প্রান্তিক জনগোষ্ঠির সুচিকিৎসায় বিজিবির মেডিক্যাল ক্যাম্প

pic-ha-15-09-2015হাফিজুল ইসলাম চৌধুরী, লামা থেকে ফিরে :
যুগ যুগ ধরে চিকিৎসাবঞ্চিত বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালির অন্তত বার গ্রামের গরীব ও দু:স্থ বাঙালি এবং পাহাড়ী জনসাধারণের মাঝে বিনামূল্যে ‘মেডিকেল ক্যাম্পেইন’ পরিচালনা করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের সদস্যরা।
নাইক্ষ্যংছড়ি জোনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় সম্প্রীতি ও উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দিনব্যাপি ইউনিয়নের বনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এ ‘মেডিকেল ক্যাম্পেইন’ অনুষ্ঠিত হয়।
সরজমিনে দেখা যায়, বান্দরবান সেনা রিজিয়নের অধীনস্থ ৭ ফিল্ড এ্যাম্বুলেন্স ইউনিট থেকে আগত চিকিৎসকদের মাধ্যমে এসময় দন্ত, সাধারণ স্বাস্থ্য (মেডিসিন), শিশু স্বাস্থ্য, প্রসূতি সেবা ও পরিবার পরিকল্পনা উপর আলোচনা, পরামর্শের পাশাপাশি প্রায় এক হাজার দুইশ নারী, পুরুষ ও শিশুকে বিনামূল্যে ঔষুধ বিতরণ করা হয়।
এর আগে সকাল ১০টায় কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন নাইক্ষ্যংছড়ি জোন ও ৩১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে.কর্ণেল মো.হাসান মোরশেদ পিএসসি জি প্লাস। এসময় তিনি বলেন, স্বাস্থ্য সেবা পাওয়া মানুষের মৌলিক অধিকার। বিজিবি নাইক্ষ্যংছড়ি জোন এলাকায় গরীব দুঃখী অসহায় ও পাহাড়ী-বাঙালী জনসাধারণের জন্য চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছে। ইতিমধ্যে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ও দোছড়ি ইউনিয়নে এ ধরণের মেডিক্যাল ক্যাম্পেইন সম্পন্ন করা হয়েছে। এবং কর্তৃপক্ষের এ উদ্যোগ আগামীতেও অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, চিকিৎসা ও শিক্ষা উন্নয়নের মাধ্যমে আর্থসামাজিক পরিবর্তন ঘটে। এ চিকিৎসা শিবিরে সকল ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ চিকিৎসা সেবা ও বিনামূল্যে ঔষুধ গ্রহণ করার সুযোগ রয়েছে। এ ধরনের চিকিৎসা সেবার মাধ্যমে জনগণের মাঝে সম্প্রীতি ও উন্নয়ন অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এসময় ৭ ফিল্ড এ্যাম্বুলেন্স এর মেডিসিন বিশেষজ্ঞ মেজর রেজা, ডেন্টাল সার্জন ক্যাপ্টেন শারমিন হক, ক্যাপ্টেন তানজিনা, লামা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রবিউল হোসেন, ফাসিয়াখালি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাগের হোসেন মজুমদার, তীরেরডিভা সিআইও ক্যাম্পের কমান্ডার আইন উদ্দিন, সাঙ্গু মৌজার হেডম্যান থংপ্রু মুরুং, মুক্তারাম কারবারি, ইউপি সদস্য অংপ্রু মার্মা প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বনপুর, তীরেরডিভা, রাজাপাড়া, রংগুটিপাড়া, গয়ালমারা, নতুনপাড়া, চোরলাল, টংপাড়া ও কয়াল পাড়াসহ বার গ্রামের লোকজন ক্যাম্পেইন থেকে সেবা নিয়েছে। স্থানীয়রা এ প্রতিবেদককে বলেন, ১৯৮৪ সালের পর এই প্রথম কোন মেডিক্যাল ডাক্তারকে বিজিবির কল্যানে নিজেদের দুর্গম এলাকায় দেখেছেন। পাশাপাশি বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা প্রধান করায় ৩১ বিজিবি কর্তৃপক্ষকে সাধুবাদ জানিয়েছেন তারা।
এদিকে মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে অধিনায়ক লে.কর্ণেল মো. হাসান মোরশেদ পিএসসি জি প্লাস সহ অতিথিবৃন্দ বিভিন্ন চিকিৎসা ক্যাম্পের তাবু পরির্দশন করেন। তাবু পরিদর্শন শেষে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সাধারণ মানুষ ও পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বিজিবি অধিনায়ক এক মতবিনিময় সভায় মিলিত হন।


শেয়ার করুন