ঈদগড়ে আওয়ামীলীগ নেতা হত্যা

বাঁচতে মরিয়া মূল হোতা চেয়ারম্যান ভুট্টু

89012ad4-71a1-4123-b898-65e5843a04b4নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঈদগড়ে গুলি করে আওয়ামীলীগ নেতা ডাঃ মহিউদ্দিন হত্যা মামলার মূল হোতা ফিরোজ আহমদ ভুট্টু বাঁচতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। ক্ষমতার ধর ব্যক্তির হস্তক্ষেপে রামু থানায় মামলা না নেয়ার কায়দা করলেও অবশেষে কোর্টের নির্দেশে মামলা নিতে বাধ্য হয় পুলিশ। ওই মামলায় ফিরোজ আহমদ ভুট্টুকে প্রধান আসামী করে ১৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১২/১৫ জনকে আসামী করা হয়। মামলা রুজু হওয়ার পর থেকে অতীতের মত এবারো নানা নাটক সাজিয়েছেন ভুট্টু। চেয়ারম্যানের পোষ্য ইউপি সদস্যগণ ও অপহরণ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সাধারণ জনগণকে ‘বলির পাঠা’ বানিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ ও সাংবাদিক সম্মেলনের মত নানান কর্মসূচি দিয়ে নিজেকে সাধু সাজাতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন তিনি। একই সাথে মামলা তুলে নেয়ার জন্য প্রতিনিয়ত বাদী নিহত আওয়ামীলীগ নেতার স্ত্রীকে নানা ধরণের হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
আওয়ামীলীগ নেতা ডাঃ মহিউদ্দিনের স্ত্রী জাহেদা বেগম জানান, তার স্বামী নিহত হওয়ার পর আইনের আশ্রয় নেয়ার জন্য রামু থানার দ্বারস্থ হন তিনি। কিন্তু রামু থানার ওসি মামলা না নেয়ার জন্য উপর মহলের নির্দেশ রয়েছে বলে সাফ জানিয়ে দিয়ে এজাহার নেননি। পরে আদালতের শরণাপন্ন হলে আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে দ্রুত মামলা নেয়ার জন্য নির্দেশ দেন রামু থানার ওসিকে। পরে আদালদের নির্দেশে মামলা নিতে বাধ্য হয় পুলিশ। কিন্তু এখনো প্রকৃত আসামী গ্রেফতারে পুলিশের কোন তৎপরতা চোখে পড়েনি। শুধুমাত্র দুইজন মহিলাকে আটক করেই দায়িত্ব শেষ করেছেন বলে অভিযোগ তার।
তিনি আরো জানান, গত কয়েক বছর পূর্বে ভুট্টু চেয়ারম্যানের রোষানলে পড়ে তার স্বামী (নিহত আওয়ামীলীগ নেতা মহিউদ্দিন)। চেয়ারম্যান সন্ত্রাসীদের নিয়ে দিনে দুপুরে তার বাড়ি ভাংচুর করে লুটপাট চালায়। ওই ঘটনায় চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে তার স্বামী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করে। সেই থেকে চেয়ারম্যান উল্টো তার স্বামীকে বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে হয়রানি করে আসছে সে। ইতোপূর্বেও ভুট্টু চেয়ারম্যানের কারসাজিতে মিথ্যা অপহরণ মামলায় দীর্ঘদিন জেল কাটে তার স্বামী। জেল কেটেও রক্ষা হয়নি মহিউদ্দিনের। অবশেষে এই হিং¯্র চেয়ারম্যান তার স্বামীর প্রাণ কেড়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এদিকে সাধারণ মানুষের চোখে ভগমান হলেও প্রকৃত পক্ষে ভুট্টু চেয়ারম্যানের নেতৃত্বেই সন্ত্রাসের জনপদে পরিণত হয় ঈদগড়। অতীতেও সেখানে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড থাকলেও ‘অপহরণ’ শব্দটি যোগ হয় ভুট্টু প্রথম বার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে। বিভিন্ন অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে ভুট্টু চেয়ারম্যানের অপহরণ সিন্ডিকেট তৈরী, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও আওয়ামীলীগ নেতা মহিউদ্দিন হত্যাকান্ডের পিলে চমকানো তথ্য।
