বন্যপ্রাণী আইন লঙ্ঘন, হাওয়া’র বিরুদ্ধে ২০ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ মামলা

ডেস্ক নিউজঃ

বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ লংঘনের অভিযোগে ২০ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ চেয়ে আলোচিত চলচ্চিত্র হাওয়া-এর পরিচালক মিসবাউর রহমান সুমনের নামে মামলা করেছে বন বিভাগের বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট।
বুধবার ( ১৭ আগস্ট) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে মামলাটি করা হয়। বন বিভাগ ও আদালতের একাধিক সূত্র বাংলাভিশনকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ এর ধারা ৩৮ (১-২), ৪১ ও ৪৬ লংঘনের অভিযোগে মামলাটি করেছে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট। মামলায় বাদী হয়েছেন বন্যপ্রাণী পরিদর্শক নারগিস সুলতানা। স্বাক্ষী করা হয়েছে তদন্ত কমিটিতে কাজ করা অপর ৩ সদস্য আব্দুল্লাহ আস সাদিক, অসীম মল্লিক ও রথিন্দ্র কুমার বিশ্বাসকে।

তবে মামলার বিষয়ে গণমাধ্যমে কোনো কথা বলতে রাজি হননি মামলার বাদি এবং স্বাক্ষীরা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিচালক মো. ছানাউল্যা পাটওয়ারী বাংলাভিশনকে বলেন, সব প্রস্তুত করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এতক্ষণে মামলা হয়ে যাওয়ার কথা।

এর আগে, গত ২৯ জুলাই চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায়। মুক্তির পর দৈনিক প্রথম আলোতে প্রকাশিত চলচ্চিত্রটির রিভিউতে জানা যায়, এই চলচ্চিত্রে একটি পাখিকে হত্যা করে চিবিয়ে খেয়েছেন অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। বিস্তারিত বর্ণনা করে বলা হয়, মাছ ধরা বোট নয়নতারার সরদার চান মাঝি একটা পাখি পোষে। নিজে জলপানের সময় পাখির খাঁচার খুরিতেও সে জল ঢেলে দেয়। নিয়ম করে খেতে দেয় পাখিটিকে। আবার পথ হারিয়ে এই শালিককে উড়িয়ে দেয় সে। পোষা পাখির ফিরে না আসায় আশা খোঁজে। তারপর পাখি ফিরে আসে। সেটিকে পুড়িয়ে উদরস্থ করতেও সময় লাগে না চানের। হলভর্তি দর্শক চোখমুখ কুঁচকে ‘চান’ চরিত্রে চঞ্চল চৌধুরীর চিবিয়ে চিবিয়ে পোষা পাখির হাড়মাংস খাওয়া দেখেন। তীব্র রোমাঞ্চ আর ঘৃণা নিয়ে তাকান। দৃশ্যটি তাদের মাথায় গেঁথে যায় অনেক দিনের জন্য।

রিভিউ প্রকাশের পর হাওয়া চলচ্চিত্রে একটি শালিক পাখিকে খাঁচায় আটকে রাখা ও এক পর্যায়ে হত্যা করে খাওয়ার দৃশ্য দেখানোর মাধ্যমে বন্যপ্রাণী আইন লংঘন হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেন প্রেক্ষাগৃহফেরৎ দর্শকরাও। এ নিয়ে আইন লংঘনের বিষয়টি তুলে ধরে প্রতিবেদন প্রকাশ করে বাংলাভিশন। তারপর গত ১০ আগস্ট এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বির্বৃতি দেয় দেশে পরিবেশ নিয়ে কাজ করা ৩৩টি সংগঠনের সমন্বিত প্রয়াস বাংলাদেশ প্রকৃতি সংরক্ষণ জোট (বিএনসিএ)। এর পরদিন প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে চলচ্চিত্রটি দেখে আইন লংঘনের প্রমাণ মিলেছে বলে নিশ্চিত করেন বন অধিদফতরের গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা।

সান মিউজিক অ্যান্ড মোশন পিকচার্স লিমিটেডের অধীনে প্রযোজিত এবং ফেসকার্ড প্রোডাকশনের অধীনে নির্মিত চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেছেন চঞ্চল চৌধুরী, নাজিফা তুষি, শরিফুল রাজ, সুমন আনোয়ার, সোহেল মণ্ডল, নাসির উদ্দিন খান, রিজভী রিজু প্রমুখ।


শেয়ার করুন