ফাগুনের আগুন নাকি পেটের!

falgun-pসিটিএন ডেস্ক

বাংলাদেশে দিন দিন প্রসারিত হচ্ছে ফুলের ব্যবসা। এই ব্যবসায় পুরুষের সাথে নারীরাও বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত আছেন। নিজের জন্য নয়, অন্যের জন্য মালা গাঁথেন তারা। আজ বসন্তের প্রথম দিনে ফাল্গুনের উৎসবেও ফুলের ব্যবসায়ীদের কাছে আসবেন নানা বয়সের মানুষ। কিন্তু ফুল নিয়ে যাদের সারা বেলা কেটে যায় তাদের জীবনেও কোন উৎসব বা ফাল্গুনের ছোঁয়া কি লেগেছে কখনও।

মিষ্টি গন্ধে আর নানা রংয়ের ফুলে ঢাকার শাহবাগে গড়ে উঠা ফুলে লেগেছে উৎসবের দোলা। মানুষের আনাগোনা আর মৌমাছির গুঞ্জন এখানে নিত্যকার দৃশ্য। তবে এখন সেটা দ্বিগুন হয়ে গেছে। কারণ চারপাশে লেগেছে ফাল্গুনের ছোঁয়া।

ফুলের চাহিদা বেড়েছে তাই বিভিন্ন চাহিদা মেটাতে ফুল ব্যবসা এখন দারুন জমজমাট। এই ব্যবসায় পুরুষের সাথে নারীরাও কাজ করেন। তেমনি একজন নারী কর্মী আছমা বেগম। তিনি ফুলের কাজে যুক্ত।

আছমা বেগম বলেন, ‘ফুলের ব্যবসা করে আমি অনেক ভাল আছি। ফুলের জগতে কাজ করে আমার মেধা খুলেছে। আমি অনেক ধরনের কাজ শিখেছি। যার কারণে আমার ফুল ব্যবসা অনেক ভাল লাগে’।

আছমা বেগমের মত অনেক নারী রয়েছে যারা নিজেদের জন্য নয় অন্যের জন্য মালা গাঁথেন। তার মধ্যে একজন মোছা. বিলকিস অন্যের জন্য মালা তৈরি করেই আনন্দ খুঁজে পান।

মোছা. বিলকিস বলেন, ‘যেহেতু ফুলের মধ্যে সবসময় থাকি তার জন্য ফুলের ব্যাপারে খুব একটা আশা আকাঙ্খা নাই। নিজের জন্য কখনই মালা বানাইনা। মানুষের জন্য মালা বানাতেই বেশি ভাল লাগে’।

সাত বছরের মেয়ে পুতুল। দেখতে পুতুলেরমত হলেও যে বয়সে অন্য শিশুদেরমত খেলাধুলা নিয়ে ব্যস্ত থাকার কথা। কিন্তু ছোট্ট পুতুল নেমেছে জীবিকার তাগিদে।

পুতুল বলেন, ‘আমি ফুল বিক্রি করে মা’রে টাকা দেই। আমার মায় খুশি হয়’।

উৎসবের মাসে বেড়েছে ফুলবিক্রেতাদের ব্যস্ততা। এই ব্যস্ততায় খুশি ফুলবিক্রেতারাও। তবে ফাল্গুন নাকি পেটের আগুন কোনটা আসলে মূল?

ইয়াসমিন নামে এক ফুলের ব্যবসায়ী বলেন, ‘বেচা কিনি করলে আমার মনে আনন্দ লাগে। যদি ভাল বিককিরি না হয় তাহলেও আমার মনডা খারাপ হইয়া যায়। সারাদিন পরিশ্রম করার পরে যদি টাকা কম হয় তাহলে লাভ হইল কি। তারপরেও কষ্ট নিজের মধ্যে রাখি যে নিজের ব্যবসা পরেরতো না’।

পেটের দায়ে হোক বা ভাল লাগা থেকে হোক দিন রাত ফুল বিক্রেতারা কাজ করছে। কিন্তু উৎসব কিংবা ফাল্গুনের আনন্দ কি তাদের একটুও ছুঁয়ে যায় না।

মাহিনুর নামে এক ফুল বিক্রেতা বলেন, ‘সবার ভাল লাগা মানে আমার ভাল লাগা। কারণ আমার গাথা মালা সবাই মাথায় পড়ে ঘুরতাছে এটাই আমার কাছে খুব আনন্দের বিষয়। দেখতে দেখতে নিজের শখ মিটে যায়। নিজে কখনও মালা পড়ার শখ জাগে না’।

তবে যার কারণেই হোক ফুলের মালায় অন্যের মাঝে স্বপ্ন বিলিয়ে নিজেদের খাবার যোগান সেটাই মুল বিষয়।

বিবিসি বাংলা থেকে নেয়া


শেয়ার করুন