বই উৎসবে মেতেছে নাইক্ষ্যংছড়ি ও গর্জনিয়ার শিক্ষার্থীরা

02হাফিজুল ইসলাম চৌধুরী :  

সকাল ৮টা। পৌষের কনকনে শীত, কুয়াশা উপেক্ষা করে নতুন বইয়ের আশায় শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গণে অভিভাবক নিয়ে হাজির। উদ্দেশ্য নতুন বছরের নতুন বই পাবে, নতুন স্বপ্ন নিয়ে নতুন উদ্দামে লেখাপড়ায় মনোযোগী হবে। শিক্ষার্থীদের উৎসাহ-উদ্দীপনা ও উৎসব চোখে পড়ার মতো। আনন্দঘন মুহূর্ত শেয়ার করার উদ্দেশ্যে সারাদেশের মত নাইক্ষ্যংছড়িতেও বই উৎসবে যোগ দেন অধিকাংশ অভিভাবক এবং শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি রামুর গর্জনিয়া ও কচ্ছপিয়া ইউনিয়নেও পালিত হয়েছে বই উৎসব। বৃহষ্পতিবার (১ জানুয়ারি) শিক্ষাপঞ্জি শুরুর প্রথম দিন সকাল নয়টা থেকে উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিভিন্ন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের হাতে নত্নু বই তুলে দেয়া হচ্ছে। রং-বেরঙের মলাটের নতুন বই হাতে পেয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে উচ্ছাসিত হতে দেখা গেছে শিক্ষক ও অভিভাবকদের।

বছরের প্রথম দিনে নাইক্ষ্যংছড়ি বর্ডার গার্ড সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার আবু আহমদ। একই সাথে উপজেলার ১ নং মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিয়ে উৎসবের শুভ উদ্ধোধন করেন উপজেলা চেয়ারম্যান তোফাইল আহমদ ও উপজেলা নির্বাহি অফিসার (ইউএনও) আবু সাফায়াৎ মুহাম্মদ শাহে দুল ইসলাম।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার আবু আহমদ এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, বছরের শুরুতেই উপজেলার ৫৪টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২টি বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি ওয়ামি একাডেমি, ২টি কে.জি স্কুল, ২২টি শিখন স্কুল, রক্সের ৪০টি বিদ্যালয়, ডিপিওডির একটি, ব্রাকের ২টি ও ইউএনডিপির ১৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বছরের শুরুতেই নতুন বই হাতে পেয়েছে। তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকার শিক্ষা বান্ধব বলেই এটা সম্ভব হয়েছে। কারণ শিক্ষাপঞ্জি শুরুর অগেই উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণীর জন্য ৩ হাজার ২০৩, দ্বিতীয় শ্রেণীর জন্য ৩ হাজার ৪১৪, তৃতীয় শ্রেণীর জন্য ২ হাজার ৮৮৯, চতুর্থ শ্রেণীর জন্য ২ হাজার ৮৯৮ এবং পঞ্চম শ্রেণীর জন্য ১ হাজার ৭৬৪ সেট বই সরবরাহ করা হয়েছে।

নাইক্ষ্যংছড়ি বর্ডার গার্ড সরকারী প্রথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল বাশার জানিয়েছেন, সরকার কর্তৃক বিনামুল্যের পাঠ্য বই গুলো দেশে জামায়াত-বিএনপির নরাজ্যে এবং প্রতিনিয়ত যানবাহনের উপর তান্ডব চালানোর পরও সেসব বাধাকে উপেক্ষা করে বাংলাদেশের শেষ পান্তে যথাসময়ে বই পৌঁছে দিয়ে সরকার বিছক্ষণতার পরিচয় দিয়েছে। সারা দেশে সময় মত বই বিতরণ করা হচ্ছে বলেই সমস্ত পরীক্ষায় ভাল ফলাফল করতে পেরেছে শিক্ষার্থীরা। কচ্ছপিয়া নাপিতেরচর কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম সওদাগর বলেন, বছরের শুরুতে শিশু শিক্ষার্থীরা বই পাওয়ায় পড়া লেখায় আগ্রহ বেড়ে যাবে। ফলে দেশ সামগ্রীকভাবে শিক্ষায় অধিক অগ্রসর হবে।

গর্জনিয়া উচ্চ বিদ্যালয় :

বহু উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে গর্জনিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে বই বিতর উৎসব শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় স্কুল প্রাঙ্গনে এ উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ এইচ.এম. মনিরুল ইসলাম। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য বক্তব্য রাখেন, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তৈয়ব উল্লাহ চৌধুরী।

এ সময় তিনি বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার শিক্ষা বান্ধব বলেই বছরের শুরুতে বই পেয়েছে শিক্ষার্থীরা। সারা দেশে বিরুধী জোটের নেতারা হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি দেওয়ার পরও সদ্য ঘোষিত জেএসসি ও পিএসসি পরিক্ষায় ভাল ফলাফল সারা দেশের জন্য অভাবনীয় সাফল্য বয়ে আনবে। বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মিল্টন দত্তের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির শিক্ষানুরাগী সদস্য আওয়ামীলীগ নেতা হাবিব উল্লাহ চৌধুরী, পরিচালনা কমিটির সদস্য আবু তাহের, বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক আহমদ শাহ বাবুল, আবুল কাশেম, ফখর উদ্দিন, আসহাব উদ্দিন, আবু মুছা কুতুবি, সুকুমার বড়–য়া, কায়সার জাহান চৌধুরী, অসিত পাল, মো: জাকারিয়া, সিমলা প্রভা দে, মোহাম্মদ হাসেম, মোহাম্মদ ইউসূফ প্রমূক। আলোচনা সভা শেষে বিদ্যালয়ের ৬ষ্ট থেকে নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের মাঝে নতুন বই তুলে দেন অতিথিবৃন্দরা।

পোয়াংগেরখীল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় :

গর্জনিয়া ইউনিয়নের পোয়াংগেরখিল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও গর্জনিয়া বিদ্যাপীঠেও বই বিতরন উৎসব শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে ওই দুই প্রতিষ্ঠানে বই বিতরন অনুষ্ঠানের উদ্ভোধন করেন গর্জনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তৈয়ব উল্লাহ চৌধুরী। এসময় উপস্থিত ছিলেন, পোয়াংগেরখিল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিজুল হক হেলালি, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি সোলতান আহমদ চৌধুরী, গর্জনিয়া উচ্চ বিদ্যালয়রে সিনিয়র শিক্ষক আসহাব উদ্দিন, কায়সার জাহান চৌধুরী, পোয়াংগেরখীলের সিনিয়র শিক্ষক আহমদুর রহমান, ছিদ্দিকুল আজাদ, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য আয়েশা খানম চৌধুরী, বিদ্যাপীঠের শিক্ষক ফাতেমা আক্তার রিনা, শিল্পি শর্মা, অভিভাবক মনি আলম প্রমূখ।


শেয়ার করুন