বন্যায় পানিবন্দি চট্টগ্রাম

ctg-floodসিটিএন ডেস্ক:

পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় বৃহত্তর চট্টগ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকার লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। শহর থেকে পানি নামলেও পার্শ্ববর্তী এলাকাসহ জেলার প্রত্যেকটি উপজেলা এখনও পানির নিচে। বেশ কয়েকটি এলাকায় খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন স্থানে ভেঙে গেছে সড়ক-মহাসড়ক।

জানা গেছে, বান্দরবান-কেরানিহাট-চট্টগ্রাম সড়কের প্রায় ৮ কিলোমিটার এলাকা এখনও পানির নিচে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চন্দনাইশের হাশিমপুর এলাকায় সড়কের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বন্যার পানি। জেলার বিভিন্ন উপজেলার সাথে ইউনিয়নগুলোর সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে আছে দু’দিন ধরে।

এছাড়া জেলার বন্যা কবলিত ৯টি উপজেলার বেশিরভাগ এলাকায় কয়েকদিন ধরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। সাঙ্গু নদী থেকে বন্যার পানি ঢুকে প্রায় পুরো সাতকানিয়া ভাসছে এখন বন্যার পানিতে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষাধিক মানুষ।

পাহাড়ি ঢলে বাঁশখালীর মানুষের জনজীবনে কার্যত বিপর্যয় নেমে এসেছে। দুই লক্ষাধিক মানুষ বর্তমানে পানিবন্দি অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছে। কয়েক হাজার কাঁচা বাড়িঘর পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাঁশখালীর পুকুরিয়া থেকে পুঁইছড়ির প্রেম বাজার পর্যন্ত ১৪টি ইউনিয়নে এবং পৌরসভার জলদীসহ পশ্চিমাঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ এখন পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। রাস্তাঘাট পানির নিচে থাকায় উপজেলা সদরের সাথে পশ্চিমাঞ্চলের অধিকাংশ এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

পাহাড়ি ঢলে পানি মন্দাকীনি খাল, সোনাইখাল, মনাইখাল, ধলই খাল, বিপুলাখাল, কুমারীখাল, বদরখালী, চারিয়াখাল, হালদাপ্যারালাল, মুন্দারীছরা, পৌরসভার মরা ছরা, আলাওলখাল, চেংখালী, দুবলীছরা, বোয়ালিয়া খাল, মরাবোয়ালিয়া, পোড়াকোপালী,খন্দকীয়া ছরা সহ বিভিন্নখাল ও ছরা খালের পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। স্থান বিশেষে এসব খাল ও ছরা খালের বেড়ি বাঁধ ভেঙে গিয়ে পার্শ্ববর্তী ফসলী জমিতে বালির ও পলির স্তর পড়ে গেছে। এদিকে বন্যার কারণে দুর্ভোগে পড়েছে রাউজান এবং মীরসরাইয়ের মানুষও।

নগরীর পাশ্ববর্তী এলাকায়ও জমে আছে বন্যার পানি। হাটহাজারী, কালুরঘাট, মোহরাসহ বেশ কয়েকটি এলাকা থেকে এখনও নামেনি জোয়ারের পানি।

এদিকে মাত্র দিন কয়েকের ব্যবধানে নগরীর অলি গলি রাজপথ আবারো খানাখন্দকে ভরে গেছে। চার দিনের টানা বর্ষণে নগরীর প্রায় আটশ’ কিলোমিটার রাস্তা জুড়ে সৃষ্টি হয়েছে বিশাল বিশাল খানাখন্দক। নগরজুড়ে যান চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। নগরীর বিভিন্নস্থানে অসংখ্য গাড়ি নষ্ট হয়ে আটকা পড়তে দেখা গেছে। ঈদের আগে নষ্ট সড়ক সংস্কার করা হলেও মাত্র তিন দিনের বৃষ্টিতে সব কিছু আবারো লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে।

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন বলেন, ‘বন্যা কবলিত এলাকায় তাৎক্ষণিক সহায়তা দেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে বন্যা কবলিতদেরকে সাড়ে ৪ লাখ টাকা বিররণ করা হয়েছে। এছাড়া শুকনো খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।’


শেয়ার করুন