বসতবাড়ি ভাংচুর ও অগ্নিসংযো

বদরখালীতে জমির বিরোধ নিয়ে সংঘর্ষে নিহত ১ আহত ১০

Pic Bodorkhli-1শাহজালাল শাহেদ, চকরিয়া:

চকরিয়া বদরখালীতে জমির বিরোধকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষে এক যুবক নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরো ১০জন। তৎমধ্যে নিহতের মায়ের অবস্থা আশংকাজনক। ঘটেছে বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুরের ঘটনা। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের ২নং ব্লক ৩নং ওয়ার্ড কুতুবদিয়াপাড়া এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ইউনিয়নের ২নং ব্লক ৩নং ওয়ার্ড কুতুবদিয়াপাড়া এলাকার ৫৬০শতক জমি নিয়ে সাবেক চেয়ারম্যান হোসাইন আহমদ ও বদরখালী কৃষি উপনিবেশ সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক (সাবেক চেয়ারম্যান) ইকবাল বদরী গংয়ের সাথে মৃত আবু তাহেরের পুত্র হেলাল উদ্দিন শিপুর মাঝে বিরোধ চলে আসছিল। এরই জের ধরে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে আকষ্মিক গোলাগুলী শুরু হয়। গুলীবর্ষণের ঘটনা থেমে থেমে প্রায় ২ঘণ্টাব্যাপী অব্যাহত থাকে। এসময় স্থানীয়রা চকরিয়া থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয়। পুলিশ দলে নেতৃত্বে দেন থানার সেকেন্ড অফিসার রফিকুল ইসলাম।

Pic Bodorkhli-2একাধিক সূত্রের দাবি, ঘটনার সময় পুলিশদল পরিস্থিতি বেগতিক দেখে নিরাপদ স্থানে সটকে পড়ে এবং তাদের উপস্থিতিতেই বসতবাড়িতে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুর করে দুস্কৃতিকারীরা। তাদের অতর্কিত হামলায় গুরুতর আহত হয় নিহতের মা ছকিনা বেগম (৫০), বদিউল আলমের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম (৩৫), সরওয়ার আলমের স্ত্রী রুমা আক্তার (২৫), আলী আহমদের স্ত্রী রওশন আরা বেগম (৫৫), আবদু শুক্কুরের পুত্র রবিউল হাসান রুবেল (১৪), নাছির উদ্দিনের পুত্র হুমায়ুন কবির সুজন (১৭), আবদু শুক্কুর (১৫) ও মৃত মোজাফফর আহমদের পুত্র আবদু শুক্কুর (৬০)।

আহতদের উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এতে গুরুতর আহত ছকিনা বেগমের অবস্থা আশংকাজনক বলে পরিবার দাবি করেন। নিহতের পরিবার জানায়, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হোসাইন আহমদ ও ইকবাল বদরীর নেতৃত্বে ওয়াইজ উদ্দিনের পুত্র মাহবুবুল আলম, মৃত কবির আহমদের পুত্র ইসতফাজ, হোসাইন আহমদের পুত্র সোহরাব মোস্তফা রিকন, মো. কালুর পুত্র নুরুল কাদের, মোজাহের মাস্টারের পুত্র কফিল উদ্দিন ও মাহবুবুল আলমের পুত্র রিয়াদসহ ৩০/৪০ জনের সংঘবদ্ধদল অতর্কিত অবস্থায় বেপরোয়াভাবে তাদের ওপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা তা-ব চালিয়ে বসতবাড়ির আসবাবপত্র ভাংচুর করে। তছনছ করে ফেলে ভিটের ঘেরা বেড়া। এতেও ক্ষান্ত না হয়ে অগ্নিসংযোগ করে দুস্কৃতিকারীরা বাড়ির গুরুত্বপূর্ণ মালামাল ও ঘেরা বেড়া পাশ্ববর্তী খালে ফেলে দেয়। এদিকে স্বজন ও স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে নিহত হেলাল উদ্দিন শিপু (৩০)’র পড়ে থাকা মৃতদেহ উদ্ধার করে বিক্ষোভ করতে থাকে। রাত ৩টার দিকে লাশ থানায় নিয়ে আসার চেষ্টা করলে বিক্ষুব্ধ জনতার রোষানলে পড়ে পুলিশ।

অপরদিকে নিহতসহ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনায় বদরখালী নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ হিসেবে এস.আই মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক চৌধুরীর রহস্যজনক ভূমিকা নিয়েও নানান প্রশ্ন দেখা দিয়েছে এলাকাবাসী ও সচেতন মহলের মাঝে।

সর্বশেষ বুধবার ৪অক্টোবর সকাল ৮টার দিকে লাশটি কক্সবাজারের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (চকরিয়া সার্কেল) মো. মাসুদ আলমের নেতৃত্বে চকরিয়া থানায় নিয়ে আসা হয়।

চকরিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামরুল আজম জানান, লাশ ময়না তদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।


শেয়ার করুন