সূত্রমতে, ২০০৬ সালে ঈদগড় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ফিরোজ আহমদ ভুট্টুর সাথে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের নেতা ডাঃ মহিউদ্দিন। যদিও ভুট্টু চেয়ারম্যানের চেয়ে অপেক্ষাকৃত কম জনপ্রিয় ছিলেন তিনি। তারপরেও ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে পথের কাঁটা সরিয়ে দিতে তখন থেকেই টার্গেটে পরিণত করে মহিউদ্দিনকে। ওই বার সবাইকে টপকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয় ভুট্টু। ভুট্টু চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনের পর থেকেই নতুন করে যাত্রা শুরু করে ‘অপহরণ’ শব্দটি। ঈদগড়ের মতো দূর্গম এলাকায় ডাকাতের ঘটনা স্বাভাবিক হলেও অপহরণ কোন দিনই হয়নি। ঈদগড়, বাইশারী, নাইক্ষ্যংছড়ি, জোয়ারিয়া নালা, রশিদ নগর, ঈদগাও সহ বিভিন্ন এলাকার ৮ টি গ্রুপের প্রায় ৫৬ জন ডাকাতের একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেন চেয়ারম্যান ভুট্টু। ডাকাতি শেষে ফেরার পথে যে কোন একজন অথবা একাধিক ব্যক্তিকে অপহরণ করা শুরু করে। পর্যায়ক্রমে ডাকাত থেকে অপহরণের জনপদে পরিণত হয়। ভুট্টু চেয়ারম্যান পরোক্ষভাবে ইন্ধন ও পরিকল্পনা চালিয়ে আসলেও চেয়ারম্যানের হয়ে প্রত্যক্ষভাবে সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করেন ঈদগড় ইউনিয়নের হাসনাকাটা ২ নং ওয়ার্ডের মেম্বার নুরুল আমিন। এক পর্যায়ে নুরুল আমিনের বেশকিছু কার্যক্রম সন্দেহজনক হলে সাধারণ জনগণ তার অপহরণ চক্রের সাথে সম্পৃক্ততা দৃশ্যায়ন করেন। এরপর থেকে অপহরণ সিন্ডিকেটের চিহ্নিত গডফাদারে পরিণত হয় নুরুল আমিন মেম্বার।
এদিকে হঠাৎ স্বার্থের দ্বন্দ্ব লেগে যায় অপরাধের রাজত্বে ভুট্টু চেয়ার‌্যমান ও নুরুল আমিন মেম্বারের হাই কমান্ড হিসেবে পরিচিত ডাকাত সর্দার সাহাব উদ্দিনের সাথে। তাই নিজ বাহিনী দিয়ে ধরে এনে জনগণকে উসকে দিয়ে দিনে দুপুরে পরিকল্পিতভাবে ওই সাহাব উদ্দিনকে প্রকাশ্যে পিঠিয়ে হত্যা করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিহত সাহাব উদ্দিনের এক নিকট আত্মীয় জানান, সাহাব উদ্দিনকে দিয়ে সব ধরণের স্বার্থ হাসিল করেছে ভুট্টু চেয়ারম্যান। পরে সামান্য দ্বন্দ্ব লাগলে সাহাব উদ্দিন গ্রুপ ছেড়ে চট্টগ্রাম চলে যায়। পরে চেয়ারম্যানের গোপন তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় চট্টগ্রাম থেকে নিজস্ব বাহিনীর লোক দিয়ে ধরে এনে ঈদগড়ের গহীন অরণ্যে নিয়ে গিয়ে প্রচন্ড মারধর করে তাকে। সেখানেই মৃত্যুর কাছাকাছি চলে যায় সাহাব উদ্দিন। পরে হত্যাকান্ডকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে একটি মোটর সাইকেলের পেছনে করে তাকে ঈদগড় বাজারে নিয়ে আসে। সেখানে ছেড়ে দিয়ে অপহরণ চক্রের মূল হোতা উল্লেখ করে জনগণকে ক্ষেপিয়ে দেয় ভুট্টু। এক পর্যায়ে জনগণের গণ ধোলাইয়ে নিহত হয় সাহাব উদ্দিন। ওই ঘটনাও ভুট্টু চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা করতে গেলে রামু থানায় মামলা নিতে দেয়নি। পরে আদালতে মামলাটি দায়ের করে। ওই সময়ও মামলা থেকে রেহায় পেতে ঈদগড়ের সাধারণ মানুষকে বোকা বানিয়ে জেলা শহরে নিয়ে এসে মানববন্ধন সহ নানা ধরণের আন্দোলন সংগ্রামের নামে নাটক তৈরী করেন ভুট্টু। ওই ঘটনার পর থেকে এখনো প্রাণনাশের হুমকিতে ঈদগড় যেতে পারেনি বলে অভিযোগ নিহত সাহাব উদ্দিনের স্ত্রীর।
মহিউদ্দিন হত্যাকান্ডের ঘটনায়ও একইভাবে হত্যা মামলা থেকে রেহায় পেতে গন্ডমূর্খদের বোকা বানিয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশের নামে নতুন নাটক মঞ্চায়ন করেছেন চেয়ারম্যান। অবশ্য প্রতিজন আন্দোলনকারিই টাকার বিনিময়ে কক্সবাজার এসেছিলেন বলে জানিয়েছেন ওই দিন।
