আনোয়ার পাশা সভাপতি ও এমপি আশেক সাধারণ সম্পাদক

মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন সম্পন্ন

sssssssএম বশির উল্লাহ, মহেশখালী:

বহু জল্পনা-কল্পনা আর কয়েক দফা তারিখ পরিবর্তনের পর অবশেষে মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন ও কাউন্সিল সম্পন্ন হয়েছে। তবে দু’শক্তিমান প্রার্থী সম্মেলন বর্জন করায় কোন ধরণের প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়াই সভাপতি ও সাধারণ মনোনিত হয়েছেন। কাউন্সিলে মতামতের ভিত্তিতে পুনরায় সভাপতি মনোনিত হয়েছেন আনোয়ার পাশা চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মনোনিত হয়েছেন মহেশখালী কুতুবদিয়া আসনের সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিক।
গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টায় বড়মহেশখালী বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক চট্টগ্রাম পার্বত্য বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ঘরেই রয়েছে আওয়ামী লীগের শত্রু। দলের নেতৃত্বে আসতে চাইলে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের উপর আস্থা রাখতে হয়। যারা আস্থা রাখতে পারে না তারা নেতা হতে পারে না। যারা সংগঠনে বিশৃংখলা সৃষ্টি করতে চায় তাদের নেতৃত্ব কর্মীরা কখনো মেনে নেয় না। যারা বর্জনের নামে সম্মেলনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে তারা জামায়াত-বিএনপির এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চায়। তা কখনো আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মেনে নেবে না।’
তিনি মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন ও কাউন্সিল অধিবেশন সম্মন্ন করতে পারায় নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শুভেচ্ছা বার্তা নিয়ে মহেশখালীতে এসেছি। মহেশখালীর সম্মেলনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী অবগত আছেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘আগামীতে মহেশখালীতে যে উন্নয়ন হবে তা সঠিক ভাবে বাস্তবায়ন করতে যোগ্য নেতৃত্বের প্রয়োজন। যা কাউন্সিলরা সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার পাশা চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনের উদ্বোধন করেন কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এড. এ কে আহমদ হোসেন।
উদ্বোধনী বক্তব্যে এড. আহমদ হোসেন বলেন, ‘নেতা নির্বাচন করেন কর্মীরা। যারা কর্মীদের ভয় পায় তারা ষড়যন্ত্রকারী। আগামীতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে মহেশখালীর মত সোচ্চার হবে।’Vp
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সালাহ উদ্দিন আহমদ সিআইপি বলেন, ‘এই অভুতপূর্ব পরিবেশে সম্মেলন ও কাউন্সিল অধিবেশন সম্পন্ন করতে পেরে আমরা সন্তোষ্ট। যারা সংগঠনে বিভেদ সৃষ্টি করতে চায় তাদের আজকের সম্মেলন থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত। আমরা চাই যোগ্য নেতৃত্বের মাধ্যমে দলকে এগিয়ে নিতে, কিন্তু একটি মহল চায় তাদের নিজস্ব এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে।’
উপজেলা আওয়ামী লীগের বিদায়ী সভাপতি এম. আজিজুর রহমনানে সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার জেলা আওয়মাী লীগের সাধারণ সম্পাদক সালাহ উদ্দিন আহমদ সিআইপি, জেলা পরিষদের প্রশাসক মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, আশেক উল্লাহ রফিক এমপি, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এডঃ সিরাজুল মোস্তাফা, সাবেক এমপি অধ্যাপিকা এথিন রাখাইন, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা এডঃ ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি মুজিবুর রহমান চেয়ারম্যান, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল হক মুকুল, কৃষকলীগের কেন্দ্রিয় যুগ্ম সম্পাদক রেজাউল করিম, জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আবু হেনা মোস্তফা কামাল, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী কানিজ ফাতেমা মোস্তাক, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইশতিয়াক আহমদ জয়, রামু উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান সোহেল সরওয়ার কাজল, ধলঘাটার চেয়ারম্যান আহসান উল্লাহ বাচ্চু ও জাফর আলম জফুর।
