নিজস্ব প্রতিবেদক:
দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীতে ভূঁয়া বায়নামা মূলে সংখ্যালঘু বডুয়া সম্প্রদায়ের জায়গা দখল চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। কালারমারছড়া ইউনিয়নের উত্তর নলবিলা বডুয়া পাড়া এলাকার মৃত রমেশ চন্দ্র বডুয়ার ছেলে গজেন্দ্র বডুয়া জানান, স্থানীয় মৃত রহিম বকসুর ছেলে ফেরদৌস আহমদ একটি ভূঁয়া বায়না নামা সৃজন করে তাদের জায়গা দখলের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সরজমিনে জানা যায়,উত্তর নলবিলা মৌজার আর.এস ১ নং খতিয়ানের ২০১৭, ২০১৮ ও ২০২০ দাগের ও এম আর আর ৩৪৫ নং খতিয়ানের দাগ নং ২০১৮, ২০২০। পরবর্তীতে উক্ত দাগাদীর আন্দরে বি.এস ২৩৩৪ নং দাগের ৭৩ শতক, বি.এস ২৩২৯ নং দাগে ৫৫ শতক, মোট ১.২৮ একর জমি বি.এস ০১ নং খাস খতিয়ানের অন্তর্ভূক্ত হয়। যা নিয়ে গজেন্দ্র বডুয়া গং সহ অপর ৬ জন বাদী হয়ে হয়ে বিজ্ঞ সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে অপর ৪১৯ নং মামলা দায়ের করেন। গজেন্দ্র বডুয়ার অভিযোগ, মামলা দায়ের এর শুরুতে তাদের’কে সহায়তার কথা বলে কক্সবাজার আসতেন ফেরদৌস। এর পর থেকে ফেরদৌস নিরবে শুরু করেন বিভিন্ন ষড়যন্ত্রে সংখ্যালঘু বডুয়া সম্প্রদায়ের মামলা চলমান জায়গা দখলের চেষ্টা। বডুয়া সম্প্রদায়ের জায়গা কৌশলে দখলে নিতে সৃষ্টি করেন একাধিক ভূঁয়া কাগজপত্র এমন-ই জানান, মামলার বাদী গজেন্দ্র বডুয়া। তিনি আরো জানান, মামলা শুরু করার সময় শুধুমাত্র তারা ওকালত নামায় স্বাক্ষর করেছিলেন। এভাবে মামলা চলতে চলতে প্রায় সাত বছর পর মামলার ফাইলে তিনি দেখতে পান বায়নানামা। এ নিয়ে ফেরদৌস এর সাথে কথা বললে শুরু হয় জালিয়ত নাটকের এক একটি পর্ব। একের পর এক ভূঁয়া কাগজ সৃষ্টি করে অনেকটা বেকায়দায় ফেলেদেন মামলার বাদীদের এমন-ই অভিযোগ মামলা সংশ্লিষ্টদের। গজেন্দ্র বডুয়া জানান, মহেশখালীর প্রবেশদ্বার উত্তর নলবিলা চালিয়াতলী ষ্টেশন সংলগ্ন হওয়ায় ইতোমধ্যে বেশ কয়েকবার বিভিন্ন কৌশলে জায়গা দখলে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল ফেরদৌস আহমদ। এমন কি, তিনি ও তার ছেলে কাউছার মামলার শুনানীর কথা বলে আমাকে কক্সবাজার নিয়ে গিয়ে পরে আদালতে প্রবেশ বাঁধা সৃষ্টি করে আমার দাবীর পক্ষে কথা বলার সুযোগ দেয়নি। যার কারনে ঐ দিন তাদের নিয়োজিত আইনজীবির বকুনি খেতে হয়েছে বলে জানান গজেন্দ্র বডুয়া। মামলার বাদীদের অভিযোগ, ফেরদৌস আহমদ কৌশলে তাদের ওকালত নামার স্বাক্ষর থেকে একাধিক স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে আমমোক্তার নামা/ ক্ষমতা অর্পন নামা, ও বায়না নামা সৃষ্টি করে জায়গা ভোগ দখলের চেষ্টা করলে বেশ কয়েকবার বৈঠকের কথা বলেন তারা। কিছুদিন পূর্বেও স্থানীয় মোহাম্মদ হাসান বশির এর মধ্যস্ততায় সালিশী বেঠকের সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু