‘বিএনপি চাইলে মুহুর্তেই কক্সবাজার অচল করে দিতে পারে, কিন্তু সহিংসতায় বিশ্বাসি নয়’

47প্রেস বিজ্ঞপ্তি ৥

‘চাইলে বিএনপি কক্সবাজারকে অচল করে দিতে পারে’ এমন কথা জানিয়ে জেলা ও পুলিশ প্রশাসনকে নিরপেক্ষ আচরণ করার আহবান জানিয়েছে কক্সবাজার জেলা বিএনপি। ‘৫ জানুয়ারী গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ পালনে আয়োজিত সমাবেশে এমন বক্তব্য দিয়ে বলা হয়েছে, পুলিশ যদি অলিখিত ভাবে বিধিনিষেধ আরোপ ও নিরীহ নেতা-কর্মীদের ঘরে ঘরে তল্লাশি এবং তাদের গণহারে গ্রেপ্তার করলে জেলা বিএনপিও প্রশাসনকে আর সহযোগিতা করবে না।
সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অগণতান্ত্রিক ভাবে গুলশান কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করা ও সারাদেশে বিএনপি নেতা-কর্মীদের উপর পুলিশ ও আওয়ামী ক্যাডার বাহিনীর হামলার নিন্দা ও সংশ্লিষ্টদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।
সমাবেশে বক্তাগণ খালেদা জিয়া ঘোষিত অনির্দিষ্টকালের অবরোধ কর্মসূচি সফল করার জন্য জেলাবাসির প্রতি আহবান জানান।
৫ জানুয়ারি সোমবার বিকালে জেলা বিএনপি কার্যালয়ে আয়োজিত ওই সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপি সভাপতি ও সাবেক সাংসদ শাহজাহান চৌধুরী। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সাংসদ লুৎফুর রহমান কাজল।
প্রধান অতিথি লুৎফুর রহমান কাজল বলেন, ‘পুলিশ বাহিনী আর নিজেদের গুন্ডা বাহিনী নামিয়ে জনগণের আন্দোলনকে কখনোই দমানো যাবে না। হামলা, মামলা ও গ্রেপ্তার করলেই আন্দোলন থেমে যায় না, বরং দাবানলের মতো সেই আন্দোলন জেগে উঠে।’
তিনি জেলা পুলিশের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘বিএনপি কখনোই সহিংসতায় বিশ্বাস করে না। আমি নিজেও সহিংস রাজনীতিতে বিশ্বাসি নয়। তার মানে এই নয় যে, এটা আমাদের দূর্বলতা। বিএনপি চাইলেই পুরো কক্সবাজার একমুহুর্তেই অচল করে দিতে পারে।’
পুলিশকে নিরপেক্ষ আচরণ করার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের নিরীহ নেতা-কর্মীদের অহেতুক হয়রানি, গ্রেপ্তার করবেন না। প্রয়োজন হলে আমাদের মতো নেতাদের গ্রেপ্তার করুন। আমরা গ্রেপ্তারবরণের জন্য প্রস্তুত হয়ে আছি।’
তিনি কক্সবাজার জেলাজুড়ে গ্রেপ্তারকৃত নেতা-কর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান।
সভাপতির বক্তব্যে শাহজাহান চৌধুরী বলেন, ‘দেশে এখন আর গণতন্ত্র নেই। মানবাধিকা ভূলুণ্ঠিত হয়ে পড়েছে। শুধু খালেদা জিয়া নয়, পুরো দেশকেই অবরুদ্ধ করে ফেলেছে এই জালিম সরকার।’
তিনি বলেন, ‘যারা ক্ষমতায় থাকে তারা অতীতের ইতিহাস ভুলে থাকার চেষ্টা করে। কিন্তু ইতিহাস কখনোই কাউকে ক্ষমা করেনি। আর ফ্যাসিবাদী, স্বৈরাচারি সরকারও চেষ্টা করেও ক্ষমতা আঁকড়ে থাকতে পারেনি। আওয়ামী লীগও সেটা পারবে না।’
শাহজাহান চৌধুরী মনে করেন, এটা আওয়ামী লীগ যত তাড়াতাড়ি বুঝবে ততই তাদের মঙ্গল। নয়তো আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়ে রাজনীতি থেকেই বিদায় নিতে হবে।
জেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক অধ্যাপক আকতার চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্টিত সমাবেশে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শামীম আরা স্বপ্না, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা শ্রমিক দল সভাপতি পৌর প্যানেল মেয়র রফিকুল ইসলাম, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ মোহাম্মদ আলী, রামু উপজেলা বিএনপির আহবায়ক এসএম ফেরদৌস, জেলা মৎস্যজীবী দল সভাপতি হামিদ উদ্দিন ইউছুপ গুন্নু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি অধ্যাপক আজিজুর রহমান, জেলা যুবদল সভাপতি সৈয়দ আহমদ উজ্জল, সাধারণ সম্পাদক ও পৌর প্যানেল মেয়র জিসান উদ্দিন জিসান, জেলা শ্রমিক দল সাধারণ সম্পাদক মো. কুতুব উদ্দিন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মোহাম্মদ ইউনুছ, জেলা ছাত্রদল সভাপতি রাশেদুল হক রাসেল, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীনুল ইসলাম শাহীন, পৌর যুবদল সভাপতি মসউদুর রহমান মাসুদ, সদর যুবদলের আহবায়ক ফরিদুল আলম, শহর শ্রমিক দল সভাপতি এস্তাক আহমদ, শহর ছাত্রদলের আহবায়ক মোহাম্মদ ইলিয়াছ প্রমূখ।
এছাড়াও অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক এডভোকেট আবু সিদ্দিক ওসমানী, দপ্তর সম্পাদক ইউসুফ বদরী, কেন্দ্রীয় যুবদল সদস্য এম. মোকতার আহমদ, জেলা যুবদল সাংগঠনিক সম্পাদক আমির আলী, সদর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব ও ঝিলংজা ইউপি চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন জিকু, জেলা ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক মনির উদ্দিন মনির, শহর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক আবদুর রহিম প্রমূখ।
সমাবেশ শুরুর আগে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, শ্রমিক দলসহ অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা ‘কালো পতাকা’ মিছিল নিয়ে জেলা বিএনপি কার্যালয়ে জড়ো হন।


শেয়ার করুন