বাংলাদেশে ‘দ্রুত হামলা শুরুর’ হুঁশিয়ারি আইএসের

126160_1আন্তর্জাতিক ডেস্ক

আরটিএনএন

জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট হুঁশিয়ার করে দিয়েছে ‘বাংলাদেশে আইএস মনোনীত একজন আঞ্চলিক নেতার নেতৃত্বে জিহাদিরা সংগঠিত হচ্ছে এবং দ্রুতই হামলা শুরু করবে।’

বাংলাদেশে আইএসের অস্তিত্ব নেই বলে আওয়ামী লীগ সরকারের দাবির সমালোচনা করেছে ইরাক ও সিরিয়াভিত্তিক জঙ্গি সংগঠনটি।

আইএস বলছে, বারবার ‘বাংলাদেশে কোনো আইএস নেই’ বলে স্লোগান দেয়ার কোনো যুক্তি নেই।

সোমবার ভারতের সর্বাধিক প্রচারিত ইংরেজি দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রতিবেদনটি তুলে ধরা হলো:

সারা বিশ্বের আতঙ্কের প্রতিমূর্তি জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস তাদের অনলাইন ম্যাগাজিন ‘দাবিক’ এ দাবি করেছে ঢাকায় বিদেশি নাগরিকদের হত্যার মাধ্যমে তারা তিউনিসিয়া থেকে শুরু করে বাংলাদেশ পর্যন্ত বিশাল ভূখণ্ডে কর্তৃত্ব স্থাপনে সক্ষম হয়েছে।

আল-কায়েদার নেতৃত্বের সমালোচনা করে নিজেদেরকেই আন্তর্জাতিক জিহাদের নেতা দাবি করে বলা হয়েছে, ‘ভূখণ্ডের পরিধি এতদূর পর্যন্ত বিস্তৃত করা হবে যেন আইএস অধিকৃত ভূখণ্ডে সূর্য অস্ত না যায়।’

‘দাবিক’ ম্যাগাজিনে বলা হয়েছে, ‘আইএস থাকবে। সিরিয়া থেকে ইরাক, মধ্য এশিয়া থেকে ককেসাস, তিউনিশিয়া থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত আইএসের বিস্তার ঘটেছে। যদিও বাংলাদেশে বর্তমানে মুশরিক সরকার ক্ষমতায়। খিলাফত ততদূর পর্যন্ত বিস্তৃত হবে, যেন আইএস ভূখণ্ডে সূর্য অস্ত না যায়।’

বাংলাদেশে বিদেশি নাগরিকদের উপর হামলা ও হোসেনি দালানের শিয়া সমাবেশে হামলার দাবি করার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক জিহাদের নেতা হিসেবে আইএসের দাবিকে যৌক্তিক প্রমাণ করে।

আইএস দাবি করেছে, ‘ খলিফার আদেশে সম্মিলিত উম্মাহ একযোগে কাজ করছে…এর ধারাবাহিকতায় তিউনিশিয়া থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত বিশাল খিলাফতে ক্রুসেডার জাতির একজন নাগরিকও শান্তি ও নিরাপত্তা পাবে না।’

আইএস আল-কায়েদাকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছে। আল-কায়েদাকে নিজেদের প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করে আইএস বলেছে, এককভাবে জিহাদ করার কোনো যুক্তি নেই বরং সময় এসেছে ঐক্যবদ্ধভাবে ‘একজন কুরাইশি নেতার’ নেতৃত্বে জিহাদ করার।’

কুরাইশি নেতা হিসেবে আইএসের ‘খলিফা’ আবু বকর আল বাগদাদিকে বোঝানো হয়েছে এবং তারা দাবি করেছে খলিফাকে অবশ্যই ঐতিহ্যবাহী কুরাইশ গোত্রের হতে হবে।

আইএসের নিজস্ব ম্যাগাজিনে তাদের শ্রেষ্ঠত্ব দাবি করা, সম্প্রতি উত্তর আফ্রিকা, মধ্য এশিয়া ও দক্ষিণ এশিয়ায় তাদের মিত্র জিহাদিদের শক্তিশালী অবস্থান এবং যেহেতু ইরাক ও সিরিয়ায় তাদের সদরদপ্তর তাই বাংলাদেশের আ.লীগ সরকারের আইএসকে হালকা করে দেখা মোটেও উচিত হবে না।

আইএস আল-কায়েদা নেতা আয়মান আল জাওয়াহিরিকে কটাক্ষ করে বলছে, ‘মুজাহিদিনরা বুঝতে পেরেছে একজন শক্তিশালী নেতাই পারে বিজয় ছিনিয়ে আনতে, কোনো মূর্খ লোক যে গুপ্তস্থানে লুকিয়ে থেকে পুরোনো ভিডিও বার্তা পাঠিয়ে ভীতি ছড়ানোর চেষ্টা করে তার দ্বারা জিহাদ সম্ভব নয়।’

আইএস ম্যাগাজিনে দাবি করা হয়েছে, সারা বিশ্বের জিহাদিরা এক খলিফার নেতৃত্বে কাজ করছে। সে ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশেও আইএস মনোনীত একজন আঞ্চলিক নেতার নেতৃত্বে জিহাদিরা সংগঠিত হচ্ছে এবং দ্রুতই হামলা শুরু করবে।

যদিও এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি তবে অনলাইন পোস্টটি থেকে ধারণা করা হয়, সালাফি ধারায় বিশ্বাসী বাংলাদেশের শীর্ষ জঙ্গি সংগঠন জেএমবি আইএসের সাথে একীভূত হতে যাচ্ছে।

ইতালিয়ান নাগরিক সিজার তাভেল্লা হত্যাকাণ্ডের পর সরকারের আইএস থাকার কথা অস্বীকার করা প্রসঙ্গে আইএস বলেছে, বারবার ‘বাংলাদেশে কোনো আইএস নেই’ বলে স্লোগান দেয়ার কোনো যুক্তি নেই।

আইএস আ.লীগ সরকারকে ‘মুরতাদ’ বলে অভিহিত করলেও বিরোধি দল বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামকেও ছেড়ে কথা বলেনি। মানব রচিত আইনে সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় জামায়াতে ইসলামের তীব্র নিন্দা করেছে আইএস।


শেয়ার করুন