ওই নির্বাচন ও মামলার পর থেকে আওয়ামীলীগ নেতা ডাঃ মহিউদ্দিনকে রাস্তা থেকে সরিয়ে দিতে নানা ধরণের উপায় খুঁজতে থাকে ভুট্টু চেয়ারম্যান। এরই মধ্যে ভুট্টু চেয়ারম্যানের পরিকল্পনায় সঙ্গী হয় মহিউদ্দিনের সাথে জমির বিরোধ থাকা তার চাচাতো ভাই নিহত নুরচ্ছফার। বিরোধপূর্ণ জায়গার পরিমাণ মাত্র ৯ শতক হলেও ভুট্টু চেয়ারম্যানের প্ররোচনা আর উস্কানিতে সেটি পরিণত হয় কোটি টাকার স্বার্থের যুদ্ধে। চেয়ারম্যানের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় ও ইন্ধনে গত দেড় বছর আগে ডাঃ মহিউদ্দিনের ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়–য়া এক মেয়েকে অপহরণ করে প্রতিপক্ষ। ঈদগড় থেকে অপহরণ করে ওই মেয়েটিকে চন্দনাইশ থানা এলাকায় নিয়ে গিয়ে একটি ঝুপড়ি বাড়িতে বন্দি রাখে। পরে রামু উপজেলা আওয়ামীলীগের সহযোগিতায় চন্দনাইশ থানা পুলিশ ওই মেয়েটিকে উদ্ধার করে। উদ্ধারের পর মেয়ের স্বীকার উক্তিতে জানা যায়, অপহরণের পর ওই ঝুপড়ি বাড়িতে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছিলো। কিন্তু এঘটনাও রামু থানা পুলিশ মামলা নেয়নি। মেয়েকে উদ্ধার করতে গিয়ে বিভিন্ন ঘটনার মুখোমুখি হয়ে মহিউদ্দিনের নজরে চলে আসে অপহরণ চক্রটি। পুলিশি সহায়তা বঞ্চিত মহিউদ্দিন ধীরে ধীরে ওই অপহরণ চক্র সম্পর্কে নানা ধরণের তথ্য সংগ্রহ অব্যাহত রাখে। আর এসব তথ্যেই উঠে আসে ভুট্টু চেয়ারম্যানের সম্পৃক্ততার বিষয়টি। আর এরই মধ্যে বিষয়টি জেনে যায় ভুট্টু চেয়ারম্যান। তাই তড়িঘড়ি করে মিথ্যা অপহরণ মামলায় ফাঁসিয়ে দেয় মহিউদ্দিনকে। মোটা অংকে পুলিশকে ম্যানেজ করে মহিউদ্দিনকে আটক করান। পরে ওই মিথ্যা মামলায় দীর্ঘদিন জেল কাটেন তিনি।
এরই মধ্যে ডাকাতের হামলায় নিহত হন ডাঃ মহিউদ্দিনের প্রতিপক্ষ নুরুচ্ছফা। যদিও নুরুচ্ছফা নিহত হওয়ার সময় মহিউদ্দিন জেলে ছিলো তারপরেও তাকে ওই মামলায় আসামী করা হয়। ঘটনার পর দিন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী মহিউদ্দিনের বাড়িতে হামলা চালায়। এসময় মহিউদ্দিনের পরিবারের সদস্যদের প্রচন্ড মারধর করে। লুটপাট যজ্ঞ চালায় তার বাড়িতে। প্রকৃত ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে মহিউদ্দিনকে ফাঁসাতে নুরুচ্ছফা হত্যার মুল হোতা বলে তার বিরুদ্ধে অপ্রচার শুরু করে।
নাম প্রকাশ না করে স্থানীয় একজনের দাবী, ওইদিন নুরুচ্ছফা বাড়িতে টাকা নিয়ে গেছেন বলে খবর পেয়ে ডাকাতরা তার উপর হামলা করে। ওই সময় নুরুচ্ছফা ডাকাতের গুলিতে মারা যায়। কিন্তু চেয়ারম্যান অহেতুক মহিউদ্দিনকে ফাঁসাতে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও অপ্রচার শুরু করেছিলো।
ওই ঘটনার কিছুদিন পর জেল থেকে বের হয় মহিউদ্দিন। জেল থেকে বের হয়ে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আরো চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করে মহিউদ্দিন। ওই মামলার পর আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে তার উপর। আর এরই মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ায় নিজে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করে এবার স্ত্রীকে সংরক্ষিত আসনে নির্বাচনে দাঁড় করান মহিউদ্দিন। এখানেও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ঘোর বিরোধীতা করে ভুট্টু চেয়ারম্যান। নির্বাচনের কিছুদিন যেতে না যেতেই নিজের বাসায় চেয়ারম্যানের নির্দেশে হত্যা করা হয় আওয়ামীলীগ নেতা মহিউদ্দিনকে।
