প্রাথমিক স্তরে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার এখনো বেশি

url9সিটিএন ডেস্ক:

বাংলাদেশে স্বাক্ষরতার হার ৬১ শতাংশে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান। বিশেষজ্ঞদের মতে বাংলাদেশে স্কুলগামী ছেলেমেয়ের সংখ্যা বাড়লেও, প্রাথমিক স্তরে স্কুল থেকে ঝরে পড়ার সংখ্যা এখনও অনেক বেশি। রোববার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী বলেছেন, শিক্ষার্থীদের স্কুল থেকে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের ঠেকাতে প্রাথমিক স্তরে যে উপবৃত্তি চালু আছে তার সংখ্যা বাড়ানো হবে।
স্বাক্ষরতার এই যে হার প্রকাশ করা হয়েছে তা নিরুপণে কোন দিকগুলো হিসাব করা হয়েছে তা নিয়ে বিবিসি বাংলার সাথে কথা বলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিবিএস এর সর্বশেষ ২০১৩ সালের জরিপ অনুযায়ী করা হয়েছে। এটা বিভিন্ন বয়সের মধ্যে গবেষণা করা হয়েছে। যেমন ১৫ থেকে ২০ বছর, ৫ থেকে ৮ বছর, ৮থেকে ১৫ বছর। এরকম বিভিন্ন বয়সের একটা সার্ভে আছে। পুরোবিষয়টাকে মোটের উপর দেখলে দেখা যাবে এটা ৬১ শতাংশ। যদিও আগে বলেছি ৬৫ শতাংশ।
বর্তমানে স্বাক্ষরতার হার কমে গেছে এ সম্পর্কে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন,এখন স্বাক্ষরতার যে হার বলা হয়েছে এটা ২০১৩ সালের জারিপের ভিত্তিতে বলা হয়েছে। কিন্তু ২০১৫ সাল পর্যন্ত স্বাক্ষরতার হার বৃদ্ধিতে অগ্রগতি আছে। বিভিন্ন জায়গায় ২০১৩ সালের জরিপের কথা বলা হয়েছে। জরিপের বাইরে বলা হয়নি এটার জন্য বিভ্রান্তি হয়েছে যে কিভাবে ৬১ শতাংশ হল।
বাংলাদেশে স্বাক্ষরতার হার ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, আমি মনে করি অব্যাহতভাবে বাড়ছে। এখন যে শিশু জন্ম নেয় কেউ আর নিরক্ষর থাকবেনা এটা বলা যায়। কোন কৃষক বা দিনমজুরের ছেলে কেউ আর স্কুলের বাইরে থাকবে না। কারণ এখন আর খাবারের অভাব নেই, বই এর অভাব নেই। শ্রমজীবি মানুষেরাও মনে করে আমার সন্তানকে শ্রমিক বানাবোনা। এখন তারা মনে করে তাদের সন্তানকে নুন্যতম একটা শিক্ষা দিতে হবে। যার ফলে স্বাক্ষরতার হার বাড়ছে।
মন্ত্রী বলেন, এখন আমরা উপবৃত্তি দিচ্ছি ৭৮ লাখের কিছু বেশি শিক্ষার্থীকে। এই সংখ্যাকে আমরা টার্গেট করেছি ১ কোটি ৩০ লাখে নিয়ে যাওয়ার। আমাদের দেশে যারা শিক্ষা নিয়ে গবেষণা করেন তাদের অনেকের মত হল আমাদের দেশে দরিদ্র শিশুরা স্কুলে যায়না তাদের খাবারের নিশ্চয়তা নেই, আর অন্য কোন সুযোগ থাকে না বলেই তারা মনে করে শিক্ষার বদলে অন্য জায়গায় কাজ করে তারা বাব মা কে সাহায্য করতে পারে। এসব শিশুকে স্কুলে নিয়ে যাওয়ার জন্য দুপুরের খাবার, তাছাড়া উপবৃত্তি বেশি করে দেয়া প্রয়োজন। তাহলে ঝরে পড়া রোধ করা যাবে। ঝরে পড়ার সংখ্যা আগে বলা হত ৩০ ভাগ। এখন সেটা কমে ২১ ভাগ এর নিচে নেমে আসছে।
বর্তমানে শিক্ষার হার বাড়ছে কিন্তু শিক্ষার মান কমছে এ সম্পর্কে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন আছে। এ ব্যাপারে আমি মনে করি একেবার যে নিরর্থক বলা হচ্ছে এমন নয়। এটার সত্যতা অনেকাংশে আছে। তবে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। গুণগত শিক্ষার জন্য মানসম্মত শিক্ষক দরকার, পরিবেশ দরকার সে ব্যাপারে আমরা বিভিন্ন প্রয়াস নিয়েছি। আমরা যেটা প্রত্যাশা করি সেখানে আমরা পৌঁছতে পারিনি কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট বিবেচনা করলে শিক্ষার মান আগের চেয়ে বেড়েছে।


শেয়ার করুন