বিদেশি খুন, সংসদ সদস্যের গুলি : দেশ কোন পথে?

images29হায়দার আকবর খান রনো

মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে কয়েকটি খুন অথবা খুনের প্রচেষ্টার ঘটনা ঘটে গেল। দেশি এবং বিদেশি নাগরিকরা খুন হয়েছেন। ঢাকার কূটনৈতিক পাড়ায় যেখানে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা থাকার কথা সেখানেই খুন হলেন জনৈক নিরীহ ইতালীয় নাগরিক তাভেলা সিজার। তারপরই প্রায় একই কায়দায় রংপুরের গ্রামে প্রকাশ্য রাস্তায় খুন হয়েছেন জনৈক জাপানি কৃষি গবেষক, আরেকজন নিরীহ বিদেশি নাগরিক হোশি কোনিও। এর কিছু দিন পরই খবর এলো পাবনার ঈশ্বরদীতে জনৈক বাঙালি খ্রিস্টান পাদ্রি লুক সরকারকে গলা কেটে হত্যা করার চেষ্টা নিয়েছিল কয়েকজন দুর্বৃত্ত। পুলিশ এ পর্যন্ত কোনোটারই হদিস করতে পারেনি। ঢাকায় নিহত তাভেলা সিজার খুন হওয়ার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ ধাওয়া করে খুনিদের ধরতে পারেনি। বিরোধী দলের লোকদের গ্রেফতার করতে পুলিশ যেখানে তৎপর, এমনকি ‘হুকুমের আসামি’ (?) কে, তাও নির্দ্বিধায় বলে দিতে পারছে, সেখানে পুলিশের এ গাফিলতি ও ব্যর্থতা বড় বেদনাদায়ক।
বস্তুত, পুলিশ বড় বেশি রাজনীতি করে বলেই বোধ হয় এমন দশা হয়েছে। পুলিশপ্রধান ও অন্য কর্মকর্তাদের প্রায়শ যেসব বক্তৃতা বিবৃতি ও বাণী শুনি তাতে মনে হয় তারা দলনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের সেবক নন, তারা যেন রাজনৈতিক দলের নেতা বা কর্মী। আর ঠিক এ কারণেই পুলিশ তার পেশাদারি দক্ষতা হারিয়ে ফেলেছে। যে পুলিশের আশ্রয়ে ও তাদের পাশে থেকে ছাত্রলীগ বা সরকারি দলের মস্তানরা পিস্তল ব্যবহার করে অথবা যারা ভোটকেন্দ্র দখল করে ব্যালট পেপারে সিল মারার কাজে পাহারা দেয়, সেই পুলিশ রাজনৈতিক পুলিশে পরিণত হয়েছে। দলীয় পুলিশে তার উত্তরণ ঘটেছে। কিন্তু স্বাভাবিক দক্ষতা হারিয়ে ফেলেছে।

সমসাময়িক আরেকটি ঘটনা। গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সংসদ সদস্য মনজুরুল ইসলাম লিটন গুলি করে আহত করেছে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়া শাহাদাত হোসেন সৌরভকে। পুলিশ এখনো খুঁজে পায়নি সংসদ সদস্য মনজুরুল ইসলাম লিটনকে। এই তো পুলিশের পেশাদারি দক্ষতা। যদি এ জায়গায় অন্য কেউ হতো আসামি, বিশেষ করে বিরোধী পক্ষের কেউ, তাহলে একদিকে সরকারি নেতাদের তর্জন-গর্জনে কান ঝালাপালা হয়ে যেত, অন্যদিকে পুলিশের তৎপরতাও লক্ষ করতাম। কিন্তু হায়! আসামি যখন সংসদ সদস্য, তখন পুলিশ তার পেশাদারিত্বের কথা ভুলে যায়।