সূত্রমতে, ১৪ জুন রাতে চেয়ারম্যান ভুট্টুর বাসায় আওয়ামীলীগ নেতা মহিউদ্দিনের হত্যার ছক আঁকা হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৫ জুন রাত দেড় টার দিকে অর্থাৎ ১৬ জুন দিবাগত রাতে মহিউদ্দিনের বাসায় তাকে গুলি করা হয়। সেখান থেকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে আওয়ামীলীগ নেতা ডাঃ মহিউদ্দিন। ওই সূত্রের মতে, হামলার সময় মহিউদ্দিনের বাড়ির বাইরে অবস্থান করছিলো ভুট্টু চেয়ারম্যান। আর অন্যরা বাসায় ঢুকে পড়ে। তবে মহিউদ্দিনের উপর গুলি চালায় মামলার ৩ নং আসামী নুরুন্নবী। ঘটনার পর মামলা না নেওয়ার জন্য নানা কায়দা করলেও অবশেষে আদালতের নির্দেশে তার বিরুদ্ধে মামলা নেয় পুলিশ। তবে মামলা থেকে রেহায় পেতে পুরোনো নাটক নতুন করে সাজানোর চেষ্ঠা করছেন ভুট্টু চেয়ারম্যান। সাধারণ জনগণকে ব্যবহার করে আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে অনেকটা ‘শাক দিয়ে মাছ ঢাকার’ অপচেষ্ঠা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ মহিউদ্দিনের পরিবারের।
নিহত মহিউদ্দিনের পিতা ফয়েজ আহমদ মিয়া কান্না জড়িত কণ্ঠে এ প্রতিবেদককে বলেন, চেয়ারম্যান ভুট্টুই তার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। আর এখন মামলা তুলে নেয়ার জন্য হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও মামলা থেকে রেহায় পেতে নানা ধরণের নাটকের আশ্রয় নিচ্ছে। তিনি সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা, আইনশৃঙ্খলাবাহিনীসহ সবার কাছে ছেলে হত্যার বিচার দাবী করেন।
ঈদগড় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী নুরুল আলম জানান, ডাঃ মহিউদ্দিন ছিলো ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের প্রচার সম্পাদক। দীর্ঘদিন ধরে চেয়ারম্যানের সাথে তার দ্বন্দ্ব চলে আসছিলো। বিভিন্ন সময় মিথ্যা মামলায় মহিউদ্দিনকে সে জেলও কাটিয়েছে। অবেশেষে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে বলে দাবী করেন তিনি। তাই ক্ষমতাধর ব্যক্তির ইশারায় মূল হোতাকে বাদ না দিয়ে সুষ্ঠু বিচার দাবী করেন তিনি।
আওয়ামীলীগ নেতা মহিউদ্দিন হত্যা মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা ও রামু থানার ওসি (তদন্ত) আশরাফুজ্জামান বলেন, ওই ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলা তদন্ত চলছে। এরই মধ্যে একজনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদেরও গ্রেফতারের চেষ্ঠা চলছে।
রামু উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সোহেল সরওয়ার কাজল বলেন, মহিউদ্দিন ছিলো মূলত বর্তমান চেয়ারম্যানের দ্বারা নির্মম নির্যাতনের শিকার একজন ব্যক্তি। মহিউদ্দিনের দোষ ছিলো সে কখনোই প্রকৃত আওয়ীমীলীগ ছেড়ে ভুট্টুর কাছে মাথা নত করেনি। মহিউদ্দিনের বাড়ি লুটপাট করা হয়েছে, মেয়েকে অপহরণ করে ধর্ষণ করা হয়েছে কিন্তু কোন সময়ই পুলিশ মামলা নেয়নি। শেষ পর্যন্ত তাকে নির্মমভাবে খুন করা হলো।
তিনি আরো বলেন, খুনের ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলার এখনো চুড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল হয়নি। চুড়ান্ত রিপোর্ট থেকে বাদ পড়তে প্রকৃত আসামীরা দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। দোষি ব্যক্তি যত বড় ক্ষমতাধরই হোক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান তিনি।


শেয়ার করুন