মিয়ানমারে পাচার হচ্ছে দেশীয় সিমকার্ড

এম.শাহজাহান চৌধুরী শাহীন:
পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারে বিনা বাধায় পাচার হচ্ছে বিভিন্ন কোম্পানীর মোবাইল সিম। মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ১০ কিলোমিটার পর্যন্ত নেটওয়ার্ক এলাকায় ব্যবহার হচ্ছে এসব সিম কার্ড। এতে করে রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য ফাঁসের পাশাপাশি ইয়াবা ও মাদকদ্রব্য পাচার অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে।
জানা যায়, দেশের সর্বোচ্চ রাজস্ব আদায়কারী মোবাইল অপারেটর প্রতিষ্টান গুলো তাদের ব্যবসার সম্প্রসারণের লক্ষে কক্সবাজারের সীমান্ত এলাকায় যত্রতত্র ভাবে টাওয়ার স্থাপন করেছে। ওইসব টাওয়ারের সাহায্যে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ১০ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকা নেটওয়ার্ক আওতায় চলে এসেছে। বাংলাদেশী সিম কার্ড ব্যবহারের জন্য মিয়ানমারের লোকজন আগ্রহী হয়ে পড়ায় সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে পাচার করা হচ্ছে সিম। সে দেশে অবৈধ ভাবে নেটওয়ার্ক ব্যবহারের মাধ্যমে তারা এদেশের যাবতীয় তথ্য সংগ্রহে সক্ষম হওয়ায় রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য ফাঁসের পাশাপাশি ইয়াবা ও মাদকদ্রব্য পাচার অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে বলে একাধিক সুত্র জানায়।
সীমান্ত এলাকার গ্রামবাসির সাথে কথা বলে জানাগেছে, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত আরকান রাজ্যের বিশাট একটি অংশে বসবাসরত প্রতিটি রোহিঙ্গার হাতে এখন বাংলাদেশের বিভিন্ন কোম্পানীর সিম কার্ড ব্যবহারকারী মোবাইল রয়েছে। তাদের মোবাইলে বেশির ভাগ ব্যবহৃত হচ্ছে রবি, গ্রামীন,এয়ারটেল সহ বিভিন্ন কোম্পানীর সিম কার্ড।
মিয়ানমারের মংডু বলী বাজার গ্রামে রবি সিম ব্যবহারকারী জাফর আলম জানান, বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকায় রবি ও গ্রামীনের টাওয়ার স্থাপনের ফলে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ১০ কিলোমিটার জুড়ে সরাসরি নেটওয়ার্ক বিস্তৃত থাকায় বাংলাদেশর সাথে সহজে যোগাযোগ করা যাচ্ছে। এজন্য এখানকার সাধারণ নাগরিক থেকে শুরু করে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার লোকজনও বাংলাদেশী মোবাইল সিম ব্যবহার করছে।
তিনি আরো জানান, মিয়ানমার সীমান্তরক্ষীরা তাদের সোর্সের মাধ্যমে বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষীর যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ থেকে থেকে শুরু করে চলমান রাজনৈতিক খবরাখবর সার্বক্ষনিক নিচ্ছে। এমনকি তারা বাংলাদেশের বিভিন্ন ইংরেজী দৈনিক সংগ্রহ করে নিয়মিত পড়ছে। এভাবে নেটওয়ার্ক বিস্তারের ফলে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের উপর হুমকি বলে মন্তব্য করে অচিরেই নেটওয়ার্ক নিয়ন্ত্রণে আনা ও সিম কার্ড পাচার বন্ধের দাবী করেন তিনি।
টেকনাফ ও উখিয়ার বাসিন্দারা জানান, সীমান্তবর্তী এই দু’উপজেলার সর্বত্র যত্রতত্রভাবে রবি ও গ্রামীন সিম পাওয়া যাচ্ছে। কোন রকম রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই বিক্রি করা হচ্ছে এসব সিম। ভুয়া আইডি কার্ড ও ছবি দেখিয়ে রবি ও গ্রামীন অফিসের কর্মকর্তারা চালু করে দিচ্ছে এসব সিম।
এব্যাপারে ১৭ বিজিবি’র অধিনায়ক লে.কর্ণেল খন্দকার সাইফুল আলম জানান, পাচারকারীরা মোবাইল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে আমাদের অবস্থান নিশ্চিত করেন। এরপর চোরাইপণ্যের বড়বড় চালান পাচার করছে। যা অনেক ক্ষেত্রে আমরা চেষ্টা করেও আটক করতে সক্ষম হচ্ছি না।


শেয়ার করুন