শোনা যায়, সংসদ সদস্য পলাতক থাকলেও তার লোকজন তৎপর রয়েছে। তারা বাদীপক্ষকে ধমক দিচ্ছে। এমনকি যারা গুলি করার প্রতিবাদ জানাচ্ছে তাদের ওপরও হামলা চালাচ্ছে। সরকার দলের যে অংশ অতটা মস্তানি-গু-ামিতে অভ্যস্ত নয়, তারা অন্যভাবে সাফাই গাইছেন। তারা বলছেন, সংসদ সদস্য তখন স্বাভাবিক অবস্থায় ছিলেন না। মদ্যপ ছিলেন। আরও শোনা যায়, তিনি প্রায়ই পাজেরো গাড়ি নিয়ে বের হন। সম্ভবত জনপ্রতিনিধি হিসেবে জনগণের ভালো-মন্দ সরেজমিন দেখার জন্য এবং প্রায়ই এ ধরনের কা- করেন। আমাদের প্রশ্ন, তাহলে এ রকম মদ্যপ ও বদমেজাজি লোককে আওয়ামী লীগ থেকে নমিনেশন দেওয়া হলো কেন? সম্ভবত এ বিবেচনা থেকে যে, জনগণের ভোটের তো দরকার নেই। ভোটবিহীন নির্বাচনে যাকে খুশি নমিনেশন দিলেই হয়। তাই দেখি, এসব ভোটবিহীন নির্বাচনে ‘বিজয়ী'(?) সংসদ সদস্যরা ধরাকে সড়াজ্ঞান করছেন। কদিন আগে দেখেছি ঢাকায় ট্রাফিক জ্যামে পড়ে এক সংসদ সদস্যপুত্রের মেজাজ এতটাই বিগড়ে গিয়েছিল যে, তিনি এলোপাতাড়ি গুলি নিক্ষেপ করেন।

তিনি অবশ্য লাইসেন্স করা পিস্তল ব্যবহার করেছিলেন। যেমন করেছিলেন গাইবান্ধার সংসদ সদস্য। ঢাকার রাস্তায় সংসদ সদস্যপুত্রের গুলিতে নিহত হয়েছিলেন জনৈক রিকশাচালক ও জনকণ্ঠের জনৈক কর্মচারী। এক্ষেত্রেও সাফাই গাওয়া হচ্ছে যে, সংসদ সদস্যপুত্র (যিনি পরে অবশ্য গ্রেফতার হয়েছেন) মদ্যপ ছিলেন। প্রশ্ন আসে, এমন মদ্যপ ও বদমেজাজি লোকদের পিস্তলের লাইসেন্স দেওয়া হয় কেন? বস্তুত যেখানে গণতন্ত্র নির্বাসিত, যেখানে ভোট হয় না, অথবা ভোটের নামে চলে প্রহসন, যেখানে পুলিশ রাজনৈতিক দলের কার্যত অংশে পরিণত হয়, যেখানে আইনের শাসন অনুপস্থিত সেখানে ক্ষমতার কাছাকাছি ব্যক্তিদের এমন ঔদ্ধত্য মানসিকতা তৈরি হওয়া অস্বাভাবিক নয়। সে জন্য শাসকদল কেবল বিরোধী দলের ওপর চড়াও হচ্ছে না অথবা নিরীহ মানুষের ওপর ক্ষমতার দাপট দেখাচ্ছে না, তারা নিজেদের মধ্যেও খুনাখুনিতে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে, যার একটি সাম্প্রতিক দৃষ্টান্ত হলো ছাত্রলীগের দুই দলের বন্দুকযুদ্ধে গুলিবিদ্ধ হয়েছে মাতৃগর্ভের শিশুও। সৌভাগ্যক্রমে সেই কন্যাশিশুটি জন্মলাভ করেছে এবং এখন বেঁচেও আছে।

