ব্রণ: চিকিৎসা ও প্রতিকার

3-400x336-350x294সিটিএন ডেস্ক:

ব্রণ একটি অতি পরিচিত একটি চর্মরোগ যা অধিকাংশ মানুষের জীবনে কোন না কোন সময়ে ত্বকে কম বেশি হয়ে হয়ে থাকে। ব্রণ বা পিম্পলস বা একিন ভালগারিজ দীর্ঘ মেয়াদী দাগ ও উৎপাদনকারী ত্বকের সমস্যা যা হালকা থেকে গাঢ় হয়ে থাকে। এবং মুখমন্ডলসহ পিঠ, কাঁধ ও বুকের ত্বকেও দেখা দিতে পারে। ব্রণ সাধারণত: ১১ বছরের পর এবং ৩০ বছরের আগে বেশি দেখা যায়। তবে ৩০ বছরের পরও মাঝে মাঝে ত্বকে ব্রণ হয় কিন্তু তাদের সংখ্যা খুবই কম। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৮ জনেরই ব্রণের সমস্যা ১১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যেই শুরু হয়েছে। এখন আসা যাক ব্রণ আমাদের ত্বকে কিভাবে তৈরি হয়।
সেরাম নামক একটি প্রাকৃতিক তেল আমাদের ত্বকের গ্রন্থি থেকে তৈরি হয় যা আমাদের ত্বককে শুষ্ক হওয়া থেকে রক্ষা করে। আমাদের লোমকূপে যখন এই সেরাম এবং ত্বকের মৃতকোষ জমা হয় তখন লোমকূপ বন্ধ হয়ে যায় যা দেখতে কালো রঙের হয়। একে ব্ল্যাকহেডস বলে। এই ব্ল্যাকহেডস এক সময় ফুলে যায় এবং সাদা গুটির মত তৈরি করে। অনেক সময় প্রোপিওনো ব্যাকটেরিয়ায় একিনস নামক ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণেও ব্রণ ফুলে প্রদাহজনক ক্ষত ও দাগ সৃষ্টি হয়।
নানাবিধ কারণে ব্রণ হতে পারে যেমন-অতিরিক্ত তৈলাক্ত ত্বক, বংশগত বা হেরডিটারি ফ্যাক্টর, অতিরিক্ত অন্ড্রোজেন হরমোন, অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ, ঘুম কম হওয়া, জন্ম নিয়ন্ত্রণ বডি সেবন, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ইত্যাদি। এছাড়াও কিছু শারীরিক সমস্যা যেমন-কুশিং সিনড্রম, হাইপোথাইরয়েডিসম, পলিসিসটিক ওভারিয়ান সিন্ড্রম ইত্যাদি কারণে ত্বকে ব্রণ দেখা দিতে পারে। আবার অনেক সময় গর্ভাবস্থায় মহিলাদের হালকা ব্রণ দেখা যায়। কিন্তু এসময় ব্রণের চিকিৎসার জন্য কোন ওষুধ সেবন বা ব্যবহার করা উচিত নয়। প্রসবের পর অধিকাংশ ক্ষেত্রে ব্রণ নিজ থেকে সেরে যায়।
তবে ব্রণ ভাল হয়ে যাওয়ার পর ব্রণের দাগ বা গর্ত বা যে ক্ষতি তৈরি হয় তা সৌন্দর্য্যকে ব্যাহত করে। যা নিয়ে অনেকে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন। কিন্তু এই মানসিক চিন্তা ব্রণের সমস্যাকে আরো জটিল করে তুলে। তাই যখন ব্রণ হবে তা নিয়ে চিন্তা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। আজকাল ব্রণের অনেক ধরণের ভাল চিকিৎসা রয়েছে। পাশাপাশি লেজার চিকিৎসার মাধ্যমে ব্রণের দাগ বা ক্ষত অনেক অংশই নিরাময় করা সম্ভব। যাদের অতিরিক্ত তৈলাক্ত ত্বক তাদের ব্রণ হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে। তাই ওয়েল কন্ট্রল সাবান বা ফেস ওয়াশ দিয়ে সব সময় মুখ পরিষ্কার করতে হবে। চিকিৎসার পাশাপাশি পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান, নিয়মিত ঘুম, স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ, ধূমপান ত্যাগ করা, ভাল মানের প্রসাধনী ব্যবহার করা, নিয়মিত জীবন যাপনের মাধ্যমে ব্রণের সমস্যা থেকে ত্বককে সুস্থ রাখা সম্ভব।

সূত্র : ইত্তেফাক


শেয়ার করুন