বিশ্বের যেসব নদী ধীরে ধীরে শুকিয়ে যাচ্ছে

ডেস্ক নিউজঃ
নদী সব দেশেরই প্রাণ। বিশ্বের বড় বড় সভ্যতা গড়ে উঠেছে নদীর তীরে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বের অনেক দেশের নদী শুকিয়ে যাচ্ছে। জানা গেছে, বিশ্বের আকর্ষণীয় ও বিখ্যাত কয়েকটি নদী শুকিয়ে যাচ্ছে। জেনে নিন সেসব নদী সম্পর্কে।

কলোরাডো নদী: যুক্তরাষ্ট্রে সাম্প্রতিক সময়ে তীব্র দাবদাহ দেখা যাচ্ছে। দেখা দিয়েছে খরার মতো পরিবেশ। আর সেই খরা-পরিস্থিতিতে কলোরাডো নদী আশঙ্কাজনকভাবে শুকিয়ে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাতটি অঙ্গরাজ্য ও মেক্সিকোর প্রায় চার কোটি মানুষ পানীয়, কৃষি ও বিদ্যুতের জন্য এ নদীর পানির উপর নির্ভরশীল। সম্প্রতি নদী অববাহিকাকে রক্ষা করতে সরকার বাধ্যতামূলকভাবে পানির ব্যবহার কমানোর কথা বলেছে। ছবি: সংগৃহীত

ইয়াংসি নদী: এশিয়ার অন্যতম নদী চীনের ইয়াংসি নদী। এটি খুব দ্রæত শুকিয়ে যাচ্ছে। ইয়াংসির উপনদীগুলো ইতিমধ্যেই শুকিয়ে গিয়েছে। সম্প্রতি চীন দেশব্যাপী খরা-সতর্কতা ঘোষণা করেছে। সেখানে এখন যে তাপপ্রবাহ চলছে তা ছয় দশকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। সেটাও এই নদী শুকিয়ে যাওয়ার একটা বড় কারণ। ইয়াংসি নদী শুকিয়ে যাওয়ায় এর আশপাশের অঞ্চলে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে।
রাইন নদী: রাইন জার্মানি ও নেদারল্যান্ডসের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে উত্তর সাগরে পড়েছে। জার্মানির এই নদী ইউরোপীয় অঞ্চলে পণ্য পরিবহণের এক গুরুত্বপূর্ণ চ্যানেল। কিন্তু বর্তমানে এ পথে জাহাজ চালানো দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। রাইন নদীর তলদেশ দেখা যাচ্ছে। ফলে পণ্য পরিবহণের প্রক্রিয়া অতি ধীর এখন। জার্মানির পশ্চিমে ফ্রাঙ্কফুর্টের কাউব। এখানে রাইনের পানির স্তর ৩২ সেন্টিমিটার নেমেছে। শিপিং কোম্পানিগুলো সাধারণত রাইন নদীর কোনো জায়গায় ৪০ সেন্টিমিটারের কম পানিকেই চিন্তার কারণ বলে মনে করে। ছবি: সংগৃহীত

পো নদী: পো নদীটির উৎপত্তিস্থল ইতালি। যা অ্যাড্রিয়াটিক সাগরে গিয়ে পড়েছে। লক্ষাধিক মানুষ জীবিকার জন্য পো নদীর উপর নির্ভরশীল। এই নদীর উপর কৃষিকাজ অনেকটাই নির্ভর করে। ইতালির বসন্ত ও গ্রীষ্মও শুষ্ক ছিল। এ নদীর সংশ্লিষ্ট অঞ্চল গত সাত দশকের মধ্যে সবচেয়ে বিপজ্জনক খরায় আক্রান্ত হয়েছে। আর তার জেরে পো নদী এতটাই শুকিয়ে গিয়েছে যে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ের একটি বোমা সম্প্রতি পো নদীর তলদেশ থেকে পাওয়া গিয়েছে।
লয়ার নদী: নদীটি প্রায় ৬০০ মাইল জুড়ে বি¯ৃÍত। নদীটি তার সমগ্র উপত্যকায় জীববৈচিত্র ও বাস্তুতন্ত্রকে টিকিয়ে রেখেছে। নদীর কিছু অংশ ইতিমধ্যেই অগভীর। তবে আবহাওয়ার পরিবর্তনের জেরে এবং এর উৎসের বরফ গলে যাওয়ায় এর পানিস্তরে ও প্রবাহে দ্রুত পরিবর্তন ঘটছে। কিছু অংশ বৃষ্টির অভাবে গরমে এতই শুকিয়ে গিয়েছে যে, মানুষ হেঁটে নদী পার হতে পারে।
দানিয়ুব: দানিয়ুব পশ্চিম ইউরোপের দীর্ঘতম নদী। একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ শিপিং চ্যানেল। যা ১০টি দেশের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। রোমানিয়া, সার্বিয়া ও বুলগেরিয়ায় শ্রমিকেরা নদীটি ড্রেজিং করছেন, যাতে পণ্যবাহী জাহাজ এখনও এতে স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারে। ইউরোপের অন্যান্য নদীর তুলনায় এ নদীর অবস্থা খানিকটা ভালো। নদীর পানি কমে যাওয়ায় পর্যটকবাহী কিছু জাহাজ হাঙ্গেরিতে পৌঁছতে পারছে না। ছবি: সংগৃহীত


শেয়ার করুন