কিন্তু সংসদ সদস্যের গুলিতে আহত বালক সৌরভের কী হবে? তার দুটি পা কি চিরতরে পঙ্গু হবে। সে কি র‌্যাবের অবৈধ গুলিতে আহত লিমনের মতোই পঙ্গুত্ববরণ করবে? প্রসঙ্গক্রমে র‌্যাবের কথা যখন উঠল, তখন বলতেই হয় যে, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা এত বেশি বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-ে জড়িত যে, তারাও সাধারণ পেশাদারিত্ব হারিয়ে ফেলেছে এবং এ রকম ক্ষেত্রে যা হয় তাই হয়েছে। তারা এক ধরনের আপেক্ষিক স্বাধীনতা ভোগ করছে। ফলে তাদের মধ্যে যেসব দুর্নীতিবাজ সদস্য রয়েছেন তারা যে টাকার বিনিময়ে পেশাদারি খুনিতে পরিণত হয়েছেন সেই সংবাদ পাওয়া গেল নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের গোপন তথ্য প্রকাশিত হওয়ার পর।

নারায়ণগঞ্জের আরেকটি বহুল আলোচিত হত্যার বিচার এখনো হয়নি। তিন বছর আগে ১৭ বছরের কিশোর, অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ত্বকীকে হত্যা করা হয়েছিল। এর পেছনেও রাজনীতি ছিল বলে জানা যায়। ত্বকীর মা সম্প্রতি এক লেখায় কান্নামিশ্রিত অভিযোগের সুরে বলেছেন, ‘ত্বকীর ঘাতকেরা অজ্ঞাত নয়। চিহ্নিত। হত্যার কারণটিও অনুদঘাটিত নয়। তারপরও রাষ্ট্র ত্বকীর ঘাতকদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। আর রাষ্ট্র যখন ঘাতকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়, সমাজের মানুষগুলো তখন অসহায় হয়ে পড়ে।’