এরপরই শুরু হয় দ্বিতীয় অধিবেশন। পাবর্ত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপির উপস্থিতিতে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সালাহ উদ্দিন আহমদ’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এড. একে আহমদ হোসেন। মহেশখালী উপজেলার ২০৪ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ১৮৫ জন কাউন্সিলর এর উপস্থিতিতে কাউন্সিল অধিবেশনের কার্যক্রম শুরু করে জেলা আওয়ামী লীগ। এতে সভাপতি পদে আনোয়ার পাশা চৌধুরী ও এম আজিজুর রহমানের নাম প্রস্তাব করা হয়। সাধারণ সম্পাদক পদে সর্বোচ্চ ৮ জন প্রার্থীর নাম প্রস্তাব করা হয়। এরা হলেন আশেক উল্লাহ রফিক এমপি, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ফরিদুল আলম, মহেশখালীর পৌর মেয়র মকছুদ মিয়া, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এডঃ আবু তালেব, সাবেক আইন বিষয়ক সম্পাদক এডঃ আবদুর রউফ, এডঃ নুরুল হুদা, আহসান উল্লাহ বাচ্চু ও মোশারফ হোসেন খোকন। পরবর্তীতে সভাপতি পদে এম আজিজুর রহমান প্রার্থীতা প্রত্যহার করায় আনোয়ার পাশা চৌধুরী নিবার্চিত হন। সাধারণ সম্পাদক পদে ৭ জন প্রার্থী প্রার্থীতা প্রত্যহার করায় সাধারণ সম্পাদক হিসাবে নির্বাচিত হন আশেক উল্লাহ রফিক এমপি।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শফিকুল কাদের, ডাঃ নুরুল আমিন, কক্সবাজার পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র মাহবুবুর রহমান মাবু, মহেশখালীর পৌর মেয়র মকছুদ মিয়া, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা এডঃ বদিউল আলম, ইঞ্জিনিয়ার বদিউল আলম, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যাপক প্রিয়তোষ শর্মা চন্দন, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা শফিউল আলম কুতুবী, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা এডঃ ইসহাক, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হামিদা তাহের, জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি রহিম উদ্দিন,কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ নজিবুল ইসলাম, সুপ্ত ভুষণ বড়–য়া, জেলা যুবমহিলালীগের সভানেত্রী আয়েশা সিরাজ, কুতুবদিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আওরঙ্গজেব মাতবর, সাধারণ সম্পাদক নুরুচ্ছফা বিকম, মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা আলী আহমদ, বড় মহেশখালীর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শরীফ বাদশা, মাতারবাড়ির চেয়ারম্যান এনামুল হক চৌধুরী, কালারমারছড়ার সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ শরীফ মাতবর, কৃষকলীগের সাবেক উপজেলা সভাপতি আবুল ফজল মিয়া, জেলা শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক শফিউল্লাহ আনচারী, উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা কালারমারছড়ার মাস্টার রুহুল আমিন, মাতারবাড়ির মাস্টার রুহুল আমিন, পৌর আওয়ামী লীগ নেতা সালাহ্ উদ্দিন সেতু, বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদের আহবায়ক নুরুল আলম, জেলা যুবলীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক সাজেদুল করিম, এবি ছিদ্দিক খোকন, হোয়ানক ইউনিয়ন মাতারবাড়ির সাবেক সভাপতি জাহাঙ্গীর বাদশা, কুতুবজুমের মাস্টার লিয়াকত আলী, আওয়ামী লীগ সভাপতি মির কাসেম, মাতারবাড়ির সভাপতি জিএম ছমি উদ্দিন, বড়মহেশখালীর সভাপতি সিরাজ মিয়া বাশি, কুতুবজুমের সভাপতি আবদুল গফুর নাগু, শাপলাপুরের সভাপতি ডাঃ ওসমান সরওয়ার, ছোট মহেশখালীর সভাপতি জহিরুল আলম সিকদার, ধলঘাটার সভাপতি সাঈদ আলম, পৌর আওয়ামী লীগের রফিকুল ইসলাম কাউন্সিলর, আবু ছিদ্দিক, মাতারবাড়ির সাধারণ সম্পাদক আবু হায়দার, বড়মহেশখালীর সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন, কুতুবজুমের সাধারণ সম্পাদক রবিউল হোসেন, শাপলাপুরের সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন, ধলঘাটার সাধারন সম্পাদক আমান উল্লাহ, ছোট মহেশখালীর সাধারণ সম্পাদক এনাম করিম, সাবেক ছাত্রনেতা শেখ কামাল, কক্সবাজার পৌর যুবলীগের আহবায়ক শোয়েব ইখতেকার, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আবদুর মোনাফ, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ইসমাইল সাজ্জাদ, টেকনাফ আওয়ামী লীগ নেতা সোনা আলী, মহেশখালী উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক ওয়াজেদ আলী মুরাদ, যুগ্ম আহবায়ক হালিমুর রশিদ, যুগ্ম আহবায়ক মোবারক হোসেন বারেক, যুগ্ম আহবায়ক নুরুদ্দিন মাসুদ, সাহেল মোহাম্মদ আশেক ও নজরুল ইসলাম।
প্রসঙ্গত, ভেন্যু নিয়ে মতভেদের কারণে সম্মেলন বর্জন করেছেন সভাপতি পদপ্রার্থী মহেশখালী উপজেলা চেয়ারম্যান মো: হোসাইন ইব্রাহিম ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী মো: শাহাজাহান। তারা গত সোমবার রাতে এক জরুরী সংবাদ সম্মেলন করে সম্মেলন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। তারা জানিয়েছিলেন, বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজ চত্বরে নির্ধারিত ভেন্যুটি একই সাথে আনোয়ার পাশা, আশেক উল্লাহ ও তাদের আজ্ঞাবহ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক এড. সিরাজুল মোস্তফার এলাকার ভেতর। তাই সেখানে নিরপেক্ষ কাউন্সিল না হওয়ার অভিযোগ তুলে ভেন্যু পরিবর্তনের দাবি করেন। কিন্তু বীর বাহাদুর এমপি তাদের আবেদন প্রত্যাখ্যান করেন। যার ফলে মো: হোসাইন ইব্রাহিম ও মো: শাহাজাহান সম্মেলন বর্জন করতে বাধ্য হয়েছিলেন।


শেয়ার করুন