জালিয়াতির মাধ্যমে সৃষ্ট কাগজপত্র গুলি জনসম্মূখে প্রমাণীত হবে এই কারণে তিনি সালিশী বেঠকে না বসে বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বিভিন্ন জনের নাম ব্যবহার করে জায়গা দখলের পাঁয়তারা চালিয়ে যাচ্ছেন। মামলার বাদীসূত্রে জানা যায়,নিরীহ বডুয়া সম্প্রদায়ের জায়গা দখলের ষড়যন্ত্রকারী ফেরদৌস আহমদের ছেলে কাউছার তার পিতার নাম ব্যবহার করে পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার এর ৬৭৯/২০১৩/২৫ নং স্বারকে ১৩ জানুয়ারী/১৪ ইং তারিখে আমাদের সাথে সরকারের মামলা চলমান জায়গাকে নিজেদের বলে দাবী করে বালি বিক্রির ছাড়পত্র নিয়েছিল। যা পরিবেশ অধিদপ্তর বিবিধ/৬৭৯/২০১৩/২৫৫ নং স্মারকে ০৩/০২/১৪ ইং তারিখে বাতিল করে দেন। এছাড়া ২০১২ সালে রাতের আধারে তাদের জায়গায় ফেরদৌস আহমদ দোকান ঘর নির্মান করেছিলেন বলেও জানান মামলার বাদী গজেন্দ্র বডুয়া। মামলা চলমান বডুয়া সম্প্রদায়ের জায়গা নিয়ে একাধিক ভূঁয়া কাগজপত্র সৃষ্ট করে দখলে নেওয়ার চেষ্টা অব্যাহত থাকায় অনেকটা চিন্তিত মহেশখালীর ঐ জায়গা নিয়ে সংশ্লিষ্ট বডুয়া সম্প্রদায়। সাম্প্রতিক সময়ে সরকারী রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে উক্ত জায়গার বালি লুটের বিষয়ে বালি লুটে জড়িতদের নিয়ে পত্রিকায় সংবাদ পরিবেশিত হয়। মামলা চলমান সংখ্যালঘুর জায়গা দখলের ষড়যন্ত্রকারী কাউছার প্রকাশিত সংবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ দেয়। উক্ত প্রতিবাদে সে দাবী করেন, উত্তর নলবিলা মৌজার বি.এস ১ নং খাস খতিয়ানের ২৩৩৪ দাগের ৭৩ শতক জমি তার পিতা ফেরদৌস আহমদ বিগত ০৭.০৮.২০০৬ ইং তারিখের রেজিযুক্ত ৮০১ (৮) নং বায়নামা মূলে সত্ব লাভ করেন। মামলার বাদী গজেন্দ্র বডুয়া বলেন, বুদ্ধে মাথা ছোঁয়ে বলতে পারবেন তারা শুধুমাত্র ওকালত নামায় স্বাক্ষর করেছিলেন। আর অন্য কোন ধরনের চুক্তিপত্র তারা কারো সাথে করেননি। তাদের সন্দেহ এভাবে নানা টালবাহনা করে ফেরদৌস আহমদ বডুয়া বডুয়া সম্প্রদায়ের জায়গা দখলে নিতে পারেন। তাই ঐ জায়গা নিয়ে প্রতি মুহুর্তে আতংকে দিন কাটছে মহেশখালীর উত্তর নলবিলা এলাকার মৃত রমেশ চন্দ্র বডুয়া গংদের পরিবারে। মামলা চলমান ১ নং খাস খতিয়ানের জায়গা নিয়ে রেজিযুক্ত বায়নামা বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা জজ আদালতের এডভোকেট জি এ এম শহীদুল্লা মামুন বলেন,মামলা চলমান জায়গা নিয়ে রেজিযুক্ত বায়নামার কখনো আইনি ভিত্তি থাকতে পারেনা। মামলা নিস্পত্তি হওয়ার পর আদালতে আদেশের উপর ভিত্তি করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে বলে তিনি জানান। এধরনের ভিত্তিহীন বায়না নামা নিয়ে কেউ মামলা চলমান জায়গা দখলে নিলে তিনি জবর দখলবাজ’এ পরিগনিত হবেন।
ভুয়া বায়নামায় সংখ্যালঘুর জায়গা দখলের অভিযোগ
শেয়ার করুন