মিয়ানমার আরো ১০৩ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর করল

myanmerইসলাম মাহমুদ :

মিয়ানমারের জলসীমায় উদ্ধার হওয়া মিয়ানমার আরো ১০৩ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর করল। ১২ অক্টেবার সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে তাদেরকে বিজিবি প্রতিদিনিদলের কাছে তুলে দেয় মিয়ানমারের ইমিগ্রেশন এন্ড ন্যাশনাল রেজিষ্ট্রেশন ডিপার্টমেন্ট। এর পর তাদের নিয়ে বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করেছে বিজিবি প্রতিনিধিদল।

১৭ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন-এর অধীনস্থ ঘুমধুম বিওপি’র  আওতাধীন বাংলাদেশ-মিয়ানমার মৈত্রী সেতুর বিপরীতে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সীমান্ত পিলার-৩০/১ এর সন্নিকটে দুই দেশের অধিনায়ক পর্যায়ে এ বৈঠক হয়।

বৈঠকে বাংলাদেশের ২১ সদস্যবিশিষ্ট টীমের নেতৃত্ব দেন ১৭ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর ইমরান উল্লাহ সরকার।

মিয়ানমার পক্ষে নেতৃত্ব দেন মিয়ানমারের ইমিগ্রেশন এন্ড ন্যাশনাল রেজিষ্ট্রেশন ডিপার্টমেন্ট এর সহকারী পরিচালক মি. স নেইং।

বৈঠকে বিজিবি কক্সবাজার সেক্টর-এর অতিরিক্ত পরিচালক মাহবুব সাবের, অতিরিক্ত পরিচালক (অপারেশন) মেজর মুহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, অতিরিক্ত পরিচালক (সাধারণ) কর্ণেল এমএম আনিসুর রহমানসহ কক্সবাজার জেলা প্রশাসন, কক্সবাজার জেলা পুলিশ ও  ইমিগ্রেশন পুলিশের প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

অপরদিকে মিয়ানমার পক্ষে উপস্থিত ছিলেন মিয়ানমার ইমিগ্রেশন, বিজিপি এবং স্থানীয় জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

মেজর ইমরান জানান, বৈঠকে উভয় প্রতিনিধি দলের প্রধানগণ প্রথমে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এরপর সাম্প্রতিককালে সাগরপথে মানব পাচারের শিকার হয়ে যে সকল বাংলাদেশী নাগরিক মিয়ানমারে আটকবস্থায় আছেন, তাদের মধ্যে হতে জরুরী ভিত্তিতে প্রত্যাবাসনের জন্য সরকারের পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গৃহীত সিদ্ধান্ত মোতাবেক যাচাইকৃত ১০৩ (একশত তিন) জন বাংলাদেশী নাগরিককে ফেরত আনা হচ্ছে।

তাদেরকে ঘুমধুম সীমান্ত এলাকার বাংলাদেশ-মিয়ানমার মৈত্রী সেতু দিয়ে প্রত্যাবাসন করা হয়। আইনগত প্রক্রিয়া সম্পাদনের জন্য তাদেরকে জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

এর আগে সোমবার বেলা ১১টার দিকে বিজিবি কক্সবাজার ১৭ ব্যাটালিয়নের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর ইমরান উল্লাহর নেতৃত্বে ২১ সদস্যের প্রতিনিধিদলটি হেঁটে মিয়ানমারের উদ্দেশে রওনা হয়।

আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) ন্যাশনাল প্রোগ্রাম অফিসার আসিফ মুনীর জানান, দেশে ফেরত আসার পর তাদের নিজ নিজ বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া পর্যন্ত খাদ্য, চিকিৎসা, যাতায়াত খরচসহ সব ধরনের মানবিক সহায়তা দেবে আইওএম।

২১ মে মিয়ানমারের জলসীমা থেকে ২০৮ জন এবং ২৯ মে ৭২৭ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে উদ্ধার করে দেশটির নৌবাহিনী। তাদের মধ্য থেকে ৬২৬ বাংলাদেশিকে পাঁচ দফায় দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার নাথ জানান, দুই দেশের অধিনায়ক পর্যায়ে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে ১০৩ জন বাংলাদেশীকে হস্তার করেছে মিয়ানমার। পরে তাদের তথ্য যাচাই বাছাইযের জন্য পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে বিজিবি।

তিনি বলেন, অভিবাসন প্রত্যাশীদের বাসে করে কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে নিয়ে আসা হচ্ছে। সেখানে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করবেন। পরে তাঁদের বাড়ির উদ্দেশ্যে ছেড়ে দেওয়া হবে।

 


শেয়ার করুন