৩৮ ইউনিয়ন ক্ষতিগ্রস্ত : গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার

বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে জেলা প্রশাসক’র সংবাদ ব্রিফিং

DC-Pic----শাহেদ ইমরান মিজান, সিটিএন:

টানা প্রবল বৃষ্টিতে সৃষ্ট দ্বিতীয় দফা বন্যা ও ঘূর্ণিঝড় ‘কোমেন’র প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে জেলার ৩৮ ইউনিয়ন চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আরো অন্তত ৫টি ইউনিয়ন আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে এসব ইউনিয়নের প্রায় সব মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত ও দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেড়িবাঁধসহ নানা স্থাপনা। শনিবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে জেলা প্রশাসক মোঃ আলী হোসাইন এই তথ্য জানান।

জেলা প্রশাসক জানান, বন্যায় চকরিয়ার ৮ ইউনিয়ন, রামুর ১০ ইউনিয়ন, পেকুয়া ৬ টিই, কুতুবদিয়ার ৩ ইউনিয়ন, মহেশখালীর ৩ ইউনিয়ন, টেকনাফের ২ ইউনিয়ন, কক্সবাজার সদরের ২ ইউনিয়ন ও উখিয়ার ১টি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া কুতুবদিয়া ও পেকুয়ার আরো বাকী ৩ ইউনিয়ন এবং চকরিয়ার ৩ ইউনিয়ন আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এর মধ্যে রামু, কক্সবাজার সদর ও উখিয়া ছাড়া অন্যান্য উপজেলায় বন্যার সাথে ঘূর্ণিঝড় ‘কোমেন’র প্রভাবে সাগরের প্রবল জলোচ্ছ্বাসও আঘাত করেছে। এতে এসব এলাকার সদ্য মেরামতকৃতসহ বিস্তীর্ণ বেড়িবাঁধ সাগরে বিলীন হয়ে গেছে। সাগরের পানিতে বেশি ক্ষতি হয়েছে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ, সেন্টমার্টিন, কুতুবদিয়ার ও পেকুয়ার অধিকাংশ এলাকা।

সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, বন্যা কবলিত লোকজনের মাঝে ত্রাণ বিতরণসহ সার্বিক সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে জেলা প্রশাসন। এরই মধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৩১৪ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ৮ লাখ ৫ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে কক্সবাজারে সদরে ৩৩ মেট্রিক টন চাল ও ৩৫ হাজার টাকা, কক্সবাজার শহরে ২লাখ টাকা, রামুতে ৬০ মেট্রিক টন চাল ও ৯৫ হাজার টাকা, চকরিয়ায় ১০৫ মেট্রিক টন চাল ও ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা, পেকুয়ায় ৩৩ মেট্রিক টন চাল ও ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা, মহেশখালীতে ১৯ মেট্রিক টন চাল ৫০ হাজার টাকা, কুতুবদিয়ায় ২৪ মেট্রিক টন চাল ও ১ লাখ ১০ হাজার টাকা এবং উখিয়ায় ৫ মেট্রিক টন চাল ও ৩০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। স্ব-স্ব উপজেলা থেকেও একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ পাওয়া আরো ১৮৬ মেট্রিক টন চাল ও ১০ লাখ টাকা উবৃত্ত রয়েছে। এসব চাল ও টাকা পর্যায়ক্রমে বিতরণ করা হচ্ছে।

সংবাদ বিফ্রিং-এ ক্ষয়ক্ষতি ও ত্রাণ প্রসঙ্গ ছাড়াও বন্যার কারণ ও উত্তরণ নিয়ে আলোচনা করা হয়। এসব আলোচনায় কারণ হিসেবে নদী দখল ও ভরাট, দূর্বল বেড়িবাঁধ ও স্লইচগেইটে অপরিকল্পিত রক্ষণাবেক্ষণকে দায়ী করা হয়। এছাড়া দীর্ঘ ৪ বছর ধরে সাগরের করাল গ্রাসের শিকার শাহপরীর দ্বীপ নিয়ে বিশেষ আলোচনা স্থান পায়। এসব সমস্যা উত্তরণে উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের পরামর্শ নেন জেলা প্রশাসক।
জেলা প্রশাসক মোঃ আলী হোসাইন বলেন, ‘কক্সবাজারের বন্যা পরিস্থিতিকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। এই জন্য বিশেষ ভাবে তদারক করছে ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়। পরিস্থিতি উত্তরণে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে সরকার। আরো বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। তা দেয়ারও আশ্বাস দিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, ‘সরকারের পাশাপাশি আমরা যে অবস্থানে আছি তাদেরও এগিয়ে আসতে হবে। বন্যা দুর্গতরা যাতে কোন ভাবেই কষ্ট না পায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।’

আশঙ্কা থাকায় আগামী অমাবশ্যার তিথির আগেই ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ মেরামত করতে উদ্যোগ নেয়া হবে বলে জানান তিনি।


শেয়ার করুন