফুজুর মারা যাওয়ার পর কয়েক ঘণ্টা পেরিয়ে গেছে। ফলে তার শরীর শক্ত হয়ে গেছে। তার পা বাঁকানো যাচ্ছিলো না।


শেয়ার করুন