হোয়ানক বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের ঈদপূনর্মিলনী

‘মিলনচরে’ স্বপ্নসারথীরা

12048518_827185094064187_342224413_nশাহেদ ইমরান মিজান

 ব্যাচ-২০০৫
হোয়ানক বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়:

মানুষ স্মৃতিরকাতর। এই জিনিসটি চিরকাল মানুষের হৃদয়পাড়ে দোলায়িত হয় বিশেষ অবগাহনে। সেই সাথে আবেগ নামে কোমল বস্তুটাও মানুষের অস্থিত্ব জুড়ে ঘুরে বেড়ায় অহর্নিশ! স্মৃতি এবং আবেগ; এই দু’বস্তু যখন মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় তখন কেমন হয়? ২৮ সেপ্টেম্বর স্মৃতি আর আবেগের এই রকম এক মিলনমেলা হয়ে গেলে মহেশখালী উপজেলার অন্যতম শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হোয়ানক বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ে।
অনেক প্রাক্তনদের উপস্থিতিতে কানায় কানায় সকাল থেকে আলোতে ভরে উঠছিল যেন বিদ্যালয় প্রাঙ্গন! একে একে আসতে থাকে সবাই। ঠিক সময়ে যেন এক ‘মিলনচর’ হয়ে ধরা পড়লো প্রিয় বিদ্যালয় চত্বর। উচ্চ শিক্ষা বা কর্মজীবনের প্রয়োজনে জীবনের অনেক সময় দূরে থাকা প্রিয় বন্ধুটিকে এক মুহূর্তের জন্য কাছে যেন প্রাণোচ্ছ্বাসে ভরে উঠে প্রাক্তন মন। কোলাকুলি, কুশল বিনিময়; ঠিক যেন-‘বন্ধু কেমন আছিস্’। জমানো ‘কথারমালা’র খুনোসুটিতে মেতে উঠে বন্ধুরা। সেই সাথে বড়ভাই-বোনদের কাছে পেয়ে ছোটরাও আহ্লাদিত হয়। উপদেশ-পরামর্শসহ নানা বিষয়ে বড়দের বিষিয়ে তুলে অনেক ছোট! একই ভাবে ছোটদেরও স্নেহডোরে আলিঙ্গনের চাদর জড়িয়ে দিয়েছেন বড়রা।
বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত ঈদপূনর্মিলনীর এই মিলন মেলায় এসেছিলেন বিদ্যালয়ের প্রবীণ-নবীণ অনেক প্রাক্তন ছাত্রছাত্রী। তবে এর মধ্যে নবীনদের সংখ্যা বেশী হলেও প্রবীণদের সংখ্যাও উড়িয়ে দেয়ার মতো নয়।
অতিযত্নে গড়ে তোলার দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত ছাত্রদের পেয়ে কম আনন্দ পাননি প্রিয় শিক্ষকরাও। প্রধান শিক্ষক আবু তাহের স্যার, সহকারী প্রধান শিক্ষক মোস্তফা স্যার, কুতুব স্যার, আলী আহমদ স্যার। সারাটি সময় জুড়ে তারা প্রিয় ছাত্রদের আলিঙ্গনে জড়িয়ে রেখেছিলেন যেন। তার মধ্যে প্রধান শিক্ষক আবু তাহের স্যার, সহকারী প্রধান শিক্ষক মোস্তফা স্যারের নিংড়ানো ভালোবাসা তুলনাহীন ছিল।
অনুষ্ঠানে মূল পর্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে পুরো আয়োজনকে মাতোয়ারা করে তুলেছিলেন মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনের সাংসদ তরুণ প্রজন্মের এক খন্ড প্রতিচ্ছবি আশেক উল্লাহ রফিক। তাঁর জ্ঞানগর্ব ও স্বপ্ন জাগানিয়া কথামালায় নিজেদের আরেকবার প্রস্তুত করছিল যেন উপস্থিত আগামীর কান্ডারিরা। এছাড়াও বিভিন্ন বক্তা ও কয়েকজন প্রাক্তন ছাত্র নিজেদের এগিয়ে যাওয়া গল্প বলে স্বপ্নে স্বপ্নে রাঙিয়েছেন প্রিয় মুহূর্তগুলি।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে যেন বাঁধ ভাঙা উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়ে মঞ্চে। ‘কাককণ্ঠ’, তবুও কার আগে কে গাইবে গান তার প্রতিযোগিতা। তারপরও নিজেদের গাওয়া গান নিয়ে উল্লাসে ফেটে পড়ে প্রাক্তনরা। শেষে দলগত ছবি তুলতে গিয়ে কার আগে যাবে তার প্রতিযোগিতা! শেষ পর্যন্ত উঠানো হলো এক গাদা দলছবি।
এবার ফিরিয়ে যাওয়ার পালা। তবুও মন যেন ফিরতে চাচ্ছিল না। একে একে সবাই বিদায় নিচ্ছিল প্রিয় বন্ধুর কাছ থেকে। চোখের কোনে উঁকি দেয়া চিকচিক অশ্রু যেন তার আজন্মের সাক্ষী! শৈশব-কৈশোর পেরিয়ে আসা প্রিয় বিদ্যালয় আঙিনা ছেড়ে কারও মন ফিরছিল বলে মনে হয়নি। ‘অনেক মিস্ করবো তোকে’
নোট: এমন একটি আয়োজনের জন্য বিশেষ ধন্যবাদ জানাচ্ছি বড়ভাই আবু হানিফ ও সহপাঠী বন্ধু সাজ্জাদ হোসাইনকে।


শেয়ার করুন