বস্তুত বর্তমানের গণতন্ত্রহীন অরাজকতাপূর্ণ পরিস্থিতিতে আমরা বড় অসহায়বোধ করছি। আর এ রকম পরিস্থিতিতে ষড়যন্ত্র খুন সহজেই কার্যকর হয়। দুজন বিদেশি নাগরিক হত্যা এবং ঈশ্বরদীতে পাদ্রী হত্যা প্রচেষ্টার ঘটনায় মনে হয় এটা কোনো জঙ্গি মৌলবাদীদের কাজ হতে পারে। তবে সবটাই তদন্তসাপেক্ষ। কিন্তু আমরা দেখলাম স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে প্রধান বিরোধী প্রতিপক্ষ বিএনপির দিকে আঙ্গুল তুলেছেন। তার সঙ্গে সুর মিলিয়ে নিচের নেতারাও বলতে শুরু করেছেন যে, এটা লন্ডনে বসে মা ও ছেলের ষড়যন্ত্র। কয়েকজন দলদাস বুদ্ধিজীবীও সুর মেলাচ্ছেন। আমার মতে, তদন্ত ছাড়া এমন মন্তব্য অপরিণামদর্শী ও দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় বহন করে। তাতে সুষ্ঠু তদন্তও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যে মা ও ছেলের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে, জানি না তাদেরও রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার লক্ষ্যে ‘হুকুমের আসামি’ করা হবে কি না। ইদানীং হুকুমের আসামি কথাটার বহুল প্রচার লক্ষ করছি। যাই হোক, সেই মা ও ছেলের প্রতি আমার কোনো সহানুভূতি নেই, কারণ তাদের রাজত্বকালও আমার দেখা আছে। সেই সময় সংঘটিত হয়েছিল ২১ আগস্টের ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা, যার তদন্তের নামে পুলিশ ও প্রশাসন কী ধরনের প্রহসন করছিল সেটাও আজ অজানা নয়। তবু বলব অগ্রিম রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়ে পুলিশের স্বাধীন তদন্তকে বিভ্রান্ত করবেন না। ইদানীং মানুষের নিরাপত্তা যে নেই, তা বলাই বাহুল্য। ডাকাতি, ছিনতাই, ধর্ষণ, হত্যা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। আর তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে বিচারবহির্ভূত হত্যা, বন্দুকযুদ্ধ অথবা গণপিটুনির নামে হত্যা, পুলিশি হেফাজতে তথাকথিত হার্টফেলের মৃত্যুর ঘটনা। খুব সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশনের কর্মকর্তা ওমর সিরাজ বন্দী অবস্থায় হার্টঅ্যাটাকে মারা গেছেন বলে খবরে প্রকাশ হয়েছে। সন্দেহ জাগে, সত্যিকারের হার্টঅ্যাটাক নাকি নির্যাতনের কারণে মৃত্যু। এ প্রসঙ্গে কথা বলতে হলে আবার পেছনে ফিরে যেতে হয়। সেটা সেই মা ও ছেলের আমলের কথা। বিএনপি-জামায়াতের রাজত্বকাল। ২০০২ সালের ১৬ অক্টোবর থেকে ২০০৩ সালের ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত চলেছিল ক্লিনহার্ট অপারেশন, যখন যৌথ বাহিনীর হেফাজতে ৫৭ জন হার্টঅ্যাটাকে মারা গেছেন বলে খবরে প্রকাশিত হয়েছিল। স্পষ্টতই তাদের অধিকাংশই নির্যাতনের কারণে মৃত্যুবরণ করেছেন। সেদিন খালেদা জিয়া সরকার আরও বড় যে অপরাধটি করেছিল তা হলো সংসদে আইন পাস করিয়ে নির্যাতনকারীদের দায়মুক্তি দেওয়া। ২০০৩ সালের ফেব্র“য়ারি মাসে সংসদে এ দায়মুক্তির আইন পাস করেছিল। এরপর আওয়ামী লীগ দুই দফায় সরকার গঠন করেছে। কিন্তু কোনো সংসদই এ অন্যায় মানবতাবিরোধী আইনটি বাতিল করেননি। ২০১৫ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট একটি রিটের পরিপ্রেক্ষিতে এ আইনটিকে বাতিল ঘোষণা করেন।

বিগত আওয়ামী লীগ আমলে বিডিআরের বিচারের সময়ও বন্দী অবস্থায় হার্টঅ্যাটাক ও আৎদহত্যার একাধিক ঘটনা শোনা গিয়েছিল। বস্তুত এ দুটি বড় দল মূলগতভাবে একই। নিকৃষ্ট লুটেরা পুঁজিবাদের স্বার্থ রক্ষক এবং গণতন্ত্র ও মানবতাবিরোধী। তাই বর্তমান সরকারও সেই বিচারবহির্ভূত হত্যা-গুম এবং পুলিশি হেফাজতে নির্যাতনের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছে। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে লিটন বা বদির মতো সংসদ সদস্যদের সব রকম অপকর্ম। সবচেয়ে বড় কথা, এ সরকার পুলিশকে যেভাবে দলীয় কাজে ব্যবহার করছে, তার নজির অতীতে পাওয়া যাবে না। তারই ফলশ্র“তি হলো এই যে, পুলিশ তার পেশাদারিত্ব হারিয়ে ফেলেছে। এ কারণে আইনশৃক্সখলা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি ঘটেছে। আর এ রকম পরিস্থিতিতেই ষড়যন্ত্রের ক্ষেত্র তৈরি হয়।

