বিবিসির কাছে মুখ খুললেন জাবির দণ্ডিত শিক্ষক

116612_1আরটিএনএন:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ফেসবুকে কটূক্তি করার দায়ে তিন বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক রুহুল আমিন খন্দকার বলেছেন, আবেগের বশে তিনি ওই মন্তব্য করেছিলেন।

তিনি বলেন, কারো সমালোচনা করা যদি রাষ্ট্রদোহিতা হয় সেটা কোনো সভ্য জগতের রীতি হতে পারে না।

মামলার রায় ঘোষণার পর লন্ডন থেকে টেলিফোনে বিবিসি বাংলা-কে এই শিক্ষক তার প্রতিক্রিয়া জানান।
?

২০১১ সালে বাংলাদেশে এক সড়ক দুর্ঘটনায় সাংবাদিক মিশুক মুনীর এবং চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ নিহত হওয়ার পর ফেসবুকে রুহুল আমিন খন্দকার প্রধানমন্ত্রীকে লক্ষ্য করে মন্তব্য করেন।

বাংলাদেশে পরীক্ষা ছাড়া ড্রাইভিং লাইসেন্স দেয়ার ফলে বহু মানুষের মৃত্যু ঘটছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। তার মন্তব্যে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মৃত্যু কামনা করেন বলে অভিযোগ করা হয়।

এই ঘটনায় রুহুল আমিন খন্দকারের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলা করা হয়। সে সময় তিনি উচ্চশিক্ষার্থে অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করছিলেন। মামলার শুনানির সময় তিনি আদালতে হাজির হননি। তার অনুপস্থিতিতেই মামলার বিচার কাজ শেষ হয়।

রুহুল আমিন খন্দকার বলেন, তিনি বিদেশে অবস্থান করে তার আইনজীবীর মাধ্যমে লড়তে চেয়েছিলেন কিন্তু সেই সুযোগ তিনি পাননি।

দেশে ফিরে মামলা না লড়ার কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘ওই মুহূর্তে আমার দেশে ফেরাটা অনিরাপদ মনে হয়েছিল। কারণ আমরা দেখেছি যারাই বাংলাদেশের সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করে তাদের নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হয়।’

‘আমি কি রাষ্ট্রের কল্যাণের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত? এটা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। সমালোচনা করা যদি রাষ্ট্রদ্রোহিতা হয় তাহলে সেটা কোনো সভ্য জগতের নীতি হতে পারে না বলে আমি মনে করি’ যোগ করেন এই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক।

কিন্তু কেন তিনি ফেইসবুকে এ ধরনের একটি মন্তব্য করেছিলেন সেই প্রশ্নের ব্যাখ্যা তুলে ধরার চেষ্টা করলেন রুহুল আমিন খন্দকার।

তিনি বলেন, ‘ওই সময় নৌ পরিবহনমন্ত্রী প্রায় ২৭ হাজারের মতো লাইসেন্স দেন কোনো পরীক্ষা ছাড়া। বিষয়টা আমাকে মর্মাহত করে। তারপর মিশুক মুনীর, তারেক মাসুদের সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু। সরকারি কিছু সিদ্ধান্তের ফলে কত অমূল্য প্রাণ ঝরে যাচ্ছে। আবেগের বশবর্তী হয়ে ওই স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম।’

জাবির এই শিক্ষক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বা আর কারও ক্ষেত্রে মৃত্যুর কথা বলা ঠিক নয়। কিন্তু বাংলাদেশের কালচারে একটা বিষয় আছে-মা সন্তানের ওপর রাগ করে বলে যা তুই মর গিয়া, তুই জাহান্নামে যা। এসব কথাবার্তা প্রচলিত। ওই সংস্কৃতির মনোভাব দেখেই আমি স্ট্যাটাসটা দিয়েছিলাম। সবাই মরে শেখ হাসিনা মরেনা কেন এটা বলার মানে এই না যে তার মৃত্যু কামনা করছি বা এই কারণে তিনি মারা যাবেন।’

তিনি আরো জানান, এখন যেহেতু সাজা হয়েছে, সেই প্রেক্ষাপটে তিনি আপাতত দেশে না ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

সূত্র: বিবিসি বাংলা।


শেয়ার করুন