মিয়ানমারে বিক্ষোভে, একদিনে নিহত ৩৯

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ

মিয়ানমারে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রতিবাদ বিক্ষোভে রবিবার সবচেয়ে বেশি বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। এদিন দেশটিতে বিক্ষোভ করার সময় অন্তত ৩৯ জন নিহত হয়েছেন বলে খবর দিয়েছে রয়টার্স।

দেশটির সবচেয়ে বড় শহর ইয়াঙ্গুনে বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালিয়ে নিরাপত্তা বাহিনী। বিক্ষোভকারীরাও লাঠি এবং ছুরি নিয়ে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে। ইয়াঙ্গুন শহরেই অন্তত ২১জন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। অন্যরা মারা গেছেন দেশটির অন্যান্য শহরে।

ইয়াঙ্গনের হ্লাইং থারাইয়ার এলাকায় অনেক কারখানা রয়েছে যেগুলো চীনা বিনিয়োগে তৈরি। চীনা কর্তৃপক্ষের অভিযোগ এখানে চীনা কারখানাগুলো বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হচ্ছে, তাদের নিরাপত্তা প্রয়োজন।

জান্তা সরকার এরপর এই এলাকায় সামরিক আইন জারি করে। বেইজিং বলছে, বিক্ষোভকারীরা রড, কুঠার এবং পেট্রোল নিয়ে আক্রমণ চালিয়ে অন্ততঃ দশটি কারখানার ক্ষতিসাধন করেছে। এগুলো মূলত তৈরি পোশাকের কারখানা কিংবা গুদাম। একটি চীনা হোটেলও হামলার লক্ষ্যে পরিণত হয়।

মিয়ানমারের চীন দূতাবাস তাদের ফেসবুক পাতায় লিখেছে, কারখানাগুলোতে লুটপাট হয়েছে, ক্ষতিসাধন করা হয়েছে, বহু চীনা কর্মী আহত হয়েছে এবং তারা আটকে পড়েছে। ওই এলাকায় দিনভর গুলির শব্দ শোনা যায়। রাস্তায় দেখা গেছে সেনাবাহিনীর ট্রাক। বিক্ষোভকারীর বালির বস্তা, টায়ার এবং কাঁটাতার দিয়ে অবরোধ তৈরি করে।

কিছু বিক্ষোভকারীকে দেখা যায় অস্থায়ী ঢাল তৈরি করে সামনে এগিয়ে যাচ্ছেআহতদের উদ্ধার করার জন্য। বার্তা সংস্থা এএফপিকে একজন স্বাস্থ্যকর্মী বলেন, ‘আমার চোখের সামনেই তিনজন আহত ব্যক্তি মারা গেছে’। এদিকে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে, পুলিশের একজন সদস্যও সেখানে নিহত হয়েছে।

এএপিপি মনিটরিং গ্রুপের হিসেবে, মিয়ানমারে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হবার পর এখন পর্যন্ত ১২০ জন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে।

পালিয়ে যাওয়া বেশ কয়েকজন এমপি গত মাসের সামরিক অভ্যুত্থান মেনে নেননি। তারা লুকিয়ে নিজেদের মিয়ানমারের বৈধ সরকার বলে দাবি করেছেন।

লুকিয়ে থাকা রাজনৈতিকদের নিয়ে গঠিত একটি কমিটির প্রধান মাহন উইন খিয়াং থান প্রথম বার্তায় বিক্ষোভকারীদের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহবান জানিয়েছেন, যাকে তিনি ‘বিপ্লব’ বলে বর্ণনা করেছেন।

গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের নির্বাচিত নেত্রী অং সান সু চি ও প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ একাধিক নেতাকে গ্রেপ্তার করে সেনাবাহিনী অভ্যুত্থানের ঘোষণা দেয়। এরপর থেকে মিয়ানমারের জনগণ জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছেন। এখন পর্যন্ত পুলিশের গুলিতে শতাধিক বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। গ্রেপ্তার হয়েছেন দুই হাজারের বেশি।


শেয়ার করুন