কিছু দিন আগে অস্ট্রেলিয়া নিরাপত্তা অজুহাত তুলে বাংলাদেশে ক্রিকেট টিমের সফর স্থগিত করেছিল। আমি নিজেই ভীষণভাবে রেগে গিয়েছিলাম। সরকার যথার্থই প্রতিবাদ জানিয়েছিল। একই সঙ্গে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিয়েছিল। অস্ট্রেলিয়া সন্তুষ্ট হয়নি। সরকার তখন বলেছিল, এটাও ষড়যন্ত্র। এমনকি সেই কথিত ষড়যন্ত্রের সঙ্গে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নামও জড়িত করা হলো। তাতে অবস্থার কিছু হেরফের হয়নি। কারণ আজকাল সরকারের কথায় মানুষ বিশ্বাস করে না। এর পরপরই ইতালীয় ও জাপানি দুই নাগরিকের হত্যার খবর এলো। অস্ট্রেলিয়ার সন্দেহ গাঢ়তর হলো। কিন্তু কী আশ্চর্য। প্রায় একই সময়ে আরেকটি পাল্টা খবর শোনা গেল। সিডনিতে পুলিশ সদর দফতরের সামনে দুজন নিহত হয়েছেন দুর্বৃত্তের হাতে। তখন হয়তো আমরা মুচকি হেসে বলতে পারতাম, ‘নিরাপত্তা তো তোমাদের দেশেও নেই।’ কিন্তু এসব কথা ও তর্ক নেহাত ছেলেমানুষির পর্যায়ে পড়ে। পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি ক্রাইম হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। তারপরও কেউ সেই দেশ সফর বাতিল করে না। স্কুলে ছাত্ররা বন্দুকধারীর গুলিতে মারা যায়। তারপরও এদেশের ধনীর সন্তানরা সেদেশে পড়তে যায়। কারণ সে দেশের পুলিশের মধ্যে বর্ণ বৈষম্যবাদ থাকা সত্ত্বেও (যদিও প্রেসিডেন্ট কৃষ্ণবর্ণের মানুষ) এবং এখন মুসলিমবিদ্বেষ তীব্র মনোভাব থাকা সত্ত্বেও ন্যূনতম পর্যায়ে আইনের শাসন আছে। কোনো কংগ্রেসম্যান ইচ্ছামতো গুলি করে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে (অথবা পুলিশের সহায়তায়) পালিয়ে বেড়াতে পারে না। যেমনটি করছেন সুন্দরগঞ্জের সংসদ সদস্য লিটন। আমাদের দেশে গণতন্ত্রহীনতা ও আইনের শাসনের অভাব এমন পর্যায়ে নেমে এসেছে যে, এখানে কেবল ক্ষমতার দাপটই দৃশ্যমান, জনগণের নিরাপত্তা নেই বললেই চলে। এর পরিণতি ভয়াবহ। শুধু ষড়যন্ত্রের কথা শুনিয়ে অথবা গলাবাজি করে বিদেশিদের আশ্বস্ত করা যাবে না, জনগণের আস্থাও অর্জন করা যাবে না। সরকারের উচিত পুলিশকে দলীয় রাজনীতির প্রভাবমুক্ত করে পেশাদারি দক্ষতা বৃদ্ধি করা। একই সঙ্গে দরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা, গণতন্ত্রকে প্রসারিত করা। অন্যথায় পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাবে। বিদেশি ক্রেতা ও বিনিয়োগ সঙ্কুচিত হতে পারে। তারপর কী পরিস্থিতি দাঁড়াবে তা আমি আর ভাবতে পারছি না। শুধু এটুকু বলতে পারি কপালে অনেক দুঃখ আছে। আমি আশা করব, সরকার বক্তৃতাবাজি ছেড়ে বাস্তব পদক্ষেপ নেবে, নিজের দল ও এমপিদের সামলাবে। ঘুরেফিরে সেই গণতন্ত্রের কথাই আসে। গণতন্ত্র এবং একমাত্র গণতন্ত্রই দেশের নাগরিক ও বিদেশিদের আস্থা ফিরিয়ে আনবে, মৌলবাদ জঙ্গিবাদকে পরাভূত করবে এবং ষড়যন্ত্রকে অকার্যকর করে তুলবে।

লেখক : রাজনীতিক।


শেয়ার করুন