বাজেটে পলিথিনে শুল্ক কমায় দূষণ বাড়ার শঙ্কা

সিটিএন ডেস্কঃ
পরিবেশ রক্ষায় সরকার পলিথিনের ব্যবহার বন্ধের কথা বলে এলেও ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বিপরীত চিত্রের দেখা মিলেছে। যেখানে অপচনশীল এবং পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর পলিথিনের ওপর সম্পূরক শুল্ক কমানোর প্রস্তাব আনা হয়েছে। এতে পলিথিন ব্যবসায়ীরা খুশি হলেও পরিবেশের ওপর ঝুঁকি বিবেচনায় শঙ্কা প্রকাশ করছেন পরিবেশবাদীরা।

২০২২-২৩ অর্থবছরে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত মোট বাজেট বরাদ্দ ১ হাজার ৫০১ কোটি ২৬ লাখ টাকা। যা বিগত অর্থবছরের তুলনায় ২৭৮ কোটি টাকা বেশি।

বৃহস্পতিবার (৯ জুন) জাতীয় সংসদে নতুন অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপনকালে এ তথ্য জানান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

তবে বরাদ্দ বাড়লেও নদী, মাটি, বাতাস দূষণের অন্যতম উপাদান পলিথিনের ওপর শুল্ক কমানোয় তা সুনীল অর্থনীতি ও পরিবেশের জন্য কোনোরূপ সুফল বয়ে আনবে না, এমনটিই বলছে পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো।

এবারের বাজেটে সব ধরনের পলিথিন ব্যাগ, প্লাস্টিক ব্যাগ (ওভেন প্লাস্টিক ব্যাগসহ) ও মোড়ক সামগ্রীর ওপর বিদ্যমান ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। যার প্রভাবে বাজারে পলিথিন ব্যাগের দাম কমবে এবং বিপরীতে এর ব্যবহার বেড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এর আগে সরকার পলিথিনের ব্যবহার সীমিত করার উদ্যোগ নিয়েছিল। গত এক দশকে পরিবেশ ধ্বংসকারী পলিথিনের ব্যবহার শতভাগ বন্ধ করতে নানা সময়ে উদ্যোগ নিতে দেখা যায় সরকারকে।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কামরুজ্জামান মজুমদার বৃহস্পতিবার রাতে জাগো নিউজকে বলেন, উন্নয়নমুখী বাজেট হয়েছে। গত অর্থবছরের তুলনায় এবার পরিবেশের জন্য বরাদ্দ বেড়েছে। ২০১২ সালের পর ক্রমান্বয়ে পরিবেশ বাজেটের পরিমাণ কমতে দেখেছি। ভালো বিষয় হলো, এবারের বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ বেড়েছে।

একইসঙ্গে শঙ্কার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, বাজেটে পরিবেশের জন্য বরাদ্দ বাড়লেও পলিথিন ও প্লাস্টিক ব্যাগের শুল্ক বিলোপ করা হয়েছে। এতে পলিথিনের ব্যবহার আরও বাড়বে। পরিবেশ দূষণও বাড়বে। ২০০১ সালে আইন করে নিষিদ্ধ করা এ পণ্যটি ২০২২ সালে এসে শুল্কমুক্ত হওয়া এর ব্যবহারকেই উৎসাহিত করবে। পলিথিনের অধিক ব্যবহারে মাটি, পানি, বায়ুর পাশাপাশি সমুদ্র আরও বেশি দূষিত হবে। যা আমাদের সুনীল অর্থনীতিতে বড় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

তিনি পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে পলিথিনের ওপর শুল্ক প্রত্যাহারের বিপরীতে বিদ্যমান শুল্ক বহাল তথা তা যথাসম্ভব বাড়ানোর বিষয়ে সরকারের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।


শেয়ার করুন