ভয়ানক রোগে আক্রান্ত লাখো টিন এজার: দায়ী মোবাইল!

cellt_deesসিটিএন ডেস্ক:
মাত্র ১৫ বছর বয়সেই ঘাড়, পিঠ ও হাতে অসহ্য যন্ত্রণার কুকড়ে গিয়েছে এক কিশোরী! মায়ের হাত ধরে কাঁদতে কাঁদতে কোনরকমে হাসপাতালে এসেছেন। অন্যদিকে মাত্র ২১ বছর বয়সি এক যুবক পা মাটিতে ফেলতে পারছেন না। হাত দিয়ে মুখে খাবার তুলতে পারেন না। পরিবারের অন্যরা খাইয়ে দিচ্ছেন। অনেকটা এভাবেও বলা যেতে পারে ‘পঙ্গুত্ব’ গ্রাস করেছে ওই যুবককে!
এই সমস্যা শুধু ঐ দুজনের নয়, পরিসংখ্যান বলছে লাখে লাখে মানুষ ভুগছেন নতুন এই অসুখে। আর এমন ‘ভয়ানক’ অসুখের শিকার হচ্ছেন বেশিরভাগ টিন এজাররাই।
এমনি সব সমস্যার দেখা মিলছে নিত্যই। চিকিৎসকেরা হিমসিম খাচ্ছেন, পরিবারের লোকেরাও পড়ছেন নানা বিড়ম্বনায়। আর ভোক্তভুগীরাও রাত-দিন কাটাচ্ছেন নিদারুন যন্ত্রনাতেই!
প্রথম প্রথম এই সমস্যার কারণ আঁচ করতে করতে পারেননি অনেকেই। তাই অজানা কোন অসুখ ভেবেই আতংকে কেটেছে অনেকের। তবে এবার চিকিৎসকেরা আকস্মিক এমন নতুন সমস্যার কারণ জানিয়ে সাথে দিয়েছেন সতর্কবার্তাও।
পাঠকদের জন্য আকস্মিক সৃষ্টি হওয়া এই অজানা ও ‘কষ্টদায়ক’ রোগ নিয়ে একটি বিশেষ প্রতিবেদন।
মাত্র কিছুদিন হল, রোগের লক্ষণটা অনেক বেশি প্রকট হয়ে উঠছে। যত দিন যাচ্ছে ততই অল্পবয়সি রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বিভিন্ন দেশে কম বয়সিদের মধ্যেও এই ‘কষ্টদায়ক’ অসুস্থতা দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ছে ছোঁয়াচে অসুখের মতোই। বিভিন্ন হাসপাতালের স্নায়ুরোগ এবং অর্থপেডিক বিভাগে প্রতিদিনই কমবয়সীদের এমন চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।
নেপথ্যের কারণ!
অল্প বয়সি কিশোর-তরুণ-তরুণীদের অথবা যুবক-যুবতীর এমন ‘কষ্টদায়ক’ অসুখের কারণ মোবাইল ফোন। ডাক্তারি পরিভাষায় অসুখের নাম ‘টেক্সট নেক’ । স্নায়ু-সার্জনরা বলছেন, শুধু অ্যানড্রয়েড মোবাইল নয়, অল্পবয়সিদের এমন জটিল ও যন্ত্রণাময় অসুস্থতার পিছনে রয়েছে বাজারে আসা আই-প্যাড, ট্যাব অথবা কিন্ডল্স।
অল্পবয়সীদের কেন এমন অসুখ হচ্ছে?
ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অফ নিউরো সার্জনস এবং সোসাইটি অফ এশিয়-অস্ট্রেলীয় নিউরোলজিক্যাল সার্জন (এ.এ.এস.এন.এস)অংরধহ অঁংঃৎধষধংরধহ ঝড়পরবঃু ড়ভ ঘবঁৎড়ষড়মরপধষ ঝঁৎমবড়হং (অঅঝঘঝ) সংস্থার পৃথক সমীক্ষা রিপোর্ট তথ্যপ্রযুক্তি কেন্দ্রিক নতুন ‘অদ্ভুত’ অসুখের বিবরণ দিয়েছে।
মোবাইল ফোনের গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ‘টেক্সট নেক’ রোগী। ইতিমধ্যে বাংলাদেশে মোবাইল ফোন গ্রাহকের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১৩ কোটি (অক্টোবর ২০১৫ রিপোর্ট অনুযায়ী, ষোল কোটি জনসংখ্যার বাংলাদেশে মানুষের হাতে থাকা মোবাইল সিমের সংখ্যা ১৩ কোটি ছাড়িয়েছে; ইন্টারনেট সেবা নিচ্ছেন সোয়া ৫ কোটি গ্রাহক।) অন্যদিকে আমাদের প্রতিবেশি দেশ ভারতের মোবাইল ফোন গ্রাহকের সংখ্যা ৬০ কোটি ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে ৭০ শতাংশের বেশি গ্রাহকের কাছে দিনে অন্তত ১৮ ঘণ্টা ফোন থাকে।
বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, একনাগাড়ে পর্দায় চোখ রাখার কারণে অনেকের আবার চোখের অসুখ এবং মাথা যন্ত্রণা হচ্ছে। প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি ও ঘন ঘন ঘাড় নিচু করায় কশেরুকার (ডিস্ক) ফাঁক সঙ্কীর্ণ হওয়ায় স্নায়ুতে চাপ পড়ায় যন্ত্রণা হচ্ছে।
সমীক্ষায় বিশেষজ্ঞ স্নায়ু চিকিৎসকরা বলছেন, “সোজা থাকার পরিবর্তে অ্যানড্রয়েড মোবাইল ব্যবহারকারীদের মেরুদ-ের উপরিভাগ দিনের একটা বড় সময় ৩৫ থেকে থেকে ৫৫ ডিগ্রি পর্যন্ত বেঁকে থাকছে।
এশিয়-অস্ট্রেলীয় নিউরোলজিক্যাল সার্জন সংস্থার ঐ রিপোর্টে ভারতের বিখ্যাত ব্রেন সার্জন সুজয় সান্যাল জানিয়েছেন, ব্যাথা কমাতে মুঠো মুঠো পেন-কিলার না খেয়ে দ্রুত চিকিৎসা করুন। প্রয়োজনে ডিস্ক রিপ্লেসমেণ্ট সার্জারি করিয়ে নেওয়া দরকার।
সামাধান : ‘আপনার নিজের সতর্কতা’
সময়ের কণ্ঠস্বর থেকে


শেয়ার করুন