তবে বিশ্লেষকদের অনেকে বলেছেন, দুই দলই রাজনীতি পিছনে ফেলে অন্য পথে হাঁটছে।
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার বিরোধী জোটের কর্মসূচিতে নাশকতা বা সহিংসতার বিষয়টিকে সামনে এনে, সেই পরিস্থিতিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়েই মোকাবেলা করতে চাইছে।
সরকারের এই কৌশল পরিস্থিতির শুরু থেকেই দৃশ্যমান। এমনকি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর প্রধানদের বক্তব্যেও কঠোরভাবে দমনের কথা উঠে এসেছে। যা নিয়ে সমালোচনাও হচ্ছে।
তবে আওয়ামী লীগ এখনও পরিস্থিতিটাকে রাজনৈতিক সংকট হিসেবে বিবেচনা করতেই রাজি নয়। দলটির একজন ঊর্ধ্বতন নেতা ও মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, এখনকার পরিস্থিতিকে ‘রাজনৈতিক সংকট’ হিসেবে দেখা হলে তাতে নাশকতা বা সন্ত্রাসের কাছে নতি স্বীকার করা হবে বলে সরকার মনে করছে।
তিনি বলেন, ”যারা নাশকতা বা সন্ত্রাস করছে, তাদের সাথে তো আলোচনার কোনো উদ্যোগ নেয়া যায় না। এখানে উদ্যোগ একটাই, তাহলো আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী যথাযথভাবে আইনগত ব্যবস্থা নেবে।”
আওয়ামী লীগের মধ্যে আরও কয়েকজন নেতার সাথে কথা বলে মনে হয়েছে, এখনকার পরিস্থিতিকে রাজনৈতিক সংকট হিসেবে বিবেচনা করে আলোচনার উদ্যোগ নিলে সেখানে নির্বাচনের বিষয়টি উঠে আসবে। ঠিক এই মূহুর্তে সরকার তাদের দিক থেকে নির্বাচনের ইস্যুকে সামনে আনতে চায় না।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের একজন উপদেষ্টা খন্দকার মাহবুব হোসেন মনে করেন, সরকার পরিস্থিতিকে রাজনৈতিক সংকট হিসেবে দেখছে না বলেই সমস্যাটি বাড়ছে।
তিনি বলেন, ”আন্দোলন শুরু হলে, তখন কিন্তু অনেক সময় নেতৃত্বের বাইরে অনেক কিছু হয়।”
তিনি বলেন, ”বিএনপি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি নিয়েছে, তার মধ্যেও সন্ত্রাসমূলক কাজ হচ্ছে। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। তবে তা বিএনপির তরফ থেকে সমর্থন করা হয় না।”
বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করছেন, পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে।
আর বিরোধী জোট সেটি স্বীকার না করলেও তাদের কর্মসূচিতে সহিংসতা একটা কৌশল হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেছেন, দু’পক্ষই রাজনীতি বাদ দিয়ে ভিন্ন পথে হাঁটছে।
বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটে অবশ্য তাদের কৌশলের ক্ষেত্রে সংকট সমাধানে সংলাপের বিষয়কেও তুলে ধরছে। তবে আওয়ামী লীগ সহিংস পরিস্থিতিতে সংলাপে আগ্রহী নয়।– বিবিসি।