বন্ধু নির্বাচনে ইসলামের নির্দেশনা

5xkc_76876সিটিএন ডেস্ক:
মানুষ সামাজিক জীব। সমাজবদ্ধ জীবন ছাড়া মানুষের পক্ষে বাস করা কঠিন। কাউকে বিচ্ছিন্ন কোনো দ্বীপে ফেলে রেখে এলে তার জীবন বিপন্ন হওয়ার পথে চলে যাবে। সঙ্গ ছাড়া শত আরাম-আয়েশও বিবর্ণ মনে হয়। সৃষ্টির শুরু থেকেই মানুষ সঙ্গবদ্ধ জীবনযাপনে অভ্যস্ত। জান্নাতে সঙ্গহীন অবস্থায় আদিপিতা হজরত আদম (আ.)-এর সময়টুকু ভালো কাটছিল না। এজন্য তারই পাজর থেকে সৃষ্টি করা হয় বিবি হাওয়াকে (আ.)।
মানুষ পারিবারিক পরিমণ্ডলে এক ধরনের সঙ্গ পায়, সামাজিক পরিমণ্ডলে আরেক ধরনের সঙ্গ থাকে। আবার বৈশ্বিক পর্যায়ে সঙ্গ ছাড়া মানুষ চলতে পারে না। কথায় বলে সঙ্গী গুণে লোহা জলে ভাসে। সঙ্গী ভালো হলে মানুষের জীবন হয় সার্থক। আর সঙ্গী খারাপ হলে মানুষের জীবনে নেমে আসে অধঃপতন। এ জন্য ইসলাম সঙ্গী নির্বাচনে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছে।
পবিত্র কোরআনে নির্দেশ করা হয়েছে, ‘তোমরা সত্যবাদীদের সঙ্গ অবলম্বন কর।’ সত্যবাদীদের সান্নিধ্যেই মানুষের মুক্তির বিষয়টি অনিবার্য হয়। মানুষের হেদায়েতের জন্য আল্লাহ দুটি মাধ্যম দিয়েছেন একটি হলো কিতাবুল্লাহ বা আল কোরআন। আরেকটি হলো রিজালুল্লাহ বা সৎপরায়ণ ব্যক্তিরা। এর মধ্যে নবী-ওলীসহ সৎ ও ন্যায়পরায়ণ মানুষ অন্তর্ভুক্ত। সোহবত বা সান্নিধ্য গ্রহণ ইসলামেও জরুরি। তবে সেই সান্নিধ্য হতে হবে ভেবে-চিন্তে, সতর্কতার সঙ্গে নির্বাচিত। কথায় আছে সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস আর অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ। সঙ্গ নির্বাচনে সতর্কতার পরিচয় না দিলে মানুষকে সারা জীবন এর পরিণতি ভোগ করতে হয়।
রাসুল (সা.) বলেছেন, নিশ্চয়ই সৎ সঙ্গ ও অসৎ সঙ্গের উদাহরণ হলো আতর বিক্রেতা এবং কামারের মতো। ভালো বন্ধু কিছু ভালো গুণের উপদেশ বা অনুরোধ তাকে করবে। ফলে বন্ধু নিজের জীবনে তা ধারণ করে নেবে। সৎ, চরিত্রবান সমাজের সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ও বাবা-মায়ের চক্ষুশীতলকারী হবে। আর যদি ভালো বন্ধু কোনো উপদেশ নাও দেয়, তবু তুমি নিজ গুণে তার কাছ থেকে ভালো অভ্যাসগুলোর কিছু কিছু নিজের জীবনে ধারণ করতে পারবে। পক্ষান্তরে যদি কেউ খারাপ কাউকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করে, তাহলে সেও ওই কামারের সঙ্গ গ্রহণকারীর মতো। খারাপ বন্ধুর মন্দ দিকগুলো তার মধ্যেও বিস্তৃতি ঘটবে। এতে ধ্বংস হবে নিজের সুকুমারবৃত্তি; নষ্ট হবে সমাজ ও দেশ।

শেয়ার করুন