মওদুদের ‘স্পষ্ট ঘোষণা’: ভোটে যাবে বিএনপি

সিটিএন ডেস্ক :

বিএনপি দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করলেও এবার তারা ভোটে যাবে বলে ‘স্পষ্ট’ করে জানিয়েছেন মওদুদ আহমদ। বলেছেন, বিএনপি ভোটের লড়াইয়ে নামলেই দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি পাল্টে যাবে বলেও মনে করেন তিনি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, ‘আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে (সরকার) বাধা দিচ্ছে যাতে বিএনপি নির্বাচনে না আসে। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, বিএনপি নির্বাচনে যাবে।’

‘বিএনপিসহ সব গণতান্ত্রিক শক্তি যখন রাজপথে মেনে আসবে তখন দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ পাল্টে যাবে।’

দুর্নীতির মামলায় কারাদণ্ড পাওয়া বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরামের এক প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখছিলেন মওদুদ।

বিএনপি নেতা বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়ে কারাগারে রাখা হয়েছে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে। এখন বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে এবং বিপুল জনপ্রিয়তা নিয়ে জয়ী হবে।’

‘আগামী নির্বাচন হবে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে মানুষের ভোটের অধিকার, কথা বলার অধিকার ও নিরপেক্ষ সরকারের দাবি আদায় করা হবে। এরপর যে সরকার গঠন হবে, সেটি হবে জনগণের সরকার।’

খালেদা জিয়া আগামী সপ্তাহেই সর্বোচ্চ আদালত থেকে জামিন পাবেন বলে আশা করেন বিএনপি নেতা। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার নথি এখনও উচ্চ আদালতে না পাঠানোরও সমালোচনা করেন তিনি।

বিএনপি চেয়ারপারসনের মুক্তির দাবিতে বিএনপির কর্মসূচি থেকে নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারেরও সমালোচনা করেন মওদুদ। বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বুঝতে পেরেছে, তাদের পতন ঘনিয়ে আসছে। আর সে জন্য তারা বেপরোয়া হয়ে গেছে। তাই বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা করে নেতাকর্মীদের ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।’

‘গতকালও আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা করে এক ছাত্রনেতাকে ধরে নিয়ে গেছে। কিন্তু মনে রাখবেন, এভাবে বিএনপিকে দুর্বল করা যাবে না।’

‘নির্বাচন কমিশনের মেরুদণ্ড নেই’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনী প্রচারে বাধা না দেয়ায় নির্বাচন কমিশনকে নিয়ে কটাক্ষও করেন মওমুদ। নির্বাচন কমিশন সরকারের তল্পিবাহক আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘তাদের মেরুদণ্ড বলে কিছু নেই। আর যদি মেরুদণ্ডই থাকত, আওয়ামী লীগ সরকারি টাকা খরচ করে নৌকায় ভোট চাইতে পারতো না।’

‘নির্বাচন কমিশন সরকারকে একটা চিঠি পর্যন্ত দিতে পারছে না। আওয়ামী লীগ ভোট চেয়ে যাচ্ছে অথচ বিএনপিকে শুধু আন্দোলন করে যেতে হচ্ছে।’

গত ৩০ জানুয়ারি থেকে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। আর দলের সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনা এখন অবধি চারটি বিভাগীয় সফরে জনসভা করে ভোট চেয়েছেন।

বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, এই সমাবেশ করা হচ্ছে সরকারি খরচে। আর সরকার প্রধান হয়ে এই জনসভা নির্বাচনী আইনের লঙ্ঘন। প্রধানমন্ত্রীকে ‘থামাতে’ বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনকে সম্প্রতি চিঠিও দেয়া হয়েছে।

মওদুদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন জায়গায় জনসমাবেশ করে নৌকা মার্কার পক্ষে ভোট চাইছেন। তিনি এই জনসভা সরকারি টাকা খরচ করে চালাচ্ছেন। এটা সংবিধান পরিপন্থি কাজ।’

‘যদি নৌকা মার্কায় ভোট চাইতেই হয় তাহলে সরকারি সুযোগ সুবিধা প্রত্যাহার করে আওয়ামী লীগের খরচে ভোট চাইতে হবে।’

বিএনপির চিঠির বিষয়ে নির্বাচন কমিশন গণমাধ্যমকর্মীদেরকে জানিয়েছে, রাজনৈতিক দলের সারা বছরই ভোট চাওয়ার অধিকার থাকে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচনী আইন লঙ্ঘনের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে পারে তারা।

তবে নিবার্চন কমিশনের এই বক্তব্য মানতে নারাজ মওদুদ। নেতা বলেন, ‘আপনাদের বেতন দেওয়া হচ্ছে, চাকরির নিরাপত্তা আছে শুধু তফসিল ঘোষণা করার জন্য না। আপনাদের পাঁচ বছরের জন্য নিয়োগ দেওয়া হয় সারা বছর নজরদারি রাখার জন্য। আপনারা ভোটার তালিকা হালনাগাদ করবেন, সীমানা নির্ধারণ করবেন,, একটি নির্বাচন শেষ হলে সংবিধান অনুসারে পরবর্তী নির্বাচনের প্রস্তুতি নেবেন।’

আয়োজক সংগঠনটির উপদেষ্টা এম এ বাশারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি সাইদুর রহমান ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান প্রমুখ।


শেয়ার করুন