বাংলাদেশে পিস টিভি বন্ধের সিদ্ধান্ত

146953_1বাংলাদেশে পিস টিভির সম্প্রচার বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। পিস টিভির পরিচালক ও খ্যাতনামা ইসলামী চিন্তাবিদ ডা. জাকির নায়েক বিরুদ্ধে ‘জঙ্গিবাদে উৎসাহ’ যোগানোর অভিযোগ ওঠার পর তার পিস টিভির সম্প্রচার বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

রবিবার দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা-সম্পর্কিত মন্ত্রিসভা কমিটির বিশেষ বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয় বলে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসনে আমুর বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের জানান।

এক সপ্তাহের ব্যবধানে দেশে দুই দফা বড় ধরনের সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষাপটে মন্ত্রিসভা কমিটির এই বিশেষ বৈঠক হয়।

পরে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু সাংবাদিকদের এ ব্যাপারে বিস্তারিত বলবেন বলে জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী।

এই বৈঠকে আরো বেশ কিছু বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে জুমার বয়ান ও খুতবা মনিটরিং করা হবে, দেশের বিভিন্নস্থানে যেসব ওয়াজ মাহফিল হয় তাও মনিটরিংয়ের আওতায় আসবে। বিভিন্ন ভিআইপি এলাকায় অনুমোদনহীনভাবে গড়ে ওঠা রেস্টুরেস্ট ও স্কুল কলেজ উচ্ছেদ করা হবে। এছাড়া রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে বিনিয়োগকারীদের প্রয়োজনীয় সব রকম নিরাপত্তা দেওয়া হবে।

জাকির নায়েক পরিচালিত মুম্বাইভিত্তিক ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনের একটি প্রতিষ্ঠান হল এই পিস টিভি। এ টিভিতে ধর্ম নিয়ে আলোচনায় ইসলামের যে ব্যাখ্যা তিনি দেন, তা নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

গত ১ জুলাই গুলশানে ভয়াবহতম জঙ্গি হামলায় সঙ্গে জড়িতদের মধ্যে অন্তত দুইজন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে জাকির নায়েকের মত ইসলামি বক্তাদের নিয়মিত অনুসরণ করতেন। তার কথায় প্ররোচিত হয়ে ভারতের কয়েকজন তরুণ আইএসে যোগ দিতে সিরিয়ায় পাড়ি জমিয়েছে বলেও খবর এসেছে।

এর আগে শনিবার এক ভিডিও বার্তায় জাকির নায়েক বলেছিলেন, ‘জঙ্গিবাদ গ্রহণের জন্য আমার বক্তব্য অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে’ বাংলাদেশের কোনো কর্মকর্তা এমন অভিযোগ করেননি।’

ওই ভিডিও বার্তায় তিনি আরো বলেন, ‘বিশ্ব জুড়ে আমার কয়েক কোটি ভক্ত আছে। বাংলাদেশেরও অর্ধেকের বেশি মানুষ আমার ভক্ত। কিন্তু সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও নিরীহ মানুষকে হত্যায় আমি উস্কানি দিচ্ছি এমন মন্তব্য করা নিশ্চিত ভাবেই শয়তানের প্ররোচনার মত’।

এর আগে শনিবার কালের কণ্ঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছিলেন, জাকির নায়েক বাংলাদেশে খুবই জনপ্রিয়। তদন্ত ছাড়া এমন একজন জনপ্রিয় ব্যক্তির ক্ষেত্রে হঠাৎ করেই কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না।

কালের কণ্ঠকে তিনি আরো বলেছিলেন, এখন পর্যন্ত আমরা গুলশান হামলায় ডা. জাকির নায়েকের কোনো সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পাইনি। তবে বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো জাকির নায়েকের বক্তব্য, আর্থিক সংযোগ খতিয়ে দেখেছে।

বিশেষ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী নুরুল ইসলাম ও নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান।

এ ছাড়া পুলিশ মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক, ঢাকার পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াসহ বিভিন্ন বাহিনী ও সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ বৈঠকে অংশ নেন।

–আরটিএনএন


শেয়ার করুন