মাদ্রাসায় সাহায্য না করার আহবান শিল্পী বন্যার !

bonna

লন্ডনে গান গাইতে এসে ধর্মীয় আবেগে আঘাত করে গেলেন প্রখ্যাত রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। বন্যা বলেছেন, মাদ্রাসায় পড়ে মুক্ত মনের মানুষ হওয়া সম্ভব নয়। তিনি কবি গুরুর মর্মবাণী আত্মসম্মান ও আত্মনির্ভরতার আদর্শ শিক্ষা গ্রহণের আহবান জানিয়েছেন। সেই সাথে তিনি প্রবাসিদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা মাদ্রাসায় সাহায্য না করে যেসব প্রতিষ্ঠান মুক্তবুদ্ধি ও মুক্তচিন্তা চর্চা শেখায় সেখানে দান করলে সমাজে উদার নৈতিক মানুষ সৃষ্টি হবে।’
লন্ডনস্থ প্রবাসিদের উদ্যোগে সোমবার স্থানীয় একটি রেঁস্তরায় আয়োজিত সংগীত সন্ধ্যায় রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা এসব কথা বলেন। তবে তিনি মুক্ত চিন্তা বলতে নাস্তিকতাকে বুঝিয়েছেন কিনা তা খোলাসা করেন নাই। অনুষ্ঠানে সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবে পরিচিত বর্তমানের বিচারপতি শামসুদ্দিন আহমেদ মানিককেও দেখা যায়।

বাংলাদেশ-কলকাতার জনপ্রিয় এই রবীন্দ্র সংগীত শিল্পি জানান, ‘সুরের ধারা’ নামে ঢাকায় তিনি একটি প্রতিষ্ঠান গড়েছেন। এখানে ৩০টি ছেলে-মেয়ে সংগীত, নৃত্য, ছবি আঁকা শিখছে। তাদের সকলকেই বেঁড়ি বাধের বস্তি থেকে এনেছেন। সংগীতের পাশাপাশি গণিত ও ইংরেজি শেখার জন্য কোচিং করতে সহায়তা করা হয়। তিনি এই প্রতিষ্ঠানে সহায়তা করতে প্রবাসিদের প্রতি আহবান জানান। তবে তিনি তার এই ললিত কলা চর্চার বিপরীতে মাদ্রাসাকে আক্রমন করলেন দেখে প্রবাসিরা বিস্মিত হয়।
বন্যা বলেন, এই বাচ্চাগুলো মুক্তচিন্তার শিক্ষা পেয়ে আত্মসম্মানবোধে বেড়ে উঠছে। তাদের মধ্যে একটি লিডারশিপ কোয়ালিটিও তৈরি হচ্ছে। তাদেরকে যখন কোন অনুষ্ঠানে বলা হয় এসব ছেলে- মেয়েরা সমাজের সুবিধা বঞ্চিত। তখন তারা লজ্জা পায়। তারা আমাকে বলে- ‘আমরাতো আপনার কাছ থেকে সকল সুবিধা পাচ্ছি। আমাদেরকে কেন সুবিধা বঞ্চিত বলছেন।’
বন্যা বলেন, এটাই হচ্ছে আত্মসম্মানবোধের পরিচয়। তিনি আরো বলেন, আমাদের ছেলে-মেয়েরা উন্নত বিশ্বের দেশে লেখা-পড়া শিখছে। সেখানেই থাকছে। তারা কখনো দেশে ফিরবে না। দেশও চালাবে না। এই বস্তির ছেলে-মেয়েরাই এক সময়ে দেশ চালাবে। অতএব আমাদের সকলের উচিত তাদেরকে মুক্তচিন্তা-আদর্শের শিক্ষা দেয়া। তিনি জানান, তাঁর প্রতিষ্ঠানটি প্রথমে ইউএনডিপি‘র সহায়তায় চালু হলেও এখন পার্টেক্স গ্রুপ, ওরিয়ন গ্রুপ, গ্রিন ডেলটা, ইনসেপটা সহ অনেকে ব্যক্তিগতভাবেও সহায়তা করছেন। কিন্তু এ প্রতিষ্ঠান চালাতে আরো সহায়তার প্রয়োজন।
তিনি প্রবাসিদের উদ্দেশে বক্তব্য শেষে সুরের মূর্ছনায় উদ্বেলিত করেন বাঙ্গালী শ্রোতাদের। এসময়ে তিনি বেশ কয়েকটি রবীন্দ্র সংগীত পরিবেশেনের পাশাপাশি গানের আলেখ্য ইতিহাস বর্ণনা দেন। তিনি প্রথম গানটি করেন ‘বরিশুধা মাঝে শান্তিরও বাণী’। বিশ্ব কবি এই অমর গানটি লেখেন তাঁর ৩৫ বছর বয়সে। দ্বিতীয় গানটি ছিল ‘আমার হিয়ার মাঝে’। এসময়ে অনেকেই আবেগ আপ্লুত হন। এরপর তিনি দুটি বৈষ্ণব পদাবলী গেয়ে শোনান এবং তার ইতিহাস বর্ণনা করেন।

 


শেয়ার করুন