ভারতবিরোধিতায় দেশের ক্ষতি হচ্ছেঃ তথ্যমন্ত্রী

সিটিএন ডেস্কঃ 

১৯৭৫ সালে দেশ যখন উল্টো পথে হাঁটা শুরু করল, তখন ভারতের বিরুদ্ধে কথা বলে ভোট নেওয়ার চেষ্টা চালানো হয়েছে। সেই কারণে আমাদের ক্ষতি হয়েছে, এই অঞ্চলের ক্ষতি হয়েছে।’

১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর রাজনীতিতে ভারতবিরোধী যেসব বক্তব্য দেয়া হচ্ছে, তাতে দেশের পাশাপাশি এই অঞ্চলের ক্ষতি হয়েছে বলে মনে করেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

বাংলাদেশের তিন পাশে ভারতের অবস্থান উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সে দেশের সঙ্গে বিরোধিতা করে আমাদের দেশের উন্নয়ন সম্ভব না। তারা (বিএনপি) এটি বোঝে না, কিংবা রাজনীতির স্বার্থে তারা এই অপরাজনীতি করে।’

মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ইন্ডিয়ান মিডিয়া করেসপন্ডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ আয়োজিত এক আলোচনায় বক্তব্য রাখছিলেন মন্ত্রী। আলোচনার বিষয় ছিল, ‘বঙ্গবন্ধু: বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক’।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘১৯৭৫ সালের পর দেশ যখন উল্টো পথে হাঁটা শুরু করল, তখন ভারতের বিরুদ্ধে কথা বলে ভোট নেয়ার চেষ্টা চালানো হয়েছে। সেই কারণে আমাদের ক্ষতি হয়েছে, এই অঞ্চলের ক্ষতি হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘দেশে বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল আছে যাদের মূল বিষয় হচ্ছে ভারতবিরোধিতা। যখন নির্বাচন আসে তখন ভারতবিরোধিতাকে সামনে নিয়ে আসে। অথচ ভারত আমাদের দেশের তিন দিকে পরিবেষ্টিত। যে দেশ আমাদের সংগ্রামের সময় রক্ত ঝরিয়েছে, যাদের সহযোগিতা ছাড়া আমাদের ৯ মাসের মধ্যে মুক্তির সংগ্রাম লাভ করা সম্ভব ছিল না। সে সময় আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তাদের যে কূটনৈতিক তৎপরতা, এটি ছাড়া বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করা সম্ভব ছিল না।’

দুই দেশের মধ্যে সংযোগ বাড়ানোর কথা জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর অন্যান্য দেশ নিজেদের মধ্যে কানেকটিভিটি বাড়াচ্ছে, আন্তঃসংযোগ বাড়াচ্ছে।

‘একটা সময় ইউরোপের এক দেশ থেকে আরেক দেশে যেতে ভিসা লাগত, বর্তমানে সেটি আর লাগে না। প্রথম ইউরোপীয় ইউনিয়ন ১৫ সদস্যবিশিষ্ট ছিল। এখন সেটি ২৬ সদস্যবিশিষ্ট। তারা দেখেছে তাদের মধ্যে আন্তঃসংযোগ বৃদ্ধি করে, রাজনৈতিক সীমারেখা দিয়ে জনগণকে আবদ্ধ রেখে এবং তাদের ব্যবসাবাণিজ্যে দূরত্ব রেখে লাভ হয় না। তারা আন্তঃসংযোগ বাড়ানোর ফলে তাদের জিডিপি গ্রোথ বেড়েছে এবং কর্মসংস্থান বেড়েছে।’

শিক্ষা, পরিবহনে সহযোগিতায় আগ্রহী ভারত

বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী বলেন, ‘১৯৭১ সালে চেতনায় আমাদের দুটি দেশকে এগিয়ে যেতে হবে। যে শিক্ষা আমরা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব থেকে পেয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা পারস্পরিক সহযোগিতাকে আরও এগিয়ে নিতে পারি। সমৃদ্ধি, নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে। কারণ, দুই দেশের মানুষের সমৃদ্ধি একই সঙ্গে সম্পর্কিত।’

ভারতীয় দূত বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন দক্ষিণ এশিয়ায় আমাদের বড় ব্যবসায়িক পার্টনার। আমাদের এই ব্যবসায়িক সম্পর্কে আরও বিনিয়োগ করা প্রয়োজন। যা আমাদের সম্পর্ককে অনেক দূর নিয়ে যাবে।

‘শিক্ষা, ব্যবসাসহ সব ক্ষেত্রে আমরা একসঙ্গে কাজ করতে চাই। আমরা কাজ করতে চাই সংস্কৃতি, চলচ্চিত্র, গণমাধ্যম, পর্যটন ও যানবাহন সেক্টরে।’

ভারতীয় দূত বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়লে সমৃদ্ধি বাড়বে। আমাদের দুই দেশকে অনেক দূর এগিয়ে যেতে হবে এবং এজন্য মিডিয়া একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।’

প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবাহান চৌধুরী, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ, সাংবাদিক নেতা মনজুরুল আহসান বুলবুলও এ সময় বক্তব্য রাখেন।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের মহাসচিব ও লেখক হারুন হাবিব। সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠনের সভাপতি বাসুদেব ধর।


শেয়ার করুন