বিদ্যুৎ পাওয়ার খবরে গর্জনিয়াবাসী উচ্ছসিত

pic-hন্িহাফিজুল ইসলাম চৌধুরী, নাইক্ষ্যংছড়ি :

স্বাধীনতার দীর্ঘ ৪৩ বছর পর হলেও অবশেষে রামু উপজেলার পাহাড়ী অঞ্চল বেষ্টিত গর্জনিয়া ইউনিয়নের মানুষ পল্লী বিদ্যুৎ সংযোগ পেতে যাচ্ছে। প্রথম ধাপে ইউনিয়নের বড়বিল, উত্তর বড়বিল, থোয়াংগেরকাটা, থিমছড়ি ও হরিণ পাড়ার মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা ভোগ করবে। পর্যায়ক্রমে ইউনিয়নের সমস্ত গ্রামে বিদ্যুতায়ন হবে। ২৪ দশমিক ৮৮ বর্গমাইলের এ জনপদের ৩৫ হাজার মানুষ বিদ্যুৎ পাওয়ার খবরে দারুণ উচ্ছসিত হয়েছে। অযতœ আর অবহেলায় পিছিয়ে থাকা গর্জনিয়া ইউনিয়ন এখন এগিয়ে যাবে সামনের দিকে।
এ উপলক্ষে শুক্রবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকালে ইউনিয়নের থিমছড়ি বাজার প্রাঙ্গনে বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপনের ফলক উন্মোচন ও খুঁটি নির্মাণের উদ্ধোধন পরবর্তী আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কক্সবাজার ৩ (সদর-রামু) আসনের সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রিয় আওয়ামী লীগের প্রচার কমিটির সদস্য আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমল বলেছেন, স্বাধীনতার ৪৩ বছর ধরে এ আসন থেকে বিএনপি-জামায়াত সমর্থন নিয়ে অনেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিল। কিন্তু তারা আপনাদেরকে বিদ্যুৎ দিতে পারেনি। তবে বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকারই বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে গর্জনিয়ার উন্নয়নকে অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে যাবে।
এমপি কমল বলেন, আওয়ামীলীগ সরকার উন্নয়নবান্ধব সরকার, এ সরকারের আমলে দেশের যে উন্নয়ন সাধন হয়েছে তা বিগত ৪৩ বছরেও হয়নি। সরকার দেশের তৃনমূল পর্যায়ে অবহেলিত এলাকা চিহ্নিত করে উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালিত করে যাচ্ছে। শেখ হাসিনা সরকার উন্নয়নের মাধ্যমে দেশকে যখন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে ঠিক সেই মুহুর্তে বিএনপি-জামায়াত দেশের এ উন্নয়নকে বাধাগ্রস্থ্য করতে নানা ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। তাই এসব ষড়যন্ত্রে ধাবিত না হয়ে রামু-কক্সবাজারের উন্নয়নের লক্ষ্যে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তার বক্তব্যে গর্জনিয়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান তৈয়ব উল্লাহ চৌধুরী বলেন, এ বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণ কাজ সফল ভাবে সম্পন্ন হওয়ার পাশাপাশি পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগ একটু সু-দৃষ্টি দিলে গর্জনিয়ার মানুষ আর কষ্ট পাবে না। যে সমস্ত এলাকায় এখন ধান চাষ করা সম্ভব হচ্ছে না সেখানে বিদ্যুৎ এর কল্যানে পাওয়ারটিলার এর মাধ্যমে চাষ করা যাবে। বাইশারী ইউনিয়নের মত গর্জনিয়ায়ও রাবার শিল্প স্থান করে নিতে পারবে বিদ্যুৎ এর কল্যানে। কয়েক বছর পর হয়ত আর গর্জনিয়া ইউনিয়নে বেকার যুবক থাকবেনা। কারন এ সময়ের মধ্যে ইউনিয়নে ছোট বড় অসংখ্য কুঠির ও শিল্প কারকানা স্থাপন করবে ধনী ও ব্যবসায়ী ব্যক্তিরা। কক্সবাজার জেলায় গর্জনিয়া ইউনিয়ন একটি সম্ভাব্য সম্পদে পরিনত হবে সেসময়।
ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগনেতা সৈয়দ নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রিয়াজ উল আলম, কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগ নেতা জাফর আলম চৌধুরী, আবুল হোসেন কোম্পানী, জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের যুগ্ন সম্পাদক নুর আলম হেলাল, কাউয়ারখোপ সাবেক চেয়ারম্যান শামশুল আলম, কচ্ছপিয়া চেয়ারম্যান নরুল আমিন কোম্পানী, কক্সবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জিএম নুরুল হোছাইন, গর্জনিয়া আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক আইয়ুব সিকদার, রামু সৈনিকলীগের সভাপতি ইউনুছ খান, রামু যুবলীগের সাধারন সম্পাদক নীতিশ বড়–য়া।
আওয়ামী লীগনেতা ইয়াহিয়া চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা মাষ্টার ফরিদ আহমদ, হাবিবুল্লাহ চৌধুরী, নুরুল হক, ডা: ফিরোজ সিকদার, জেলা মৎসজীবীলীগের সহ-সভাপতি আনছারুল হক ভুট্টো, সাংসদের সহকারী আবুবক্কর সিদ্দিক, যুবলীগ নেতা ডা.আবছার কামাল, নজরুল ইসলাম, নাছির উদ্দিন সোহেল, রামু ছাত্রলীগ নেতা রাশেদ আলী, সাহাব উদ্দিন, সাদ্দাম হোছাইন, হোছাইন মাহমুদ রিফাত, মাসেকুর রহমান, মোঃ ইকবাল, হেলাল উদ্দিন সিকদার, মিজানুর রহমান, শাহরান চৌধুরী মারুফ, হাফিজুল ইসলাম চৌধুরী প্রমূখ। উল্লেখ্য স্বাধীনতার পর থেকে গর্জনিয়ায় বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপন ছিল এলাকার মানুষের গণদাবী। অবশেষে সাইমুম সরওয়ার কমলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় গর্জনিয়া ইউনিয়নে বিদ্যুৎ সম্প্রসারনের কাজ শুরু হওয়ায় এলাকার মানুষের কাংখিত আশার প্রতিফল ঘটতে যাচ্ছে।


শেয়ার করুন