বিরল প্রজাতির এই তক্ষকের দাম ১০ কোটি টাকা!

১৪ ইঞ্চি লম্বা একটি তক্ষকের দাম ১০ কোটি৬৭ লাখ টাকার বেশি! হ্যাঁ, শুনতে আশ্চর্য লাগলেও বাস্তবে এমন এক বিরল তক্ষকের সন্ধান মিলেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুর্শিদাবাদ-মালদহ সীমান্তবর্তী ফারাক্কা থানা এলাকা থেকে। আজব এই তক্ষকে গুণাগুণ একেবারে চমকে দেয়ার মতো। এইডস, ক্যানসারসহ বলবর্ধক ওষুধ তৈরি হয় ওই বিরল প্রজাতির তক্ষকের দেহাংশ থেকেই তৈরি হয়। আর তা শুনে পুরোপুরি চমকে গিয়েছেন জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার অফিসাররা। দিনভর ফারাক্কার নানা জায়গায় ওঁত পেতে শুক্রবার বিকেলে ধোসাঘাট এলাকা থেকে ওই বিরল প্রজাতির তক্ষকসহ এক জনকে পুলিশ পাকড়াও করে। গোটা ঘটনাটি জানাজানি হওয়ায় পর পুলিশ মহলে একেবারে হুলস্থূল পড়ে গিয়েছে। কলকাতাভিত্তিক একটি পত্রিকা এ খবর প্রকাশ করেছে।

শুক্রবার বিকেলে জালনোটের তল্লাশিতে গিয়েছিল ফারাক্কা থানার পুলিশ। সেই সময় ধোসাঘাট থেকে ওই বিরল প্রজাতির তক্ষক উদ্ধার হয়। ওই ঘটনায় মালদহের এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতের নাম মোহাম্মদ ইসমাইল শেখ (২৩)। তাকে জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে, মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশ হয়ে সেটি এখানে আনা হয়েছিল। বিহার দিয়ে সেটি চীনে পাচার করার ছক ছিল। ধৃত যুবকের দাবি, ওই তক্ষক থেকে এইচআইভি ও ক্যানসারের মতো মারণ রোগের সঙ্গে বলবর্ধক ওষুধও প্রস্তুত করা হয়। পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলেন, ধৃতের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। ঘটনাটি গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

গোপন সূত্রে খবর পেয়ে এদিন সকাল থেকে জালনোট পাচার চক্রের খোঁজে তল্লাশি অভিযানে নামে ফারাক্কা থানার পুলিশ। বাংলাদেশ থেকে আনা জালনোট ফারাক্কা থানা এলাকায় হস্তান্তর হবে বলে খবর ছিল। সেই মতো সকাল থেকে ফারাক্কা ব্যারেজ, টাউনশিপ মোড়, বাসস্ট্যান্ড, রেল স্টেশন চত্বর, ক্যানেলের পাড় প্রভৃতি এলাকায় নজরদারি শুরু করা হয়। অবশেষে বিকেল ৪টা নাগাদ ক্যানেলের ধোসাঘাট এলাকায় হানা দিয়ে বিরল প্রজাতির তক্ষকসহ ইসমাইলকে গ্রেফতার করা হয়। মালদহ জেলার কালিয়াচক থানার পশ্চিম খাসচাঁদপুরে ধৃতের বাড়ি। টিকটিকিটি প্রায় ১৪ ইঞ্চি লম্বা ও ওজন ১৭০গ্রাম।

ফারাক্কা থানার এক অফিসার বলেন, ধৃত যুবক কালিয়াচক থেকে বাসে এখানে এসেছিল। প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগে ওই তক্ষক নিয়ে যাচ্ছিল। বিহারের দু’জনকে তা হস্তান্তর করা হতো। ধোসাঘাটে হানা দিতেই তারা পালিয়ে যায়। থানার আইসি বলেন, বিহারের ওই কারবারিদের কাছে বিরল প্রজাতির তক্ষক ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৯ কোটি রুপিতে বিক্রি করা হতো বলে ধৃত জানিয়েছে। ওই তথ্য যাচাই করা হচ্ছে। বিষয়টি বন দপ্তরকে জানানো হয়েছে। ওই টিকটিকি বন দপ্তরের হাতে তুলে দেয়া হবে। পাশাপাশি ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যাওয়া বিহারের কারবারিদের খোঁজ চলছে।

এদিকে ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদের পর ফরাক্কা থানার এক অফিসার বলেন, মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশ হয়ে ওই তক্ষকটি কালিয়াচকে আসে। এখান থেকে বিহার হয়ে সেটি চীনে পাচার হতো। ওই সরীসৃপের দেহের বিভিন্ন অংশ দিয়ে সেখানে কিনা এইডস, ক্যানসারের সঙ্গে বলবর্ধক ওষুধও প্রস্তুত হয়। ধৃতের বিরুদ্ধে বন্যপ্রাণী পাচার আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে। এর সঙ্গে বন্যপ্রাণী পাচার চক্রের যোগ রয়েছে কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।


শেয়ার করুন