ভুল থেকে শিক্ষা নিতে বললেন মাশরাফি

2_290725দু’ম্যাচে দুটি হার। ৫২ ও ৩১ রানে। ক্রিকেটের ক্ষুদে ফরম্যাটে টাইগারদের সামর্থ্য সীমিত। দক্ষিণ আফ্রিকা আবারও তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। প্রোটিয়ারা দু’মাচের সিরিজ জিতে নিল ২-০তে। স্বাগতিকরা কী শিক্ষা পেল? মাশরাফি মুর্তজা পরপর দুটি হারেও বেশ কিছু ইতিবাচক দিক আবিষ্কার করেছেন। তার কথায়, ‘কিছু ইতিবাচক দিক তো আছেই। তবে নিজেদের ভুল থেকে আমাদের শিক্ষাও নিতে হবে। আশা করি, আমরা ওয়ানডে সিরিজে ভালো করব। আজও (মঙ্গলবার) আমরা অনেক বেশি উইকেট হারিয়েছি। এটাও ঠিক যে, সাম্প্রতিককালে আমরা খুব বেশি টি ২০ ম্যাচ খেলিনি।’ মাশরাফি সেই সঙ্গে যোগ করেন, ‘তবে এটা কোনো অজুহাত নয়। আমাদের উন্নতি করতে হবে। আমরা শুধু ওডিআই ও টেস্টে মনোসংযোগ করছি। একটি পেশাদার দল হিসেবে আমাদের পারফর্ম করতে হবে। প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলতে হবে। আমরা এই সিরিজে যা পারিনি। আশা করি, এই ধারা বদলাবে।’

দক্ষিণ আফ্রিকা টি ২০ অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসি অবশ্য স্বীকার করেছেন, বাংলাদেশ এই ম্যাচে লড়াই করেছে। ‘প্রথম ম্যাচের তুলনায় দ্বিতীয়টিতে ওরা যথেষ্ট প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তোলে। আমাদের ছেলেরা দুই ম্যাচের সিরিজে দারুণ খেলেছে। প্রতিকূল কন্ডিশনেও আমরা ভালো ব্যাটিং ও বোলিং করেছি’, বলেছেন সিরিজসেরা ফাফ ডু প্লেসি। তার কথায়, ‘আমাদের ছেলেরা গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ভুল করেনি। আমরা কঠোর অনুশীলন করেছি। এখানে গরম খুবই বেশি। এবি’র (ডি ভিলিয়ার্স) মুখটা গরমে ফেটে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল।’ ডু প্লেসির সংযোজন, ‘এখন আমাদের আরও দীর্ঘ সময় লড়াই করতে হবে। ওয়ানডে ও টেস্ট সিরিজে। বাংলাদেশ এর আগে ওয়ানডে সিরিজে খুবই ভালো করেছে। আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল নিজেদের সামর্থ্যরে প্রকাশ ঘটানো। ২-০তে টি ২০ সিরিজ জিতে আমরা তা করেছি। বাংলাদেশকে আমরা শ্রদ্ধা করি। নিজেদের সেরা ক্রিকেট খেলব আমরা।’
এদিকে কাল মিরপুরে টি ২০তে অভিষেক হল ২৮ বছর বয়সী প্রোটিয়া লেগ-স্পিনার এডি লি’র। অভিষেকে তিন উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হলেন এই কৃষ্ণাঙ্গ ক্রিকেটার। লি বলেন, ‘আমি খুবই খুশি। দারুণ শুরু হল। তবে জয়ের জন্য কৃতিত্ব দিতে হবে আমাদের ব্যাটসম্যানদের। এবি ও কুইন্টন যেভাবে শুরু এবং রিলে ও মিলার শেষ করে, তাতে বোলারদের কাজটা সহজ হয়ে যায়।’ তার সংযোজন, ‘আমি শুধু লাইন-লেন্থ ঠিক রেখে বল করে গেছি। আর্দ্রতার কারণে বল ঠিকমতো গ্রিপে রাখা যাচ্ছিল না। উইকেট টু উইকেট বল করার চেষ্টা করেছি। আমাদের সাজঘরের পরিবেশটা দারুণ। এতসব গ্রেট খেলোয়াড়ের সঙ্গে থাকাটাই আনন্দের।’ এডি লি পচেফস্ট্রুমে খেলা শুরু করেছিলেন মিডিয়াম পেসার হিসেবে। জোহানেসবার্গে এসে তিনি লেগ-স্পিন বোলিংয়ে দক্ষতা অর্জন করেন।
স্কোর কার্ড
দক্ষিণ আফ্রিকা
রান বল ৪ ৬
ডি কক ক সাব্বির ব সানি ৪৪ ৩১ ৪ ২
ডি ভিলিয়ার্স ক মুশফিক ব নাসির ৪০ ৩৪ ৬ ০
ডুমিনি ক সাকিব ব নাসির ৬ ৪ ১ ০
ডু প্লেসি ক মুশফিক ব মুস্তাফিজুর ১৬ ১৭ ১ ০
মিলার নটআউট ৩০ ২৮ ২ ১
রুশো নটআউট ১৯ ৬ ১ ২
অতিরিক্ত ১৪
মোট (৪ উইকেটে, ২০ ওভারে) ১৬৯
উইকেট পতন : ১/৯৫, ২/১০২, ৩/১০২, ৪/১৩৬।
বোলিং : আরাফাত সানি ৪-০-৩১-১, নাসির ৪-০-২৬-২, মুস্তাফিজুর ৪-০-৩৪-১, সাকিব ৪-০-৩৭-০, মাশরাফি ৩-০-২৫-০, সৌম্য ১-০-১১-০।
বাংলাদেশ
রান বল ৪ ৬
তামিম ক ওয়াইজ ব পার্নেল ১৩ ১৮ ১ ০
সৌম্য স্টা. ডি কক ব লি ৩৭ ২১ ৬ ১
সাকিব ক রুশো ব ফাঙ্গিসো ৮ ১৪ ০ ০
মুশফিক ক রুশো ব লি ১৯ ১৬ ১ ১
সাব্বির ক মিলার ব লি ১ ৩ ০ ০
নাসির ক রুশো ব ফাঙ্গিসো ০ ২ ০ ০
রনি ব অ্যাবট ২১ ২২ ০ ১
লিটন ক ওয়াইজ ব ফাঙ্গিসো ১০ ৭ ১ ০
মাশরাফি ব অ্যাবট ১৭ ৮ ০ ২
আরাফাত সানি নটআউট ৫ ৫ ০ ০
মুস্তাফিজুর ব অ্যাবট ০ ১ ০ ০
অতিরিক্ত ৭
মোট (অলআউট, ১৯.২ ওভারে) ১৩৮
উইকেট পতন : ১/৪৬, ২/৫৫, ৩/৬৯, ৪/৮২, ৫/৮২, ৬/৮২, ৭/১০৩, ৮/১২৫, ৯/১৩৭, ১০/১৩৮।
বোলিং : অ্যাবট ৩.২-০-২০-৩, ডুমিনি ৪-০-২৬-০, পার্নেল ৩-০-২৯-১, ওয়াইজ ২-০-১৭-০, লি ৩-০-১৬-৩, ফাঙ্গিসো ৪-০-৩০-৩।
ফল : দক্ষিণ আফ্রিকা ৩১ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : এডি লি (দক্ষিণ আফ্রিকা)।
ম্যান অব দ্য সিরিজ : ডু প্লেসি (দক্ষিণ আফ্রিকা)।


শেয়ার করুন