বাঁকখালী নদী রক্ষায় ডিসিকে চার সংগঠনের চিঠি

প্রেস বিজ্ঞপ্তিঃ

কক্সবাজারের বাকখালী নদী রঢ়ক্ষা তা যথাযথ ভাবে সংরক্ষণ করতে জেলা নদী রক্ষা কমিটির সভাপতি ও কক্সবাজারের জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত চিঠি দিয়েছে পরিবেশ, মানবাধিকার, সামাজিক ও সাংবাদিকদের চারটি সংগঠন। বৃহস্পতিবার সংগঠনের নেতৃবৃন্দের এ চিঠি দেন।

চিঠিতে চারটি সংগঠনের পক্ষে স্বাক্ষর করেছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, বাংলাদেশ নদী পরিব্রাজক দলের সেক্রেটারি জেনারেল ইসলাম মাহমুদ, ইয়ুথ এনভায়রনমেন্ট সোসাইটি (ইয়েস), কক্সবাজার এর প্রধান নির্বাহী ইব্রাহিম খলিল মামুন, কক্সবাজার নাগরিক আন্দোলনের সদস্য সচিব ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাংগঠনিক সম্পাদক এইচ এম নজরুল ইসলাম ও রিপোর্টার্স ইউনিটি কক্সবাজার এর সাধারন সম্পাদক এম ওসমান গণী।

চিঠিতে বলা হয়েছে, দেশের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত পর্যটন নগরী কক্সবাজার শহরের অন্যতম প্রধান নদী বাঁকখালী। এ নদীটি বান্দরবানের পার্বত্য অঞ্চল থেকে উৎপত্তি হয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি, বাইশারী, রামু ও কক্সবাজার সদর উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয়েছে। আশির দশক পর্যন্ত কক্সবাজার থেকে টেকনাফ, মহেশখালী ও কুতুবদিয়া যাতায়াতের প্রধান পথই ছিল এ বাঁকখালী নদী। মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে দখল, দূষণ ও নদী সংলগ্ন প্যারাবন উজাড়ের মাধ্যমে এ নদী বর্তমানে হুমকির মুখে ও মৃত নদীতে পরিণত হতে চলেছে। নদীটিকে অবৈধ দখল ও দূষণমুক্ত করে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) ২০১৪ সালে হাইকোর্ট বিভাগে একটি জনস্বার্থমূলক মামলা দায়ের করে।
মামলার প্রাথমিক শুনানী শেষে গত ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৪ তারিখে মহামান্য আদালত বাঁকখালী নদীতে বিদ্যমান সকল দখলদার ও স্থাপনা উচ্ছেদের ও দূষণের উৎস বন্ধের নির্দেশ প্রদান করেন। একইসাথে আদালত বাঁকখালী নদী ও নদীর তীর ভিন্ন উদ্দেশ্যে ইজারা প্রদান করা থেকে বিরত থাকতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ প্রদান করেন। পরবর্তীতে বিগত ২০১৫ সালের ৬ জানুয়ারী আদালত কক্সবাজার পৌরসভাকে বাঁকখালী নদীতে বর্জ্য ফেলা থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ প্রদান করেন।

আদালতের নির্দেশের পরও কক্সবাজার পৌরসভা চরম অবিবেচকভাবে বাঁকখালী নদীতে প্রতিনিয়ত বর্জ্য ফেলছে ও বর্জ্য দিয়ে নদী ভরাট করে চলেছে। অধিকন্তু গত ১ বছর যাবত এ নদীর দুই তীরে প্রাকৃতিকভাবে ও পরিবেশ অধিদপ্তরের “কোস্টাল এণ্ড ওয়েটল্যাণ্ড বায়োডাইভারসিটি প্রকল্প” এর অধীন বনায়নের মাধ্যমে সৃষ্ট প্যারাবন কেটে সেখানে প্লট করে নদীর তীর দখল করেছে কতিপয় প্রভাবশালী ও তাদের ছত্রছায়ায় থাকা ব্যক্তিরা। দখল করে তৈরি করা প্লটে এখনও জোয়ারের পানি উঠছে এবং সেখানে কেটে ফেলা মৃত প্যারাবনের গাছ ষ্পষ্ট দৃশ্যমান হচ্ছে। নদীর তীর ও তীর সংলগ্ন প্যারাবন রক্ষায় আদালতের সুষ্পষ্ট নির্দেশনা থাকলেও এসব দখলদারদের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা এখন পর্যন্ত গ্রহণ করা হয়নি।
চিঠিতে জেলা প্রশাসকের কাছে তুলে ধরা দাবিগুলো হলো, আদালতের নির্দেশ প্রতিপালন করে বাঁকখালী নদীতে কক্সবাজার পৌরসভা কর্তৃক বর্জ্য ফেলা বন্ধ করতে হবে; নদী, নদীর তীর ও নদী সংলগ্ন প্যারাবন দখল ও দূষণমুক্ত করতে হবে, এবং নদী তীরস্থ প্যারাবনের সকল দখল উচ্ছেদ করে প্যারাবন ফিরিয়ে আনতে হবে। দখলদারদের হাত থেকে জনগণের সম্পত্তি উদ্ধার করে সুরক্ষিত করতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত প্যারাবন ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি সকল দখলদারদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কক্সবাজার পৌরসভাকে বর্জ্য ফেলার জন্য ইতোমধ্যে নির্বাচিত বিকল্প স্থানে বর্জ্য ফেলতে বাধ্য করতে হবে।


শেয়ার করুন