ফিলিস্তিন সঙ্কট ও মুসলিম বিশ্ব

ast-400x208সিটিএন ডেস্ক:

ইসলাম ভ্রাতৃত্ব বন্ধনে গুরুত্ব দিলেও আজ মুসলিম বিশ্ব ঐক্য সংহতি ও দৃঢ়বদ্ধতা থেকে অনেক দূরে। কোনো দেশ ইহুদি খ্রিস্টানদের হাতে নিপীড়িত হলেও চুপ মেরে বসে থাকে ভিনদেশি মুসলমানরা।
যুগ যুগ ধরে ফিলিস্তিনিরা ঈসরায়েলিদের দ্বারা আক্রান্ত হলেও নিশ্চুপ মুসলিম বিশ্ব। গত শুক্রবারও ইসরায়েলের নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ৬ জন বেসামরিক লোক নিহত হয় । এ ঘটনার এক সপ্তাহ আগে ইসরায়েলের নিরাপত্তাবাহিনী দিনের আলোতে প্রকাশ্যে গুলি করে মারে এক ফিলিস্তিনি নারীকে। চলতি বছরে ইহুদীদের পেট্রোল বোমার আগুনে পুড়ে নিহত হয় এক ফিলিস্তিনি নবজাতকসহ তার বাবা মা। বিশ্ব গণমাধ্যমে এসব ঘটনা প্রতিবাদের ঝড় উঠলেও ইসরায়েল ক্ষান্ত নয় তাদের বর্বর হত্যকা- থেকে। ইসরায়েলের এ বর্বরতা ঠেকাতে মুসলিমবিশ্বগুলোরও নেই কোনো শক্তিশালী প্রতিবাদ।
সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো তাদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে ইসরায়েলকে দাদা ডেকে ডেকেই হয়রান। অথচ এসব অন্যায়, অত্যাচার, নির্যাতন মোকাবেলার সারা বিশ্বে মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ থাকার প্রতি আহ্বান করেছে ইসলাম।
ইসলাম মতে, কোনো সমাজ বা গোত্রে শান্তি সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য ভ্রাতৃত্ব বন্ধন গুরুত্বপূর্ণ। ভ্রাতৃত্ব বন্ধন ছাড়া ঐক্য প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। আর ঐক্যবদ্ধ জাতিকে কারও পক্ষে হারানো দুঃস্বাধ্য। ইসলাম ভ্রাতৃত্ব বন্ধনের প্রতি গুরুত্ব দিয়েছে অত্যাধীক। মুসলিম জাতিকে ঐক্যবদ্ধ থাকার জন্য মুহাম্মদ সা. ঘোষণা করেন, ‘মুসলিম মুসলিমের ভাই।’ এ ভ্রাতৃত্ব বন্ধনে দেশ গোত্র জাতির কোনো ভেদাভেদ নেই। দেশের ব্যবধান ডিঙিয়ে, জাতির ভেদাভেদ ভুলে বিশ্বের সকল মুসলিমরা একই জাতি একই জাতির পরিচয়। কোনো মুসলমানের এক অঙ্গ ব্যথিত হলে সকল মুসলমানেরই অঙ্গ ব্যথিত হবে।

হুজুর সা. বলেন, ‘মুসলিম জাতি এক ব্যক্তির ন্যায়। এক দেহের কোনো অঙ্গ ব্যথিত হলে সারা শরীর বা অঙ্গই সে ব্যথা উপলব্ধি করতে পারে। তেমনি এক চোখে ব্যথা হলে সারা শরীরেই সে ব্যথার একটা প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। এমনিভাবে মাথায় ব্যথা হলে সারা দেহেই সে ব্যথার প্রতিক্রিয়া ছড়িয়ে যায়।’
মুহাম্মদ সা. এ হাদিসটির মাধ্যমে মুসলিম জাতির ঐক্য সংহতির প্রতি আহ্বান করেন। সেই সঙ্গে কোনো মুসলমান ব্যথিত হলে সারা বিশ্বের মুসলমানদের ব্যথা অনুভব করার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। এ ভাবেই ইসলাম মুসলিম জাতিকে ঐক্যবদ্ধ থাকার প্রতি আহ্বান জানায়। ইসরায়েলের হাত থেকে ফিলিস্তিনিদের মুক্তি ও মসজিদে আকসার সম্মান রক্ষা শুধুমাত্র নিপীড়িত ফিলিস্তিনিদেরই দায়িত্ব নয়, এ দায়িত্ব গোটা মুসলিম বিশ্বের। মুসলিম বিশ্ব ঐক্যবদ্ধ হলে এ সঙ্গক মোকাবেলা সময়ের ব্যাপার মাত্র।


শেয়ার করুন