অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

প্রশাসনের হয়রানি থেকে বাঁচতে চায় হোটেল মোটেল রেস্তোরা মালিকরা

বিশেষ প্রতিবেদকঃ

কক্সবাজার ছোট শহর হলেও এখানে এত স্থাপনা যে, ছোটখাটো দূর্ঘটনা ঘটবেই- এমন মন্তব্য করে কক্সবাজার হোটেল মোটেল ওনার্স এসোসিয়েশনের ভারপ্রাপ্ত শাহ আলম চৌধুরী বলেন, জেলা প্রশাসনে দুই বছর ধরে আবাসিক হোটেলের লাইসেন্স আটকে রাখা হয়েছে। তারা এমন আচরণ করে যেন কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে আমরা (হোটেল মালিক) কিছুই না, তারাই (প্রশাসন কর্মকর্তারা) সব কিছুর মালিক। চিঠি দেয় ‘নির্দেশ’ দিয়ে। কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে কেউ তো তাদের এই হয়রানি সহ্য করবে না। তাই বিনিয়োগকারীরা কক্সবাজার বিনিয়োগ করতে এসে প্রশাসনের এমন আচরণে বিনিয়োগ না করেই ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।

২৯ নভেম্বর দুপুরে কক্সবাজার শহরের একটি অভিজাত হোটেলের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

কক্সবাজারের পর্যটন শিল্প নিয়ে বিশেষ মহলের নেতিবাচক অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে যৌথ এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল। কক্সবাজার হোটেল মোটেল গেস্ট হাউজ মালিক সমিতি, বাংলাদেশ রেস্তোরা মালিক সমিতি কক্সবাজার শাখা, হোটেল মোটেল ওনার্স এসোসিয়েশন ও মেরিন ড্রাইভ রিসোর্ট মালিক সমিতি যৌথভাবে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

হোটেল মালিক নেতা শাহ আলম চৌধুরী বলেন, হোটেল মোটেল রেস্তোরা মালিকদের সম্মানটা ফিরিয়ে দিন, যাতে ডিসি অফিসের কর্মকর্তাদের কাছে ধর্ণা দিতে না হয়।
তিনি আরো বলেন, রেভিনিউ ও সুযোগ নিলেও হোটেল-মোটেল রেস্তোরা মালিকদেরও তো সুযোগ দিতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, বাংলাদেশ রেস্তোরা মালিক সমিতি কক্সবাজার জেলা শাখার সভাপতি নঈমুল হক চৌধুরী টুটুল। স্বাগত বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার হোটেল মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, কক্সবাজার হোটেল মোটেল ওনার্স এসোসিয়েশন, রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি, হোটেল মোটেল গেষ্ট হাউস মালিক সমিতি ও মেরিন ড্রাইভ রিসোর্ট মালিক সমিতির বাইরে আরো ১৫০টির বেশি রেস্টুরেন্ট ভ্যাট ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে চলছে। এই ব্যাপারে সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে বিভিন্ন দপ্তরে ওইসব হোটেলের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করলেও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলেন বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি কক্সবাজার জেলা শাখার সভাপতি নইমুল হক চৌধুরী টুটুল।

তিনি বলেন, ভ্যাট ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে চলা এই হোটেল গুলোর জন্য তাদের হোটেল রেস্তোরা গুলোর বিরুদ্ধেও অপপ্রচার চালানো হয়।

প্রধানমন্ত্রীর কক্সবাজার আগমন উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে অনুষ্ঠিত এই সংবাদ সম্মেলনে কক্সবাজারের পর্যটন শিল্প নিয়ে বিশেষ মহলের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত বিভিন্ন ব্যবসায়ী নেতারা বলেন, কখনও সুয়ারেজ প্রকল্প, কখনও ময়লা আবর্জনার কথা বলে হোটেল রেস্তোরাঁর মালিকদের অহেতুক হয়রানি করা হয়। এমন হয়রানির ফলে পর্যটন শিল্প বিকাশে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে বলেও মন্তব্য করেন তারা।

সাংবাদিক সম্মেলন নঈমুল হক চৌধুরী টুটুল জানান, কক্সবাজারে সমিতিভুক্ত ৭৭টি গেস্ট হাউস, মেরিন ড্রাইভ সমিতিভুক্ত ৫৫টি হোটেল ও ১১টি তারকামানের হোটেল রয়েছে। এছাড়াও সমিতির অধীন ১৪০টি রেস্তোরা থাকলেও বর্তমানে চালু রয়েছে ৯৪টি রেস্তোরা। অথচ সমিতির বাইরে দেড় শতাধিক রেস্তোরা রয়েছে যারা ভ্যাট ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে ব্যবসা করে যাচ্ছে।

এতে জানানো হয়, কক্সবাজারে প্রতিটি আবাসিক হোটেলে একটি করে রেস্তোরা রয়েছে। সবমিলিয়ে কক্সবাজারে ৫ শতাধিক রেস্টুরেন্ট তাদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে কক্সবাজারের পর্যটন শিল্প নিয়ে যেকোন ধরনের নেতিবাচক সংবাদ প্রচার থেকে বিরত থাকার জন্য সাংবাদিকদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়। তবে কক্সবাজার পর্যটন শিল্পের বিরুদ্ধে কারা এই চক্রান্তকারী তাদের ব্যাপারে কোন মন্তব্য করা হয়নি।

সাংবাদিক সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সিনিয়র সহ সভাপতি মোঃ আলী, গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সেলিম নেওয়াজ, রেস্তোরা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম ডালিম, মেরিন ড্রাইভ হোটেল রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খান, রেস্তোরা মালিক সমিতির সহ সভাপতি কামরুল ইসলাম ও কাশেম আলী, নিরিবিলি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাহসিন রহমান, গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সহ-সভাপতি সরওয়ার কামাল প্রমুখ।


শেয়ার করুন